সমুদ্র এসে মিলিত হয়েছে মরুভূমিতে, বিশ্বের এই ৫ জায়গার কথা শুনলে তাক লেগে যাবে!

 


ODD বাংলা ডেস্ক: পায়ের তলায় যাঁদের দিন রাত সর্ষে হরহর করে চলেছে, তাঁদের মন কখনও শান্তিতে থাকে না। একটা ভ্রমণ শেষ হওয়ার পরই, পরের ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে শুরু করে দেন তাঁরা। এই বার পাহাড় ঘোরা হয়েছে, তাহলে পরের বার সমুদ্র হয়ে যাক। নাকি মরুভূমিতে একবার ঢুঁ দিয়ে আসা যায়। বলা বাহুল্য, দুটি স্থানের নাম মাথায় এলে দ্বন্দ্ব বাঁধবেই। সমুদ্র আর মরুভূমির মধ্যে প্রতিযোগিতায় কে জিতবে তা বলা কঠিন। তবে হ্যাঁ, বেড়াতে যাওয়ার মতো শুভ কাজে দ্বন্দ্ব বিবাদ না থাকাই ভালো। তার চেয়ে বরং সমুদ্র আর মরুভূমি দুটি স্থানেই একবারে গেলে কেমন হয়। কেউ হয়তো ভাবছেন, দুটো জায়গায় গেলে দ্বিগুণ বাজেট আর সময় খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাঁদের বলি, সেসব চিন্তা করার দরকার নেই। কারণ আজ এমন কয়েকটি স্থানের হদিশ দেব যেখানে সমুদ্র এবং মরুভূমি গা ঘেঁষাঘেঁষি করে অবস্থান করছে। ঊষর মরুভূমির সঙ্গে মিলিত হয়েছে চিরনবীন নীল মহাসাগর। সময়ে সময়ে মরুভূমিকে এসে যেন আদর করে চুমু খেয়ে যাচ্ছে জলরাশি।

​আফ্রিকা: আটলান্টিক মহাসাগর মিলিত হয় সাহারা মরুভূমিতে


পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর আর পূর্বে লোহিত সাগরকে নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে স্বমহিমায় বিরাজমান সাহারা মরুভূমি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এই এলাকায় অবস্থান করছে বেশ কয়েকট শহর। সেই শহরের লাল, হলদে রঙের রঙিন বাড়িগুলি যেন এক একটা হাতে আঁকা ছবি। আটলান্টিক মহাসাগর এবং আটলাস পর্বতমালার মাঝখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শত শত পুরোনো পাথরের স্মৃতিস্তম্ভ।


​অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়ান মরুভূমি মিলিত রয়েছে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে


দিগন্ত বিস্তৃত ভারত মহাসাগর তার আবেগঘন মুহূর্তে আছড়ে পড়ে অস্ট্রেলিয় মরুভূমির বুকে। যুগ যুগ ধরে এই ঘটনার সাক্ষী অস্ট্রেলিয়ার পার্থ। মূলত সমুদ্র সৈকত এবং চুনাপাথরের পাহাড়ে পরিপূর্ণ এই উপকূলীয় শহরের সৌন্দর্য্য এক কথায় অনবদ্য। অস্ট্রেলিয়ান মরুভূমিটি এখানেই ভারত মহাসাগরের সঙ্গে মিশেছে। এখানে মহাসাগরের উজ্জ্বল নীল জলের দাপটকে যেন আটকে রেখেছে আগ্নেয় শিলার পাহাড়গুলি। এই সাগরের বেশ কিছু স্থানে রয়েছে প্রবালের প্রাচীর। সমগ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এক কথায় অসাধারণ। যদিও সেসব এখনও পুরোপুরি আবিষ্কৃত হয়নি।



​চিলি: আতাকামা মরুভূমি মিলত হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে


উত্তর চিলির আন্তোফাগাস্তা অঞ্চলে সমুদ্র এবং মরুভূমি মিলিত হয়েছে। এরা হল প্রশান্ত মহাসাগর এবং আতাকামা মরুভূমি। এই এলাকাটি একটি পরিত্যক্ত নাইট্রেট খনি অঞ্চল। এলাকাটি বিখ্যাত ভূতুরে শহর নামে। এখানকার বিশালার পাহাড় এবং আদিম সমুদ্র সৈকতে ঢেউয়ের আছড়ে পড়া দেখতে দেখতে অবাক হয়ে যাবেন। এই স্থানটিকে দেখতে অনেকটা চাঁদের মতো। এই অঞ্চলের সেরা দর্শণীয় স্থান হল লস ফ্ল্যামেনকোস ন্যাশনাল রিজার্ভে অবস্থিত চাঁদের উপত্যকা। রাতের বেলা এই এলাকাটি এমনই মায়াবী হয়ে ওঠে যে দেখলে মনে হয় যেন রূপকথার রাজ্যে এসে পড়েছেন।


​অ্যান্টার্কটিকা: মেরুদেশের সঙ্গে সমুদ্রের মিলন


মরুভূমি বললেই মনে পড়ে যায় বালি, গরম, রুক্ষ-শুষ্ক এলাকা এবং শুষ্ক টিলা। তবে আন্টার্কটিকার সেরু অঞ্চলের মরুভূমি কিন্তু সেই চির পরিচিত মরুভূমির থেকে অনেকটাই আলাদা। এখানকার মরুভূমি বরফে ঢাকা, কনকনে ঠান্ডা এবং একেবারে আশ্চর্যজনক। এক কথায় বালির মরুভূমির থেকে একেবারেই উল্টো। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ জুড়েই রয়েছে মেরুদেশের মরুভূমি। এর চারদিকে শুধু বরফ আর বরফ। ম্যাকমুর্ডো শুষ্ক উপত্যকার এলাকায় মরুভূমিটি বরফহীন হয়ে পড়ে এবং সেখানেই সেই মরুভূমি মিলিত হয় অ্যান্টার্কটিকার উপকূলবর্তী সমুদ্রে। স্থানের সৌন্দর্য্যের কোনও তুলনা হয় না।



​আফ্রিকা: নামিব মরুভূমি এখানে মিশেছে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে


আফ্রিকার নামিব মরুভূমি এবং আটলান্টিক মহাসাগরের মিলনস্থলটি UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা পেয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ যখন নামিব মরুভূমির উপকূলে ছুটে আসে তখন সে দৃশ্য হয় দেখার মতো। এখানকার উপকূলবর্তী স্থানে বেশ কয়েকটি ছোটো ছোটো গ্রাম রয়েছে। যদিও গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় হাতে গোনা। নিরিবিলি যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের এই স্থান ভালো লাগবে। এখানকার দর্শণীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে ডোরব ন্যাশনাল পার্ক এবং নামিব-নউক্লুফ্ট জাতীয় উদ্যান।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.