২৬ জুলাই, কার্গিল বিজয় দিবস: ফিরে দেখা আজকের দিনের সেই ইতিহাস
ODD বাংলা ডেস্ক: কাশ্মীর থেকে কন্যকুমারী-আজ প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে এক অত্যন্ত গর্বের দিন। কারণ, ২৬ জুলাই দিনটি কার্গিল বিজয় দিবস হিসাবে পালিত হয়। এই বছর যার ২৩ বছর পূর্তি। গর্বের পাশাপাশি ভারতবাসীর কাছে এটি একটি দুঃখের দিনও বটে। কারণ, কার্গিলের যুদ্ধে ভারতের ৫২৭ জন বীর জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন।ভারতবর্ষের প্রতিটা কোণে ২৬ জুলাই গর্বের সঙ্গে পালন করা হয়। ১৯৭১-এর যুদ্ধের পর সেই অর্থে অস্ত্রহামলা করেনি ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই।
পরের দু-দশক দু দেশের সম্পর্কটা ছিল সীমান্তে চাপানউতোরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। পাক সেনারা বিভিন্ন সময় ভারতের সীমান্ত অতিক্রম করতে চেয়েছে বটে, তার জবাবে পাল্টা হামলা করেছে ভারতও। ইঁটের জবাবে পাটকেল দিতে দ্বিধা করেনি ভারতীয় সেনারা। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রায়ই দাবি করা হয়েছে কাশ্মীরের অধিকার নিয়ে। যদিও ভারত কোনও ঝামেলায় জড়াতে চায়নি পাকিস্তানের সঙ্গে। বরং, কার্গিল নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনা বজায় রেখেছিল ভারত।
আসুন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক কার্গিল যুদ্ধের ইতিহাস-
১৯৯৮-৯৯ শীতকাল খানিকটা অধৈর্য হয়ে পড়েছিল পাক সেনাবাহিনী। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় ভারতও। তাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের কাছে পেরে উঠছিল না পাকিস্তান। আবার যখন তাদের সেনাবাহিনী সীমান্তে সামান্য় সংঘর্ষও করেছে, সঙ্গে সঙ্গে মুখের ওপর জবাব পাচ্ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছ থেকে। তাই বোধহয়, দু-দিক থেকেই পেরে না ওঠায় খানিকটা বেপরোয়া হয়ে পদক্ষেপ নিয়েছিল পাক সেনাবাহিনী।
১৯৯৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সশস্ত্র সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অফ কন্ট্রোল (LOC) পেরিয়ে ঢুকে পড়তে থাকে ভারতীয় সীমান্তের কাশ্মীরের কার্গিল জেলায়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এর নাম দেওয়া হয়েছিল 'অপারেশন বদ্রি'। সীমান্তে ভারতীয় অতন্দ্র প্রহরীদের চোখ এড়িয়ে যায়নি কোনও কিছুই। শুরু হয় দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। পাকিস্তান যে বেশ পরিকল্পনা করে হামলা চালাচ্ছে, তা বুঝে যায় ভারত। তাই প্রায় ২ লক্ষ সেনা কার্গিল সীমান্তে মোতায়েন করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের পক্ষ থেকে এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয় 'অপারেশন বিজয়'। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। দু-পক্ষেরই জওয়ানরা প্রাণ হারাতে থাকে। তবে, কিছুতেই পিছু হঠতে চাইছিল না পাক সেনারা। এই পরিস্থিতিতে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলতে থাকে প্রায় দু মাসেরও বেশি সময় ধরে।
অবশেষে আসে ২৬ জুলাই ১৯৯৯। ওই দিন পাকিস্তানি সেনাদের পিছু হঠতে বাধ্য করে ভারতীয় সেনারা। কার্গিলের ওই যুদ্ধে জয়লাভ করে ভারত। তাই ২৬ জুলাইকেই 'কার্গিল বিজয় দিবস' হিসেবে পালন করা হয়। পরের বছর থেকে কার্গিলে এবং রাজধানী নয়াদিল্লিতে ২৬ জুলাই বিশেষ অনুষ্ঠান করে পালন করা হয় কার্গিল বিজয় দিবস। দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক বছর ২৬ জুলাই ইন্ডিয়া গেটের সামনে অমর জওয়ান জ্যোতিতে কার্গিল যুদ্ধের নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। কার্গিল বিজয় দিবসের ২২ বছর পূর্তিতে এবার দুদিনের একটি মোটর বাইক ব়্যালি-র আয়োজন করা হয়েছে।
Post a Comment