প্রাণ কেড়েছে হাজারের বেশি! তবুও বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তায় ভিড় জমান পর্যটকরা
ODD বাংলা ডেস্ক: পর্যটকরা নতুন নতুন জায়গা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। এর জন্য তাঁরা যে কোনও দুর্গম জায়গায় পৌঁছে যান। বিশ্বে এমন বহু রাস্তা রয়েছে, যে পথে গাড়ি নিয়ে বেরোনোর আগে দু’বার ভাবেন দক্ষ চালকরাও। পাহাড়ি উপত্যকার গা বেয়ে চলা সেই সব রাস্তা প্রকৃতই বিপজ্জনক। কারণ সেখানে প্রতি পদে রয়েছে মৃত্যুর ভয়। একদিকে খাদ, অন্যদিকে ধস নামার ভয়। একই সঙ্গে সমুদ্র থেকে অনেক উঁচুতে থাকে হাওয়ার প্রাবাল্য। বিশ্বের সেইসব বিপজ্জনক রাস্তাগুলির মধ্যে অন্যতম হল চিন থেকে পাকিস্তান অবধি বিস্তৃত কারাকোরাম হাইওয়ে । যা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা।
1978 সালে উদ্বোধন হয় কারাকোরাম হাইওয়ের। বিগত 44 বছরে ওই রাস্তায় মৃত্যু হয়েছে অসংখ্য মানুষের। তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত প্রায় 1000-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই রাস্তায়। কিন্তু, আসল মৃত্যুর সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি। কারণ বহু দুর্ঘটনা নথিভুক্তই হয়নি। এই রাস্তার ভৌগলিক অবস্থান ও বিপজ্জনক আবহাওয়া প্রতি মুহূর্তে সৃষ্টি করে বিপদ। এর সঙ্গে রয়েছে অবিরাম তুষারপাত এবং ধস। এছাড়াও বড় পাথরের চাই হুড়মুড় করে নেমে আসে গাড়ির উপরে। অন্ধ বাঁকে দু’টি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনাও বিরল নয়। এতো কিছুর পরেও এই রাস্তায় ভিড় জমান পর্যটকেরা।
1300 কিলোমিটার দীর্ঘ কারাকোরাম হাইওয়ের যাত্রা শুরু পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের হাসান আবদাল থেকে, গিলঘিট-বালতিসতানের খুঞ্জেরাবে। এরপর তা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে চিনের মধ্যে ঢুকে পড়ে। যা শি জিনপিংয়ের দেশের 314 নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে যায়। কারাকোলাম পর্বতমালার গড় উচ্চতা 15 হাজার ফুট। এর উচ্চতম শৃঙ্গ 15466 ফুট। এই উচ্চতাতেই অবস্থান সেই ভয়ংকর জাতীয় সড়কের। যে পথে দক্ষ চালকেরা মুহূর্তে ব্যালান্স হারিয়ে ফেলে।
ভয়ংকর সেই রাস্তা বাঙালির মনে করায় সৈয়দ মুজতবা আলির, ‘দেশে বিদেশে’। যারা ওই ভয়ংকর রাস্তা পার করেছেন, তাদের মতে কারাকোরাম হল খুবই বিপজ্জনক। বেসরকারি সূত্রের দাবি, কারাকোরাম হাইওয়ে নির্মাণেই মৃত্যু হয়েছিল 810 জন পাকিস্তানি ও 200 চিনা শ্রমিকের। অর্থাৎ সেই পথে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। সেই ভয়ংকর সুন্দর আশ্চর্যকে দেখতে আসেন দেশ-বিদশের বহু অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী পর্যটক। নিজের চোখে দেখতে আসেন মৃত্যুর পথ।
Post a Comment