বিড়ালের দখলে একটি দ্বীপ!
পৃথিবীতে গিজগিজ করছে মানুষের ভিড়। তবে এই দ্বীপে গেলে সেই
কথাটাকে ভুল বলেই মনে হবে। কারণ এটা বাঘের মাসির রাজ্য। এখানে তাদেরই
জয়জয়কার। কোথায় রয়েছে এই মার্জার সাম্রাজ্য?
মেরেকেটেও
সেখানে একশোর বেশি মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে যেদিকে তাকাবেন, এই চার
পেয়ে প্রাণীটির দেখা পাবেনই পাবেন। প্রকৃত অর্থেই এই দ্বীপ মার্জার নগরী।
রাস্তা দিয়ে সার বেঁধে হেঁটে যায় এখানে অসংখ্য বিড়াল। পাঁচিলে, কার্নিশে,
সৈকতে সব জায়গায় শুধু বিড়ালেরই ছড়াছড়ি।
আপনি
যদি মার্জারভক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তো এ জায়গা আপনার জন্য সাক্ষাৎ স্বর্গ।
কারণ এখানে গেলেই আপনি পাবেন হাজার হাজার বিড়ালের সংসর্গ। ভাবছেন তো কোথায়
রয়েছে এমন মার্জার সাম্রাজ্য?
জাপানের ইশিনোমাকি
স্টেশন থেকে খানিকটা দূরে ছোট্ট দ্বীপ আওশিমা। সেই আইল্যান্ডটিতেই বাস করে
কয়েক হাজার মার্জার। হ্যাঁ, এই দ্বীপে মানুষের চেয়ে বিড়ালের বসবাস ঢের
বেশি। আর সেটাই এই দ্বীপের ইউএসপি। না, কোনও এক রকমের বিড়াল নয়, হরেক
রকমের, হরেক প্রজাতির বিড়ালের বাস এই দ্বীপে।
কীভাবে
তৈরি হল এই দ্বীপ জুড়ে বিড়ালের সাম্রাজ্য? সেই গল্পটা কিন্তু বেশ মজার।
বেশ কয়েক দশক আগে এই আওশিমা দ্বীপে ছিল মৎস্যজীবীদের ছোট্ট একটা গ্রাম।
ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রামবাসীরা বিড়াল আমদানি করলেন এই দ্বীপে।
ব্যাস! সেই দ্বীপই যে কালক্রমে হয়ে উঠবে বিড়ালদের রাজত্ব, তা কেই বা
ভেবেছিলেন। ক্রমে ক্রমে এই দ্বীপে কমতে লাগল মৎস্যজীবীদের আনাগোনা। তার
বদলে বেড়ে উঠল বিড়ালের কলোনি।
বিড়ালদের কথায়
বলে বাঘের মাসি। তা তাদের স্বভাব অনেকটা তেমনই। বিশেষ কাউকে পাত্তাটাত্তা
দেয় না এই মার্জারকুল। এই দ্বীপে তাদের ভরণপোষণ থেকে শুরু করে যাবতীয়
দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। প্রাথমিক ভাবে এই দ্বীপের কথা
বাইরের লোকেরা বিশেষ জানতেন না। তবে ঘটনাচক্রে একদল বিড়ালপ্রেমী দ্বীপটির
সন্ধান পান। লোকমুখে প্রচার হওয়ার পরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায় এই
বিড়ালসাম্রাজ্য।
ইদানীং বাইরে থেকে বহু পর্যটকই
আসেন বিড়াল বাহিনীর সঙ্গে সময় কাটাতে। তবে এই দ্বীপকে বাকি সব
পর্যটনস্থলের মতো ভাবলে কিন্তু বেশ ভুল হবে। কারণ এখানে তেমন কোনও হোটেল বা
রেস্তরাঁ কিছুই নেই। তেমন কিছু দেখার বা করারও নেই আশপাশে। ফলে এখানে দু
একদিনের ট্রিপের পরিকল্পনা করলে সে গুড়ে বালি। তবে বিড়ালদের সঙ্গে
নির্ভেজাল সময় কাটাতে চাইলে এই আওশিমা দ্বীপের জুড়ি নেই।
ইসি
আরও পড়ুন
আরও
Post a Comment