হিটলার মেয়ে পুষতেন তার সন্তান জন্ম দেবার জন্য, তথ্য ও ছবিগুলি দেখলে আপনি চমকে যাবেন…

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ১৯৩৬ সালে নাৎসি সমর্থক ও স্নাতক হিল্ডগার্ড ট্রাতজ জার্মানির জাতিগত ‘বিশুদ্ধ’ নারীদের একজন হিসেবে নিয়োগ হয়েছিলেন, যিনি এস.এস. কর্মকর্তাদের সাথে শোওয়ার জন্যে নির্বাচিত হয়েছিলেন যাতে আর্য সন্তানের জন্ম দেওয়া যায়। ১৯৩০ সালে জার্মানিতে এক গোপন পরিকল্পনার সুচনা হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল নীল চোখ, স্বর্ণকেশী শিশুদের জন্ম দেওয়া।


এলিট জার্মানরা নতুন জার্মান প্রজন্মের উৎপাদনের জন্যে বিশ্বস্ত ছিল। এই পরিকল্পনাটিকে ‘লেবেন্সর্বন’ বলা হয়। এই ভয়ঙ্কর ধারণাটি হেনরিচ হিমলারের মাথায় জন্ম নেয়। হিমলারের কথায়, “যদি আমরা এই জাতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সফল হই, তাহলে বিশ্ব আমাদের অন্তর্গত হবে।” গর্বের সাথে এই পরিকল্পনাটি ঘোষণা করার সময় হিটলার বলেছিলেন, “আমার লোকেরা যেন আমাকে উজ্জ্বল চোখ দিয়ে বলে যে তাদের একটি অবৈধ সন্তান রয়েছে।”


লেবেন্সর্বন প্রোগ্রামে লক্ষ্য – ১৯০০ এর দশকের প্রথম দিকে জার্মানিতে জন্মের হার প্রচণ্ড পরিমাণে হ্রাস পায়। ঠিক সেই সময় ১৯১৮ সালের বিশ্বযুদ্ধের পর দেশের পুরুষ সংখ্যা কমে যায়। তারপরই ১৯৩০ সালে নাৎসিরা এই লেবেন্সর্বন পরিকল্পনাটি শুরু করেন, যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জন্মের হার বৃদ্ধি এবং উচ্চতর আরিয়ান মাস্টার জাতি তৈরি করা।


লেবেন্সর্বন হোম এবং তার অবস্থান – আর্য বংশের অন্তর্গত নারী ও তার সন্তানদের বিলাসবহুল ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হতো। তারা তাদের সন্তানদের লেবেন্সর্বন হোমে রেখে যেতো, যেখানে সন্তানদের জার্মানিতে এবং নাৎসি শিক্ষায় সর্বোত্তম করে তোলা হত।


প্রথমদিকে প্রায় ১০ টি লেবেন্সর্বন হোম ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে নাৎসিরা ইউরোপের বহু দেশকে জয় করে, যার ফলে হিটলার এই পরিকল্পনাটি আরও প্রসারিত করেন। বলা হয় যে নরওয়েতে নয়টি, অস্ট্রিয়ায় দুইটি এবং ফ্রান্স, হল্যান্ড, ডেনমার্ক, লাক্সেমবার্জে একটি করে লেবেন্সর্বন হোম খোলা হয়।


হিটলারের জন্য জন্ম দেয় এমন একজন মহিলার অদ্ভুত কাহিনী – হিল্ডগার্ড ট্রাতজ নামে এক নারী অনুগত নাৎসি সমর্থক ছিলেন। ১৯৩৬ সালে তার জীবন চিরতরে পালটে যায়। ১৮ বছর বয়সে ট্রাতজ তার স্কুলের পড়া সবেমাত্র শেষ করেছেন, পরবর্তীতে কি করবেন তা তিনি জানতেন না। এই উত্তর খোঁজার আশায় তিনি বিডিএম নেতার সাথে যোগাযোগ করেন।


নেতা তাকে লেবেন্সর্বন প্রোগ্রাম সম্পর্কে সবকিছু ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেছিলেন যে ডাক্তার যখন তার জার্মান উৎসকে নিশ্চিত করবে, তখন তিনি এস.এস. কর্মকর্তাদের শক্তিশালী গ্রুপের একজনের সাথে শোওয়ার অংশীদার হতে সক্ষম হবেন। ট্রাতজ সেখানে রাজি হয়ে জান। তাকে একটি পুরানো কেল্লায় ৪০ টি অন্যান্য নারীর সাথে নিয়ে যাওয়া হয়।


প্রথমত তাকে যা করতে হয়েছিল তা হল সব ডকুমেন্টে সাইন। তার ভবিষ্যতের সন্তানদের ত্যাগ করার জন্য তাকে সেই সাইনগুলি করানো হয়। ট্রাতজকে এস.এস. সেনা কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয় করানো হয় যারা শীঘ্রই তার শোওয়ার অংশীদার হবেন। পরিকল্পনার গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য তাদের নামগুলি পালটে দেওয়া হয়।


দশম দিনে রাত কাটানোর জন্য মেয়েদের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিতে বলা হয়। প্রথম সপ্তাহে অফিসার তিন রাত ট্রাতজের সাথে শুয়েছিল। বাকি রাতগুলো তিনি অন্যান্য মেয়েদের সাথেই শুতেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাটজ এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন, যাকে পরে লেবেন্সবর্ন হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের বছরগুলোতে তিনি আরও সন্তান দিতে প্রলুব্ধ হন এবং সবচেয়ে উদ্ভট জিনিস হল তিনি নিজের সন্তানদের হদিস পর্যন্ত জানতে পারতেন না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.