প্রস্রাবের স্বাদ নিয়ে করা হত রোগ নির্ণয়!
ODD বাংলা ডেস্ক: আদিকাল থেকেই মানুষ রোগের চিকিৎসায় নানা গাছ-গাছালি ব্যবহার করত। এর থেকে বোঝা যায় রোগের শুশ্রূষায় বহু আগে থেকেই রয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞান।
যতই দিন যেতে থাকে ততই এক্ষেত্রে উন্নতি হতে থাকে। এখনো আবিষ্কার হচ্ছে নানা রোগের প্রতিষেধক। তবে প্রাচীন রোম আর গ্রীক সভ্যতায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি।
আধুনিক চিকিৎসায় রোগের অবস্থা বুঝতে করা হয় নানা পরীক্ষা। এর মধ্যে রক্ত বা প্রস্রাবের পরীক্ষা করা হয় সবচেয়ে বেশি। প্রস্রাবের পরীক্ষা ইউরিনালাইসিস নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিটি ইউরোস্কোপি নামে একটি প্রাচীন চিকিৎসা প্রক্রিয়া থেকে এসেছে।
১৯ শতকের মাঝামাঝি অসুস্থতা বা রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর প্রস্রাব বা ইউরিন পরীক্ষা করা হত। বলা যায়, প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সভ্যতার চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির আরেকটি প্রমাণ এটি। সে সময় আবিষ্কার হয় একটি ইউরিন হুইল বা ইউরিন চাকা। এটি মূলত একটি চার্ট ছিল। এখানে সংক্ষেপে ইউরিন পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য মিলিয়ে রোগ নির্ণয় করা হত।
চার্টটি ২০টি ভাগে বিভক্ত ছিল। এখান থেকে রোগীর ইউরিনের রং, স্বাদ ও গন্ধ থেকে রোগ নির্ণয় করা যেত। ১৭ শতাব্দীর একজন ইংরেজ চিকিৎসক থমাস উইলিস উল্লেখ করেছে, ডায়াবেটিস রোগীর প্রস্রাবের স্বাদ আশ্চর্যজনকভাবে মিষ্টি যেহেতু তাদের শরীরে শর্করা বা চিনির পরিমাণ বেশি।
তার নামানুসারেই এর নামকরণ করা হয় উইলিসই ডায়াবেটিস মেলিটাসে। মেলিটাস অর্থ মধুর বা মিষ্টি। তবে একসময় এটি পরিচিত ছিল উইলিস ডিজিজ নামে। গ্রেট ব্রিটেনের তৃতীয় রাজা জর্জ যখন অসুস্থ হন। তার ইউরিনের রং ছিল বেগুনি। ধারণা করা হয়, তিনি পোরফিয়ারিয়াতে ভুগছিলেন। এটি এমন একধরণের রোগ যা স্নায়ুতন্ত্রকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। ধারণা করা হয়, এর ফলে রাজা একসময় পাগল হয়ে গিয়েছিলেন।
ইউরোপকপি এবং ইউরিন হুইলটি ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত রোগ শনাক্ত করতে ইউরোপীয় চিকিৎসকরা ব্যবহার করতেন। এরপর ১৯ শতকের শেষের দিকে ইউরিন পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন আসে। রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইউরিন পরীক্ষা শুরু হয়। এতে করে চিকিৎসকদের রোগীর ইউরিনের স্বাদ নেয়ার দরকার পড়ত না।
Post a Comment