বাঁশের টুথব্রাশেই শুরু হোক দিন, দাঁতের যত্নের সঙ্গে রুখবে দূষণও

 


ODD বাংলা ডেস্ক: টুথব্রাশের ব্যবহার যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। প্লাস্টিকের টুথব্রাশ আসার আগে পাখির পালক, প্রাণীর লোম, বাঘের দাঁত, গাছের ডাল, বাঁশের তৈরি টুথব্রাশ ব্যবহার হত। নেপোলিয়ান দাঁত পরিষ্কার করতেন ঘোড়ার চুল দিয়ে তৈরি টুথব্রাশের সাহায্যে। নেপোলিয়ানের যুগের আগে বাঘের দাঁত দিয়ে তৈরি টুথব্রাশ ব্যবহার হত।


ভারতীয়দের মধ্যে টুথব্রাশের ব্যবহার অনেক পরে এসেছে। নিম ডাল, ছাই দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা হত। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে বাজারে হরেক রকমের টুথব্রাশ চলে এসেছে। আর এসবই প্লাস্টিকের। যুগ যুগ ধরে এই প্লাস্টিকের টুথব্রাশ ব্যবহার চলছে। দাঁতের যত্ন নিতে গিয়ে এই টুথব্রাশ পরিবেশে ব্যাপক হারে দূষণ ছড়াচ্ছে। দূষণ ঠেকাতে পরিবেশবান্ধব বাঁশের টুথব্রাশ নিয়ে এসেছেন পামেলা দত্ত ও তুহিন মুখোপাধ্যায়। বাঁশের টুথব্রাশ নতুন নয়। বছর কয়েক হল পরিবেশবান্ধব প্রসাধনী ব্যবসা শুরু করেছেন দুই থিয়েটারপ্রেমী। হার্বাল সাবান, শ্যাম্পু, লোশনের পাশাপাশি নজর কেড়েছে বাঁশের টুথব্রাশ।


এর আগেও বাঁশের টুথব্রাশ বাজারে এসেছে। তবে সেখানে টুথব্রাশের হ্যান্ডেলটা বাঁশের। ব্রাশের দাড়া প্লাস্টিকের। কিন্তু পামেলাদের টুথব্রাশে হ্যান্ডেল থেকে ব্রাশের দাড়া সবই বাঁশ দিয়ে তৈরি। পামেলা বলেন, দূষণ রুখতে এখন বাজারে হার্বাল অনেক প্রোডাক্ট এসেছে। হারবাল টুথপেস্ট রয়েছে। পরিবেশবান্ধব টুথব্রাশ নেই। অথচ দূষণ ঠেকাতে হলে প্লাস্টিকের টুথব্রাশের ব্যবহারও বন্ধ করা উচিত। কিন্তু মানুষের কাছে বিকল্প না থাকায় প্লাস্টিকের টুথব্রাশ ব্যবহার হচ্ছে। তাই আমরা বাঁশ দিয়ে পরিবেশবান্ধব টুথব্রাশ নিয়ে আসার কথা ভাবি। আমাদের টুথব্রাশের হ্যান্ডেল থেকে ব্রাশের দাড়া সবটাই বাঁশ দিয়ে তৈরি। বাঁশের কাঠি দিয়ে হ্যান্ডেল তৈরি হয়েছে, ব্রাশ তৈরি হয়েছে বাঁশের তন্তু দিয়ে। বাঁশের তৈরি টুথব্রাশ আরও নরম যা দাঁতের এনামেল ক্ষয় কম করবে বলে দাবি প্রস্তুতকারকদের।


বাঁশের টুথব্রাশে মিলবে কয়লা ও নিমের নির্যাস। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, “যুগ যুগ ধরে আমরা প্লাস্টিকের টুথব্রাশ ব্যবহার করছি। এগুলি পুনর্ব্যবহার করা যায় না। প্লাস্টিকজাত হওয়াতে নষ্টও হয় না। এগুলি মাটি এবং সমুদ্রে দূষণ ছড়াচ্ছে। সেখানে মাইক্রো প্লাস্টিক রূপে জলজ প্রাণীদের দেহে মিশছে। এখন সময় এসেছে পরিবেশবান্ধব টুথব্রাশে জোর দেওয়ার।”


পরিবেশবান্ধব টুথব্রাশ অবশ্য বাজারে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ পরিবেশবান্ধব টুথব্রাশের দাম প্লাস্টিকের থেকে অনেকটাই বেশি। পামেলাদের কাছে তিন ধরনের বাঁশের টুথব্রাশ রয়েছে। বাঁশের তন্তুর দাড়া দেওয়া টুথব্রাশের দাম প্রায় ১৫০ টাকা। কয়লা ও নিমের নির্যাস দেওয়া বাঁশের টুথব্রাশের দাম পড়বে ৬০টাকা। আর ভ্রমণার্থীদের জন্য আলাদা বাঁশের টুথব্রাশ রয়েছে। যার দাম প্রায় ২০০ টাকা। তুহিন মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাধারণ মানুষের কথা ভেবে দু’ধরনের টুথব্রাশ রেখেছি। নিম ও কয়লার নির্যাস দেওয়া ব্রাশের দাড়া পলিমার দিয়ে করা হয়েছে। পচনশীল হওয়াতে দূষণ ছড়ায় না। এছাড়া বাঁশের তন্তু দিয়ে তৈরি টুথব্রাশটির দাম আমআদমির নাগালে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.