সুন্দরী স্ত্রী থাকতেও কেন অন্য মহিলার প্রেমে মজেন পুরুষরা!


ODD বাংলা ডেস্ক: দুর্নিবার সাহা আর তার স্ত্রী মীনাক্ষির মধ্যে বিচ্ছেদের কথা ছড়িয়ে পড়তেই নানা প্রশ্ন ঘুরছে অনেকের মনে। যে জুটি মাত্র বছর খানেক আগেই গাঁটছড়া বেঁধেছিল, সেই দাম্পত্য এত তাড়াতাড়ি ভাঙল কী করে? 

এমন সুন্দরী, বন্ধুর মতো স্ত্রী থাকতে এত তাড়াতাড়ি সত্যিই কি পরকীয়ায় জড়িয়েছেন দুর্নিবার? এও কি বিশ্বাসযোগ্য? 

জবাবে অনেকের আবার বক্তব্য, কেউ যদি শাকিরার মতো সুন্দরী সঙ্গিনীকেও ঠকিয়ে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারেন, তবে আর বলার কী আছে! 

সম্প্রতি হওয়া লাস্যময়ী পপ তারকা শাকিরা আর স্প্যানিশ ফুটবল তারকা জেরার্ড পিকের বিচ্ছেদের কারণও যে একই। শাকিরার অভিযোগ, পিকে অন্য কোনো নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন।

কিন্তু সুন্দরী, আকর্ষণীয় সঙ্গিনী থাকা সত্ত্বেও পুরুষরা কেন আকৃষ্ট হন অন্য নারীর প্রতি? এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। এ নিয়ে আলোচনা এবং গবেষণাও কম হয়নি। 

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে বিভিন্ন সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সেখানকার এক সেক্সোলজিস্ট জানাচ্ছেন, এই আচরণের প্রকৃত কারণ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে তারা অনেক ক্ষেত্রেই খেয়াল করেছেন যে, অনেক দিনের সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা পুরুষদের মধ্যে নতুন নারীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা বেশি।

কেন এমন করে থাকেন পুরুষরা? বেশ কয়েক বছরের বিবাহিত সম্পর্কে রয়েছেন এবং কারও কারও বিয়ে ভেঙেছে কিছু দিন আগেই- এমন বেশ কয়েকজন মধ্য তিরিশের পুরুষ ও নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিষয়টিকে একেক জন একেকভাবেই দেখেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তথ্যপ্রযুক্তিকর্মী জানান, বিয়ের দুই বছরের মাথায় তার এক সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক হয়। স্ত্রীও তা জানতে পারেন। কিন্তু পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন যার সঙ্গে, তার সঙ্গে দিনের বেশি সময়টাই কাটত। রোজকার খুঁটিনাটি আলোচনাও হত। সব মিলিয়ে তিনি নির্ভর করতে শুরু করেন সেই সহকর্মীর ওপর। যৌন আকর্ষণও বোধ করেন একটা পর্যায়ে।

আরেক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর বক্তব্য, বিবাহিত সম্পর্কে রোমাঞ্চ কমে যায়। স্ত্রী যখন বান্ধবী ছিলেন, তখন বেশি সময়ে বাইরে দেখা হত। তিনি সাজগোজ করে থাকতেন। তাকে দেখতে বেশি ভালোই লাগত। 

তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে যৌন উত্তেজনাও টের পেতাম। এখন অনেক দিনই বাড়িতে স্ত্রীকে দেখে সেই উত্তেজনা হয় না। বরং অন্য মেয়েদের রাস্তায় দেখলে তাদের বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়।’

‘দ্য ইভলিউশন অব ডিজায়ার’-এ ডেভিড বাস লিখেছিলেন, যৌন চাহিদা, উত্তেজনাও জিন নির্ভর একটি বিষয়। পুরুষদের জিনে একাধিক ব্যক্তির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।

তবে এ কথা মানেন না মধ্য তিরিশের এক সাংবাদিক। তার বক্তব্য, এটি ছেলে আর মেয়েদের ক্ষেত্রে আলাদা করে দেখার মতো বিষয় নয়। যে কোনও লিঙ্গের মানুষই আকৃষ্ট হতে পারেন অন্যের প্রতি। কেউ সে দিকে এগিয়ে যান, কেউ বা নিজেকে আটকে রাখেন।

এখনও বিয়ে করেননি, পঁচিশের এক যুবকের বক্তব্যও একই রকম। তিনি বলেন, মেয়েরাও যথেষ্ট অন্য ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হন। কিন্তু ছেলেদের মধ্যে বিষয়টি জাহির করার চল বেশি। তাই তাদের কথা বেশি প্রকাশ্যে আসে।

সামাজিকভাবে নারীদের যৌন স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পেশায় এক স্কুল শিক্ষিকা। তার বক্তব্য, ‘মেয়েরা বিবাহিত সম্পর্কে থেকেও অনেক সময়ে নিজের যৌন চাহিদা প্রকাশ করতে পারেন না। এখনও অনেকেই এই ধারণা নিয়ে থাকেন যে, মেয়েদের যৌন ইচ্ছা প্রকাশ করতে নেই। ফলে অন্য কোনও পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হলেও তা প্রকাশ করার চল হয়তো মেয়েদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় কম।’ 

এই স্কুল শিক্ষিকা জানান, তারও অন্য পুরুষকে ভালো লেগেছে অনেক সময়ে। কিন্তু নিজের স্বামী তো দূরে থাক, কোনও বন্ধুর কাছেও সে কথা প্রকাশ করতে পারেননি তিনি।

তবে তার মতো বহু নারীই দেখেছেন, অন্য নারীদের রূপ, সাজ, ব্যক্তিত্ব নিয়ে খোলাখুলি আলোচনায় মাতেন তার পুরুষ সহকর্মীরা। শিক্ষিকা মনে করান, ‘তারাও কিন্তু আমার মতোই বিবাহিত। অথচ ওদের মধ্যে যৌন আড়ষ্টতা কম।’ 

একই কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের লেখিকা ন্যান্সি হেনেসনও। তিনি লিখেছেন, ‘মেয়েদেরও ছেলেদের মতোই অন্যদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ‘পরপুরুষ’-এর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছা হয়। তারাও পরকীয়ায় জড়িত হন। কিন্তু ছেলেরা এ বিষয়ে অনেক বেশি খোলাখুলি কথা বলতে পারেন। তাই মনে হয় যে, ছেলেরাই বেশি আকৃষ্ট হন ‘পরস্ত্রী’র প্রতি। আসলে ব্যাপারটা পুরোপুরি সত্য নয়।’ 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.