ছেলের ‘নিরাপদ’ ভবিষ্যতের জন্য আবর্জনা জমাতেন বাবা!

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ঘটনাটি ঘটেছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। ছেলের বয়স ৪০বছর। কিন্তু সে  বাড়ি থেকে বের হতে কিংবা কোনো চাকরি নিতে রাজি ছিল না। এই অলস ছেলে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান বাবা। ভবিষ্যতের কথা ভেবে গত এক দশকে দেশটির এক বয়স্ক পিতা তার বাড়িতে আবর্জনা জমিয়ে রেখেছিলেন।

দক্ষিণ করোয়ার গোয়াঞ্জু শহরের বিভিন্ন রাস্তা থেকে আবর্জনা এনে নিজের দোতলা বাড়িতে জমাতেন ৭৫ বছর বয়সী ঐ বাবা। যার নাম চোই। তার বাড়ির উঠান, ব্যালকনি, এমনকি অন্দরমহলও দিনে দিনে আবর্জনায় ভরে যাচ্ছিল। ঢেকে গিয়েছিল বাড়ির সদর দরজা। 

বাড়ির ভেতর বসবাস করার মতো অবস্থা ছিল না। গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছিল বাড়ির বাইরেও।


প্রতিবেশীরা শুরুতে অভিযোগ করলেও পরে হাল ছেড়ে দেন। এভাবে এক বা দুই দিন নয় গোটা এক দশক কেটে যায়। আবর্জনাকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা চোই বেশ গর্বের সঙ্গেই জানিয়েছেন, প্রতিদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে এগুলো তিনি সংগ্রহ করেন।


দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, ছেলের ওজন ১০০ কেজির বেশি। সারাদিন ছোট্ট একটি কক্ষে বসে বেকার সময় কাটাতে পছন্দ করেন।


বাবা-মা তাকে বের হয়ে চাকরি খোঁজার জন্য বারবার অনুনয় করা সত্ত্বেও অলস এই ছেলেকে রাজি করাতে পারেননি। আর এ কারণেই আবর্জনা জমানোর কাণ্ড বেশ মন দিয়ে করছেন চোই! এই বাবা মনে করতেন তিনি এবং তার স্ত্রী মারা যাবার পর তাদের সন্তানের কী হবে?

ছেলে যাতে ঘর থেকে বের হয়, কাজে যায় সেজন্যই ঘরের ভেতর আবর্জনা জমা করতেন চোই। ছেলের সিদ্ধান্তে কোন বদল আসে না বরং চোই এর  ৭০ বছর বয়সী স্ত্রী হৃরোগে আক্রান্ত হন। ডাক্তার পরামর্শ দেন, ভালো পরিবেশে থাকতে হবে। চোই অবশ্য রাজি হন নিজের ও স্ত্রীর ভালোর জন্য বাড়িটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নেন। 


এরপর ২২৬ জন স্বেচ্ছাসেবী ও একটি এক্সকেভেটরের সাহায্যে  ঐ বাড়ি থেকে প্রায় ১৫০ টন আবর্জনা সরানো হয়েছিল। সে সময়ও ঐ দম্পতির ছেলেটি নিজের রুম থেকে বের হতে শুরুতে রাজি হচ্ছিলেন না; পরে বাবা-মায়ের সঙ্গে আলাপ করে এক বছর পর প্রথমবারের মতো বাড়ির বাইরে পা রাখেন। নিজের বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে দেখে চোই অবশ্য ভেঙ্গে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতে বারবার বলতে থাকেন, আমার নিজের ও স্ত্রীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করে আমি আর জীবনেও ময়লা জমাবো না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.