আমের দামে কিনতে পারেন গাড়ি! দেখে নিন রাজস্থানে হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম

 


ODD বাংলা ডেস্ক: কোটায় বসবাসকারী কৃষক কিষাণ সুমনের ক্ষেতে এই বিশেষ আমের চাষ হচ্ছে। এই আমের নাম ‘মিয়াজাকি আম’। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম হিসেবে বিবেচিত।


আজ ২২ জুলাই, ২০২২ জাতীয় আম দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। এই উপলক্ষ্যে জেনে নিন রাজস্থানে জন্মানো একটি বিশেষ প্রজাতির আমের কথা। এই আমটি এতটাই স্পেশাল যে, আপনি ২ কেজি আমের দামে একটি বাড়ি কিনে নিতে পারবেন। কোটায় বসবাসকারী কৃষক কিষাণ সুমনের ক্ষেতে এই বিশেষ আমের চাষ হচ্ছে। এই আমের নাম ‘মিয়াজাকি আম’। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম হিসেবে বিবেচিত। কোটা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই কৃষক তাঁর চাষের কারণে রাজস্থানে অনেক পুরস্কার জিতেছেন। আমের ক্ষেত্রে পিএইচডি করা এই চাষি আমের এমন একটি জাতও তৈরি করেছেন যা মাত্র ২ বছরেই ফল দেওয়া শুরু করে। জেনে নিন, কেন এই মিয়াজাকি আমটি অসাধারণ।

 

এটি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর আগে জাপানের মিয়াজাকি শহরে আবিষ্কৃত হয়েছিল, যে কারণে এটি মিয়াজাকি নাম পেয়েছে। জাপানি গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়াজাকি আম বিশ্বের সবচেয়ে দামি আমগুলোর মধ্যে একটি। আন্তর্জাতিক বাজারে এটি প্রতি কেজি প্রায় ২.৭০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু, এটির বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ আবহাওয়া প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এই আবহাওয়া গ্রীষ্মকালীন দেশে পাওয়া যায় না।

 

রাজস্থান যেমন গরমে হাঁসফাঁস করা একটি রাজ্য, তেমনই ভারত একটা গরম জলবায়ুর দেশ। কিন্তু, সেখানেই একজন কৃষক এটির চাষ শুরু করেছেন এবং হাজার হাজার কৃষকরা এবার এই চাষ দেখতে যাচ্ছেন।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর দাম প্রতি কেজি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এর রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই আমগুলি বিস্ময়ের চেয়ে কম কিছু নয়। জাপান দেশের দাম অনুযায়ী এর দাম এত বেশি। যদিও ভারতে এটির দাম বেশ কম, তবে এটি ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল জাত।


মধ্যপ্রদেশের একজন কৃষক এটি প্রতি কেজি ২১০০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। দাম সম্পর্কে কথা বললে, প্রতি কেজি ২,৫০,০০০ টাকা অনুযায়ী, ২ কেজি মিয়াজাকি আমের দামে হাউজিং বোর্ডের ই-ডব্লিউ-এস ক্যাটাগরির ফ্ল্যাট কিনতে পাওয়া যাবে। ২ বছর আগে জয়পুরে হাউজিং বোর্ড ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় এই ফ্ল্যাট বিক্রি করেছিল। তার মানে, এবার আমের দামেই কিনতে পাওয়া যাবে গোটা একটা দামি ফ্ল্যাট। 


কোটায় বসবাসকারী কৃষক কিষাণ সুমন তার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ১৫ বছর ধরে কৃষিকাজ করছেন। জমিতে অনেক জাতের আম রোপণ করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলিতে দেশি সার জলে গুলে দেওয়া হয়। কিষাণ সুমনকে ২০১৯ সালে এক বন্ধু মিয়াজাকি আমের তিনটি চারা উপহার দিয়েছিলেন, এই গাছগুলি থাইল্যান্ড থেকে আনা হয়েছিল, এই আমগুলো জাপানের কিউশু জেলার মিয়াজাকি শহরে জন্মায়। এসব আমের ওজন ৩৫০ গ্রামেরও বেশি। এতে সুগারের পরিমাণ ১৫% বা তার বেশি। ইন্টারনেট এবং ইউটিউবের সাহায্য নিয়ে তিনি এর চাষ শুরু করেছিলেন।

 

৩ বছরের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করেছে এবং এখন এই গাছগুলিতে চারাও তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সামনে আমের প্রদর্শনী করছেন কৃষক কিষাণ সুমন। এ সময় তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রপতিকে আমের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যও বলেন।  এই আম চাষের জন্য তিনি অনেক সম্মানও পেয়েছেন।  দুটি নতুন জাতের আমও তিনি প্রস্তুত করেছেন। এখন কোটা সহ রাজস্থানে এগুলি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুমন ২০১৯ সালে কিষাণ বিজ্ঞানী পুরস্কারেও ভূষিত হন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.