ক্ষমতাধর নারীদের কুখ্যাত ইতিহাস

ODD বাংলা ডেস্ক: এলিজাবেথ বাথোরি কিংবা ক্যাথরিন নাইটের নাম শুনেছেন? এদের নাম ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়। তাদের কর্মকাণ্ড বিশ্বাস করতেও কষ্ট হবে আপনার। আরেক নিষ্ঠুরতার জন্ম দিয়ে গেছেন ইরমা গ্গ্নেস। কেউ মানুষের রক্তে স্নান করেছে আবার কেউ মানুষের মাংস দিয়ে রান্না করেছে স্যুপ।

এলিজাবেথ বাথোরির কথায় আসা যাক, এই নারীর জন্ম ১৫৬০ সালে।  বিশ্বজুড়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারদের অন্যতম এলিজাবেথ বাথোরি। বিয়ের কিছুদিন পর তার স্বামী ফেরেন্স নাডাসডি হাঙ্গেরির সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়ে যুদ্ধে চলে যান। স্বামী চলে যাওয়ার পর পরিবার এবং ব্যবসার সবকিছুই দেখাশোনা করত এই নারী। এলিজাবেথ চড়া বেতনে কিশোরী মেয়েদের বাড়ির চাকরানী হিসেবে রাখত। কিন্তু ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, সেই বাড়ির ভেতরে যে একবার যেত সে আর ফিরে আসত না। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলে তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, এলিজাবেথ নিজের ত্বক ভালো রাখার জন্য কুমারী মেয়েদের রক্ত দিয়ে স্নান করত। স্নানের আগে মেয়েদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলত। মেয়েদের আর্তচিৎকার সে উপভোগ করত। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চলে এভাবে মানুষ হত্যা। পরে ব্যাপারটা রাজা মাথিয়াস জানতে পারেন এবং মৃত, অর্ধমৃত অনেক মেয়েকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন। জীবিতদের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতাও পাওয়া যায়। এভাবে এলিজাবেথ প্রায় ৬৪০ জন কুমারী মেয়ের রক্ত দিয়ে নিজের ত্বক ভালো রাখতে স্নান করে। চার বছর জেলে থাকার পর মৃত্যুবরণ করে এলিজাবেথ বাখোরি।

ক্যাথরিন নাইট ইতিহাসের এমন এক নারী যার কৃতকর্ম দাম্পত্য সম্পর্ককে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ।  এই নারীর জন্ম ১৯৫৬ সালে। সে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান নারী, যাকে প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেখানে তখনকার দিনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল না। দাম্পত্য কলহের জের ধরে ক্যাথরিন তার স্বামীর সব দাঁত উপড়ে ফেলেছিল। এরপর সে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে গোপন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। একদিন ঝগড়া হলে ওই ব্যক্তিকে ৩৭ বার ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে হত্যা করে ক্যাথরিন। হত্যা করেই থেমে থাকে না, এরপর সে ওই মৃত ব্যক্তির চামড়া ছাড়িয়ে তা নিজের বেডরুমের দরজার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। মৃতদেহ থেকে মাথা কেটে নিয়ে স্যুপ রান্না করে নিজের সন্তানদের জন্য রেখে বাইরে চলে যায়। পরে পুলিশ এসে ওই ছিন্ন-ভিন্ন মৃতদেহটি উদ্ধার করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই নারীর প্রভাব দেখেছে সারা বিশ্ব। যা আজও সমালোচিত। নাম ইরমা গ্গ্নেস। এই নারীর জন্ম ১৯২৩ সালে। হিটলারের রাভেন্স ব্রুক ক্যাম্পের সুপারভাইজার ছিল ইরমা। এরপর বদলি হয়ে আউসুটয় ক্যাম্পে আসে। সেখানে সে ৩০ হাজার ইহুদি নারী বন্দির দায়িত্ব পায়। ইরমার কাজ ছিল তার পোষা কুকুর দিয়ে নারী হত্যা, বিকৃত যৌনাচার, নারীদের লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করার প্র্যাকটিস, কথা না শুনলে গ্যাস চেম্বারে প্রেরণ। তার এ রকম হত্যাযজ্ঞের কারণে 'বিচ অব বেলসেন' নামে পরিচিতি পায় ইরমা গ্গ্নেস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.