কিভাবে এলো দাবা খেলা? জানুন সেই অজানা ইতিহাস
ODD বাংলা ডেস্ক: বুদ্ধির খেলা হিসেবে সারাবিশ্বেই ব্যাপক জনপ্রিয় একটি খেলা হচ্ছে দাবা। বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় এ খেলাটি এখন আর শুধু ঘরোয়াভাবেই নয় বরং প্রতিযোগীতামূলক খেলা হিসেবেও প্রসিদ্ধ। দাবা খেলার আজকের যে এই আধুনিক রূপ, তার বয়স কিন্তু খুব একটা বেশি নয়। তবে দাবা খেলাটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন খেলাগুলোর মধ্যে একটি। আর আজকের লেখাতে তুলে ধরা হলো সেই দাবা খেলারই ইতিহাস।
ভারতে দাবার ইতিহাস
ইতিহাস বলে, দাবা খেলার উৎপত্তি প্রাচীন ভারতে। ষষ্ঠ শতাব্দীতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়কালে এই খেলাটি ভারতবর্ষে প্রচলিত ছিল। ভারতে এই খেলাটির তৎকালীন নাম ছিল চতুরঙ্গ। চার রকম পদ যথা হাতি, রথ, ঘোড়া ও সৈন্য নিয়ে এই খেলাটি খেলা হতো বিধায় এর নাম ছিল চতুরঙ্গ। বর্তমান দাবাতে রথ নেই, আর বর্তমান দাবার নিয়মকানুন ও চতুরঙ্গের মতো নয়। তবে বর্তমান দাবার ধারনাটি এসেছে এই চতুরঙ্গ থেকেই। ভারতের অনেক প্রাচীন সাহিত্য ও অন্যান্য নিদর্শনে এই চতুরঙ্গ খেলার উল্লেখ পাওয়া যায়।
তবে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ অভিমত দেন যে দাবা খেলার উৎপত্তি ভারতে হলেও এ খেলার জন্ম হয়েছে ষষ্ঠ শতাব্দীরও অনেক আগে। এর কারণ চতুরঙ্গ খেলায় সবচেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে রথ। কিন্তু শুধু ষষ্ঠ শতাব্দী নয় বরং তার আরো ৫০০ বছর আগে থেকেই যুদ্ধে রথের অত কার্যকরী ভূমিকা ছিল না। তাই এ খেলায় রথকে এত প্রাধান্য দেওয়ার কথা নয়। তার মানে এ খেলার উৎপত্তি এমন সময়ে, যখন রথ যুদ্ধক্ষেত্রের অনেক শক্তিশালী এক অস্ত্র ছিল। এছাড়াও সিন্ধু সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে কাঠের বোর্ডের উপর বিভিন্ন ছোট টুকরা সাজানো নিদর্শন দেখা যায়। যা অনেকটা আজকের দাবা খেলার মতোই।
ইরানে দাবা খেলার ইতিহাস
ইরানে দাবা খেলার প্রচলন ঘটেছিল ভারত থেকে আসা সওদাগরদের মাধ্যমে৷ প্রাচীনকাল থেকেই ইরানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। ইরানী ব্যবসায়ীরা ভারতে বাণিজ্য করতে এসে চতুরঙ্গ খেলাটির সঙ্গে পরিচিত হন ও ইরানেও এই খেলাটির প্রচলন করেন। তবে ইরানে গিয়ে খেলাটির নাম বদলে হয়ে যায় ‘শতরঞ্জ ’। এর নিয়মকানুনেও সামান্য কিছু পরিবর্তন আসে।
অন্য এক অভিমত অনুযায়ী ষষ্ঠ শতাব্দীতে এক রাজদূত পারস্যের বাদশাহর দরবারে চতুরঙ্গ খেলাকে পরিচিত করান। ইরান তথা পারস্যে তখন সাসানিদ সাম্রাজ্য এর শাসনকাল চলছিল। পারস্যে চতুরঙ্গ খেলাটি বেশ জনপ্রিয়তা পায় এর কয়েক বছর পর পারস্য সাম্রাজ্য ইসলামী শাসনের আওতায় আসে। এর ফলে মুসলিম শাসকরা এই খেলাটির সঙ্গে পরিচিত হন। তৎকালীন ইসলামী খিলাফত সাম্রাজ্য পাকিস্তান থেকে স্পেন অবধি ব্যাপক বিস্তৃত ছিল। ইরান থেকে এই শতরঞ্জ খেলাটি ইসলামী উমাইয়া সাম্রাজ্যের নানান প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ আজকের এই আধুনিক দাবা খেলার শুরুটা তাই শতরঞ্জ থেকেই হয়েছিল বলা যেতে পারে। কারণ চতুরঙ্গ এর আদিরূপ হলেও প্রথম দাবার প্রসার ঘটে শতরঞ্জের মাধ্যমেই।
স্পেনে দাবা খেলার ইতিহাস
ইরান উমাইয়া সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল, স্পেন ও সেই উমাইয়া সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে কয়েক দশকের মধ্যেই। এর ফলে স্পেন একই সাম্রাজ্যের প্রদেশ হওয়ায় সেখানে মুসলিম শাসক ও ইরানী বণিকদের দ্বারাই শতরঞ্জ খেলাটির ধারনাটি প্রচলিত হয়৷ পরবর্তীতে মূর সাম্রাজ্যের সময়কালেও স্পেনে দাবা খেলার বেশ চর্চা হয় স্পেন থেকেই দাবা খেলাটি ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চল যেমন ব্রিটেন, ফ্রান্স এসব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে স্পেনে দাবা খেলার নিয়মের বেশ বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। পূর্বে দাবা খেলায় গুটিগুলোর মধ্যে রানি ছিল অত্যন্ত দূর্বল। এটি কেবলমাত্র দুই ঘর যেতে পারতো এক চালে। ১৪৭৫ সালে ইসাবেলা যখন স্পেনের রানি হলেন, তখনই এই দাবার গুটিটিকে রানি নামকরণ করা হয় অর্থাৎ দাবাতে মেয়ে চরিত্র হিসেবে এটি অন্তর্ভুক্ত হয়। তখন এই কুইন রাজার মতোই শুধু একঘর যেতে পারতো। তবে ১৪৯৫ এর দিকে, রানি ইসাবেলা হয়ে যান স্পেনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী। ঐ সময়েই স্পেনে দাবার আধুনিক নিয়মাবলি বানানো হচ্ছিলো। যেহেতু রানি ইসাবেল তখন এত ক্ষমতাধর, তিনি সেটার প্রতিফলন ঘটান দাবার নিয়মে। আধুনিক দাবায় কুইন হয়ে যায় সবচেয়ে ক্ষমতাধর। এটি যে কোনো দিকে যত ইচ্ছে ঘর যেতে পারে। স্পেন থেকে এই খেলা ছড়িয়ে যায় সমগ্র ইউরোপে।
চীনে দাবার ইতিহাস
চীনে দাবা খেলার ইতিহাস হাজার বছরের অধিক পুরাতন। কয়েকজন চাইনিজ বিশেষজ্ঞ দাবী করেন দাবার উৎপত্তি ভারতে নয় বরং হয়েছিলো চীনদেশেই। তবে সে দাবী সর্বজনসম্মত নয়। চীনে এই খেলাটি জাংকি নামে পরিচিত। এটিও কাঠের বোর্ডের উপর ঘোড়া সৈন্য হাতি এদের যুদ্ধের উপর ভিত্তি করেই গঠিত। তবে কে কতঘর আগাতে পারবে এবং কীভাবে জয় পরাজয় নির্ধারণ হবে এসবের নিয়মকানুন পুরাতন শতরঞ্জ বা দাবা খেলার থেকে একটু ভিন্ন। তাই একে ' Chinese Chess ' বলা হয়ে থাকে। দাবা খেলার এই রূপটিতে বোর্ডে একটি আলাদা লাইন থাক , যেটা নদী হিসেবে গণ্য হয়। এছাড়াও এই দাবায় রাজা বা জেনারেল কে চেকমেট করা উদ্দেশ্য নয় বরং এটিতে জয় পরাজয় নির্ধারণ করা হয় কিছু নিয়ম অনুযায়ী পাওয়া পয়েন্টের ভিত্তিতে।
আধুনিক দাবার যাত্রা
১৮ শতকের মাঝামাঝি সময় অবধি দাবার অগ্রগতি ছিল খুবই ধীর। তবে এরপর দাবা খেলার প্রায় সব ধরনের নিয়মকানুন এ বিভিন্ন পরিবর্তন আসা শুরু হয় এবং আজকের এই রূপ লাভ করে। পূর্বে দাবার গুটিগুলোর আকার আকৃতি নির্দিষ্ট ছিলো না। অর্থাৎ একেক দেশে দাবার হাতি দেখতে ভিন্ন, রাজা দেখতে ভিন্ন। বেশ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করায় এটি দাবার একটি আন্তর্জাতিক খেলা হওয়ার পথে বাধাস্বরূপ ছিল। ১৮৪৯ সালে , লন্ডনের একটি খেলনা নির্মাতা কোম্পানী দাবার গুটিগুলোর একটি বিশেষ ধরনের ডিজাইনের সেট তৈরি করে, যা স্টন্টন প্যাটার্ন নামে পরিচিত। স্টন্টন হচ্ছেন সেই সময়ের বিশ্বসেরা দাঁবাড়ু। তিনি এই মডেলটির সমর্থন করেছিলেন বিধায় এই প্যাটার্নটির নামকরণ করা হয়েছে স্টন্টন প্যাটার্ন। এই প্যাটার্নটিই বর্তমানে দাবার গুটিগুলোর ডিজাইন হিসেবে সারাবিশ্বে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৮৪৯ সালে দাবাড়ু স্টন্টন এর সমর্থনের ফলে আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় এই প্যাটার্নটির সাধারণ ব্যবহার শুরু হয় এবং বর্তমান সময় অবধি এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
১৯ শতাব্দীতে দাবা খেলায় সংযুক্তি ঘটে ‘চেস ক্লক ' এর । আগে দাবাতে কোনো সময়ের সীমা ছিল না, তাই এক একটি দাবার গেমে সময় লেগে যেত ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা ৷ এত দীর্ঘ সময় বসে থাকা ও ফলাফলে না আসতে পারায় দাবা কিছুটা বিরক্তিকর ও অনিশ্চিত খেলা হয়ে উঠছিল। তাই চেস ক্লক এর মাধ্যমে এর সমাধান করা হয়। এছাড়াও এ সময়ে দাবা খেলার ধরনেও কিছু পরিবর্তন আসে। এর পূর্বে দাবা ছিল বেশ আক্রমণাত্মক একটি খেলা। অর্থাৎ চেকমেট করার জন্য নিজের গুটিকে প্রতিপক্ষের সহজ শিকারে পরিণত হতে দেওয়া হতো। যে কোনো ভাবে শুধু রাজাকে চেকমেট করলেই চলবে, নিজের গুটি রক্ষার তাগিদ ছিলো না। তবে দাবা প্রতিরক্ষামূলক ভাবে খেলা শুরু হয় উনবিংশ শতাব্দীতে।
নতুন এ ধরনের খেলার নাম হয় পজিশনাল চেস। ১৮৮৬ সালে উইলহেম স্টেনিজ নামক বিশ্বখ্যাত দাবাড়ু দাবাতে বিশ্বের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খেতাব অর্জন করেন। ঐ সময় থেকেই দাবার এই প্রতিযোগীতাটা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের রূপ নেয়। ১৮৯৪ অবধি তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন থাকেন। তারপর তাকে হারাতে সক্ষম হন এমানুয়েল লাস্কের নামক আরেকজন দাবাড়ু ৷ ১৮৯৪ সাল থেকে পরবর্তী ২৭ বছর অবধি তিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব ধরে রাখেন, যা আজ অবধি একটি রেকর্ড।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ১৯২৪ সালের ২০ জুলাই গঠিত হয় ওয়ার্ল্ড চেস ফেডারেশন। এটি এর ফ্রেঞ্চ নামের আদ্যংশ অনুযায়ী FIDE হিসেবে অধিক পরিচিত। তৎকালীন দাবা খেলার নিয়মকানুনে অতটা সমস্যা না হলেও এটিকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় রূপদানের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখা যায়৷ যেমন তৎকালীন দাবার নিয়ম ছিল যিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন থাকবেন, তাকে অন্য একজন দাবাড়ু চ্যালেঞ্জ করবেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে দাবায় হারাতে পারলে তবেই তিনি হবেন নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তবে এই ব্যবস্থায় বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। যেমন যদি বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আমেরিকান হয়ে থাকেন, তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বিশ্বের আরেক প্রান্ত থেকে আরেকজন দাবাড়ু এতটা দূরত্ব অতিক্রম করে আসতে চাইতেন না। আবার যে দাবাড়ু চ্যালেঞ্জ করতেন তাকে নিজেই সেই দাবা ম্যাচের জন্য স্পন্সর খুঁজতে হতো এ সব সমস্যার কারণে এই পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়।
চেস ফেডারেডন গঠন
নতুন নিয়মে দাবাকে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার রূপ দেওয়া হয়, যাতে প্রতি আঞ্চলিক পর্যায়ে লড়াই করে করে নতুন দাবাড়ুদেরও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল। এতে দাবাড়ুরা প্রথমে ইন্টারজোনাল অর্থাৎ আঞ্চলিক পর্যায়ে দাবা প্রতিযোগীতার মাধ্যমে নির্বাচিত হতে 'ক্যান্ডিডেট স্টেজ' এ প্রবেশ করতেন। ক্যান্ডিডেট স্টেজটি নক আউট ধরনের। অর্থাৎ একটি ম্যাচ হেরে গেলেই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়তে হবে। এই স্টেজে যে দাবাড়ু শেষ অবধি টিকে থাকবেন তিনিই সুযোগ পাবেন বর্তমান চ্যাম্পিয়নকে চ্যালেঞ্জ করার এবং তাকে হারিয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।
এতে যা সুবিধা হয় তা হলো এই ম্যাচের জন্য আর দাবাড়ুকে নিজে স্পন্সর খুঁজতে হয় না। কারণ এটা একটা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট তাই এর জন্য আলাদাভাবেই স্পন্সর থাকে। এছাড়াও আঞ্চলিক পর্যায়ে খেলার সুযোগ থাকায় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের নতুন প্রতিভাবান দাবাড়ুরাও বিশ্বমঞ্চে উঠে আসার ও পরিচিতি পাওয়ার সুযোগ লাভ করে থাকেন। এই ইন্টারজোনাল স্টেজ, ক্যান্ডিডেট স্টেজ ও সবশেষ ফাইনাল ম্যাচ এই পুরো প্রতিযোগিতাটি তিন বছর ধরে চক্রাকারে চলমান থাকে৷ এই পুরো প্রতিযোগিতাটির তত্ত্বাবধানে থাকে FIDE নামক সংগঠনটি।
১৯৯৩ সালে তৎকালীন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্যারি ক্যাস্পারভ ও আরেকজন ব্রিটিশ দাবাড়ু নিগেল শর্ট FIDE এর সঙ্গে কিছু মতপার্থক্যে সম্পর্ক ছিন্ন করেন ও নিজেরাই আলাদা একটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা শুরু করেন। তারা সেই পুরাতন নিয়মে ফিরে যান, যেখানে বর্তমান চ্যাম্পিয়নকে কয়েক ধাপে চ্যালেঞ্জ করে হারিয়ে অন্যজন চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে। অন্যদিকে FIDE সংগঠনটি নিজেরা উপরে উল্লিখিত ধরনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে থাকে। এরকমভাবে দাবার দুইটি আলাদা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ২০০৬ সাল অবধি চলতে থাকে। ২০০৬ সালের পর অবশেষে দুটি আবারো একীভূত হয় এবং FIDE এর অধীনে আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন চলতে থাকে।
দাবাতে কম্পিউটারের সংযুক্তি
১৯৯৯ এর শুরুতে, তৎকালীন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দাবাড়ু ক্যাস্পারভ, অনলাইনে সারা বিশ্বের ৫০ হাজারের অধিক দাবাড়ু নিয়ে গঠিত একটি টিমের সঙ্গে চারমাস ব্যাপী একটি দাবা ম্যাচ খেলেন এবং জয়লাভ করেন। ৫০ হাজার দাবাড়ুর এ টিমটিতে প্রতিটি চালের আগে ভোট হতো এবং যেই চালটির জন্য সর্বাধিক ভোট পড়তো সেটিই খেলা হতো। কিন্তু তাও ক্যাস্পারভকে তারা হারাতে পারেননা। এছাড়াও ক্যাস্পারভ আশি ও নব্বই দশকের কম্পিউটারগুলোকেও দাবা খেলায় হারিয়ে দেন। তবে তিনিও পরাজিত হন আধুনিক কম্পিউটার প্রোগ্রামের কাছে।
দাবা খেলার জন্য প্রোগ্রাম লেখা শুরু হয়েছিল ১৯৪০ এর দশক থেকেই। তবে সেসময়ের কম্পিউটারগুলো দক্ষ দাবাড়ুদের হারানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিলনা। তবে নব্বই দশকের শেষদিক এবং ২০০০ সালের পর থেকে কম্পিউটারগুলোর ব্যাপক উন্নতির ফলে দাবাড়ুদের হারিয়ে দেওয়া শুরু করে। দাবাড়ু ক্যাস্পারভ সহ অনেক গ্রান্ডমাস্টারই এখন অবধি কম্পিউটার প্রোগ্রাম এর কাছে দাবা খেলায় পরাজিত হয়েছেন। মানুষের সঙ্গে মেশিনের তুলনা দেওয়া অমূলক, তবে দাবাড়ুরা বর্তমানে নিজেদের দাবা খেলার দক্ষতা ঝালাই করে নিতে অনুশীলনের জন্য কম্পিউটারকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকেন। এমনকি একজন সাধারণ ব্যাক্তিও কম্পিউটারের সাহায্যে দাবা খেলার উপকারি দিকগুলো বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করতে পারেন।
Post a Comment