বিশ্বের অন্যতম ধনী পরিবারের পূত্রবধু, টাকার লোভে প্রাক্তন স্বামীকে এত নৃশংসভাবে খুন করার প্ল্যান করেছিলেন!

 


ODD বাংলা ডেস্ক: আন্তর্জাতিক সিনেমায় একটি ছবি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছিল। জনপ্রিয়ও হয়েছিল এই ছবিটি। এই ছবিটি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত বিলাসবহুল লেবেল গুচির সঙ্গে যুক্ত। 'হাউজ অফ গুচি' নামের এই ছবিটি বিখ্যাত ফ্যাশন হাউজের কিছু অজানা গল্প প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিল। গুচির প্রতিষ্ঠাতা Guccio Gucci নাতি Maurizio Gucci-এর গল্প বলেছিল ছবিটি।


Maurizio Gucci-এর সঙ্গে Patrizia Reggiani-এর প্রেম, বিয়ে, বিবাহবিচ্ছেদ এবং তারপর খুন, এইসবই উঠে আসে ছবিতে। এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি এমনই ছিল, যা মানুষকে অবাকও করেছে। (ছবি: Instagram@ladygaga)


গরিব থেকে ধনী ব্যক্তির স্ত্রী হয়ে ওঠার গল্প


প্যাট্রিজিয়া উত্তর ইতালির ভিগনোলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা তাঁকে ছেড়ে চলে যান। যার কারণে তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। তাঁর মা পরে ধনী ব্যবসায়ী ফার্দিনান্দো রেগিয়ানোকে বিয়ে করেন। যিনি প্যাট্রিজিয়াকে দত্তক নেন। প্যাট্রিজিয়ার সঙ্গে একটি পার্টিতে সময় গুচির উত্তরসূরি মাউরিজিওর দেখা হয়। এরপর তাঁরা আরও ঘনিষ্ঠ হন। তাঁরা দুই বছর পর বিয়ে করে নিউইয়র্কে চলে যান। (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)


বাবা বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন


রোডোল্ফো গুচি তাঁর ছেলের এই বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে প্যাট্রিজিয়া তাঁদের ব্যবহার করতে চাইছেন। তাঁদের পরিবারের বউ হওয়ার এটাই একমাত্র কারণ। গুচি পরিবারের শুধুমাত্র সম্পদ এবং নামের জন্য মৌরিজিওর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন।


যাইহোক, তা সত্ত্বেও, তিনি দম্পতিকে একটি বিলাসবহুল পেন্টহাউস উপহার দিয়েছেন। এখানে আসার পর, প্যাট্রিজিয়ার সোশ্যাল সার্কেল বড় হয়। আরও অনেক বন্ধু তৈরি হতে থাকে। এই দম্পতির দুটি মেয়েও ছিল। (ছবির ক্রেডিট: ইটি)



স্ত্রীকে ছেড়ে চলে যান মাউরিজিও


এই দম্পতির দাম্পত্য জীবনে সবকিছুই ভালো চলছিল না। ১৯৮২ সালে, তাঁরা দুজনেই নিউইয়র্ক ছেড়ে মিলানে ফিরে আসেন। ১৯৮৫ সালে, মাউরিজিও তাঁর স্ত্রীকে জানান যে, তিনি একটি ব্যবসায়িক সফরে বা বিজনেস ট্রিপে যাচ্ছেন। তারপর তাঁদের এক বন্ধু বাড়িতে আসেন। তিনি প্যাট্রিজিয়াকে বলেন যে, গুচির তরফে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছে। তাঁরা আর একসঙ্গে থাকতে চান না।


১৯৯৩ সালে মাউরিজিওর পাওলা ফ্রাঞ্চির সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসতে থাকে। যে কারণে প্যাট্রিজিয়া আরও হিংসে করতে শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদ হয়। যার বিনিময়ে তিনি গুচি থেকে প্রতি বছর ১.৪৭ মিলিয়ন ডলার পেতেন।


খুনের পরিকল্পনা করে


মাউরিজিও গুচিকে ১৯৯৫ সালে ২৭ মার্চ গুলি করে হত্যা করা হয়। তদন্তে জানা যায় যে, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী প্যাট্রিজিয়া এই কাজের জন্য কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছিলেন। আদালতে শুনানির সময় বলা হয়, পুরো ঘটনাটি রাগ, ঈর্ষা ও অর্থের লোভেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল।



হত্যার দিন, প্যাট্রিজিয়া তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘প্যারাডাইজ’ বা ‘স্বর্গ’। আদালত গুচি পরিবারের প্রাক্তন পুত্রবধূকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাকে ২৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়। আর একটি আবেদনের ভিত্তিতে এটি কমিয়ে ২৬ বছর করা হয়। (ছবি: ইন্ডিয়াটাইমস)


আত্মহত্যা করার চেষ্টা


জেলে থাকার সময়ে প্যাট্রিজিয়া আত্মহত্যা করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু সঠিক সময়েই রক্ষা পেয়ে যান। বিশেষ অনুমতি নিয়ে তাঁর পোষা ফেরেটকে তাঁর সঙ্গে জেলে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। ভালো আচরণের জন্য ১৮ বছরের সাজা ভোগ করার পর প্যাট্রিজিয়া ২০১৬ সালে মুক্তি পায়। প্যাট্রিজিয়া এখন মিলানে থাকেন। তিনি হয়তো এখন জেলের বাইরে কিন্তু গুচি পরিবার হয়তো কোনওদিন এই খারাপ স্মৃতি ভুলতে পারবে না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.