এক ঢিলে দুই পাখি নয়, ১০০ পাখি মারা ঐতিহাসিক বন্দুক !
ODD বাংলা ডেস্ক: বন্দুকটির নাম পান্ট গান। এক ঢিলে দুই পাখি মারার কথা শুনেছেন সবাই। তবে এই বন্দুক দিয়ে একসঙ্গে ১০০ পাখি মারতে পারবেন। বিংশ শতাব্দী বা তার আগে একপ্রকারের শটগান ব্যবহার করা হতো, যার নাম ছিল পান্ট গান।
এটি সাধারণত হাঁস মারার জন্য ব্যবহার করা হত। তবে কোনও যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো না। ১৮৬০ সালে আমেরিকানরা এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি করত। অন্যান্য বন্দুকের থেকে এই বিশেষ বন্দুকটি একটু বড়ই হয় আকারে। কিন্তু এই পান্ট গান সেই সবকিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বিশাল বড় গোদা বন্দুক। দূর থেকে দেখলে মনে হবে কামান হেঁটে যাচ্ছে। এমন আকারই বাকিদের থেকে আলাদা করেছিল একে। ইতিহাসে জায়গা করে নেয় এই বিশেষ পান্ট গান।
উনবিংশ থেকে বিংশ শতকের শুরুর সময় পর্যন্ত এই বন্দুকের ব্যাপক ব্যবহার ছিল। তাই বলে যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, শুধু পাখি শিকারের কাজেই একে ব্যবহার করা হত। তার অন্যতম কারণ ছিল এর আকার। পান্ট গান এতটাই বড় এবং ভারী ছিল যে দুজন মানুষ মিলে বন্দুকটি চালাত। একজনের পিঠে বন্দুকের নল রেখে, অন্যজন ট্রিগার টিপত। এই পুরো ব্যাপারটাই ছিল ভীষণ মুশকিলের।
এই বন্দুকটি ব্যবহৃত হতো পান্ট নামক এক নৌকায় চড়ে, যে নৌকার নামের উপর ভিত্তি করে এর নাম, পান্ট গান দেয়া হয়েছে। বন্দুকটি এতটাই বড় ছিল যে, এটা হাতে নিয়ে চালানো সম্ভব ছিল না। তাই একে পান্ট নামক নৌকায় রেখে ব্যবহার করা হতো।
বন্দুকটি যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল, এবং নৌকাটি সে তুলনায় ছোট ছিল বলে, বন্দুকটি থেকে গুলি বের হবার পর, নৌকাটি কয়েক ইঞ্চি পিছনে সরে যেত। অনেকসময় গুলি বেরনোর পর ব্যাকফায়ারে নৌকোটিও মাঝেমধ্যে উল্টে যেত।
বন্দুকটির পরিধি প্রায় ৫৫ মিমি ছিল। ১৯৯৫ সালেও ব্রিটেনে এই বন্দুকটির ব্যবহার দেখা যেত। কিন্তু তখন এর পরিধি কমিয়ে ৪৪ মিমি করা হয়। ২০০৪ সালে একটি সিনেমায় পান্ট গানের ব্যবহার দেখা যায়। সেখানে বন্দুকটি প্রায় ৮ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা থাকে এবং এর ওজন ছিল প্রায় ৪৩ কেজি। এত বড় বন্দুককে নিয়ে নিশ্চয়ই যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়া যায় না! কিন্তু শিকারের দিক থেকে পান্ট গান ছিল যথেষ্ট উপযোগী।
মূলত ওয়াটারফাউল পাখি শিকারের জন্য এটি ব্যবহৃত হত। এর একটা শটে ১০০টি পাখি একসঙ্গে মারা যেত!
তবে ধীরে ধীরে শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় এবং এত বড় বন্দুক নিয়ে যাওয়া আসা করাটাও অত্যন্ত সমস্যার। তাই বিংশ শতাব্দীতেই ইতি হল পান্ট গানের। কিন্তু ‘অন্যের কাঁধে বন্দুক রেখে চলা’ প্রবাদটিও ততদিনে সত্যি করে দিয়ে গেছে এই বন্দুকটি।
Post a Comment