এয়ারপোর্টের ঝাড়ুদার থেকে কোটিপতি! আমিরের গল্পে অনুপ্রাণিত হাজার হাজার যুবক

 


ODD বাংলা ডেস্ক: যাই হোক, তোমার আশপাশে যাই ঘটুক, তবু নিজের স্বপ্নের হাত ছেড়ো না। তার সঙ্গেই থাকো।—ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ আমির কুতুবের জীবনের গল্পটা অনেকটা এরকমই।


না হলে পড়ার জন্য অষ্ট্রেলিয়া যাত্রা, বিমানবন্দর সাফাইকর্মীর কাজ থেকে বাড়িতে-বাড়িতে সংবাদপত্র দেওয়ার কাজের মধ্যেও একফোঁটা নিজের লক্ষ্য থেকে সরেননি আমির। যার ফল আজকে তিনি বহুজাতিক কোম্পানির কর্ণধার। এবং বিশ্বের চারটি দেশে তাঁর কোম্পানির অস্তিত্ব রয়েছে।



উত্তরপ্রদেশের ছোট শহর আলিগড়ে আমিরের বড় হয়ে ওঠা। তাঁর বরাবরের স্বপ্ন ছিল, নিজের একটি ব্যবসা চালু করার। বছর 10 আগে আমির অষ্ট্রেলিয়ার Deakin University-তে এমবিএ পড়ার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন। এবং প্রথম সেমিস্টারে স্কলারশিপও পেয়েছিলেন। কিন্তু চলাফেরার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন ছিল, তাতে তা মেটেনি।


আমিরের নিজের কথায়, ‘‘নিজের টিঁকে থাকা এবং ব্যবসা চালুর জন্য টাকার দরকার ছিল। বাবার কাছ থেকে টাকা নেব না ঠিকই করেছিলাম। কারণ, বাবা এমবি করার জন্যই 5 লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন।’’ ঘটনাপ্রবাহ বলছে, উপার্জনের জন্য আমির প্রায় 170টি ফার্মে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু তার কোনওটার থেকেই কোনও সাড়া পাননি।


ঘটনাচক্রে তিনি Geelong-এর এয়ারপোর্টে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ পেয়েছিলেন। সেখানে সপ্তাহে 4 দিন তাঁকে সকাল 6 টা থেকে সন্ধে 6 পর্যন্ত কাজ করতে হত। তার ফলে পড়াশোনার কোনও সময় তাঁর হাতে থাকছিল না। তাই তিন মাস পরে তিনি কাজটি ছেড়ে দেন।


আমির কুতুব


তারপর বাড়িতে সংবাদপত্র দেওয়ার আরেকটি কাজ পান। সে কাজটি ভোররাত 3টে থেকে সকাল 8টা পর্যন্ত ছিল। এই কাজটায় তবু তিনি পড়াশোনার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছিলেন।


কিন্তু আমিরের স্বপ্ন যেহেতু আলাদা ছিল, তাই আমির তারই সঙ্গে অন্য কাজের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমির একটি আইটি ফার্মে ইন্টার্নশিপের চাকরি পেয়েছিলেন। সেখানে কোম্পানির জন্য একটি বিজনেস মডেলও প্রস্তুত করেছিলেন। তার দ্বিতীয় ইন্টার্নশিপ ছিল আরেক আইটি ফার্ম ICT Geelong-তে। সেখানে অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে তাঁর বেতন ছিল AUD 5,000।


আমির সেখানে সরাসরি জেনারেল ম্যানেজারের অধীনে কাজ করতেন। তবে জেনারেল ম্যানেজার চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছিলেন। পদটি পূরণের জন্য এবং আমিরের কর্মদক্ষতায় খুশি হয়ে কর্তৃপক্ষ তাঁকে ওই পদে বসান। ইতিমধ্যে আমির এমবি পাশ করেন এবং কোম্পানির তরফে তাঁকে স্থায়ী জেনারেল ম্যানেজার করা হয়। আমিরের কথায়, ‘‘এক বছরের মধ্যে কোম্পানির আয় প্রায় 300 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।’’


2014 সালে ICT Geelong-এ কাজ করাকালীনই তিনি Enterprise Monkey Proprietor Ltd সম্পর্কে নিজস্ব ব্যবসা চালু করেন। সেখানে তাঁর বিনিয়োগ ছিল AUD 4,000।


আমিরের এই কোম্পানিটি হল web and app development কোম্পানি। আস্তে আস্তে আমির ব্যবসার সম্প্রসারণ করেন এবং বছরের সেরা ‘Australian Young Business Leader’ পুরস্কারও পান। ব্যবসা চালুর পরে 5 বছর সময়ের মধ্যে আমির নিজের ব্যবসার টার্নওভার AUD 2 million (approximately Rs 12 crore) নিয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে চারটি দেশে তাঁর কোম্পানি রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.