দেবতাদের মুক্তি দিতে এখানেই কুম্ভকর্ণের অত্যাচারী পুত্রের বধ করেছিলেন মহাদেব!
ODD বাংলা ডেস্ক:শ্রাবণ মাসে শিবের জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শনে জন্য প্রচুর ভক্ত সমাগম হয় দেশের১২টি জ্যোতির্লিঙ্গে। শিব পুরাণে আমরা দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের উল্লেখ পাই। যার মধ্যে ষষ্ঠ হল ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ। মহারাষ্ট্রের পুণে শহর থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরে এই জ্যোতির্লিঙ্গটি অবস্থিত। এই মন্দিরে স্থাপিত শিবলিঙ্গটি খুব বড় ও মোটা হওয়ায় এটি মোটেশ্বর মহাদেব নামেও প্রসিদ্ধ। এই মন্দিরের পাশে ভীমা নদী প্রবাহিত হয়, যা আগে গিয়ে কৃষ্ণা নদীতে মিশে যায়। কিন্তু পুণে থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে কী ভাবে এখানে ও কেন শিব জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে প্রকট হলেন, তা কি জানা আছে?
ভীমশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গের পৌরাণিক কাহিনি
শিবপুরাণে (Shiv Puran) এই জ্যোতির্লিঙ্গের উল্লেখ পাওয়া যায়। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী একদা পর্বতে গিয়ে কর্কটী নামক এক মহিলার সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে পড়েন কুম্ভকর্ণ। তার পর কর্কটীকে বিবাহ করেন তিনি। বিবাহের পর কুম্ভকর্ণ লঙ্কা ফিরে এলেও কর্কটী সেই পর্বতেই বাসবাস করতে থাকে। পরবর্তী কালে কর্কটীর এক পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। তার নাম হয় ভীমা। রাম যখন কুম্ভকর্ণ বধ করেন, তখন কর্কটী নিজের সন্তানকে দেবতাদের দৃষ্টি থেকে দূরে পাঠিয়ে দেন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর ভীমা নিজের পিতা কুম্ভকর্ণের মৃত্যুর কারণ জানতে পারে। তার পরই রাম-সহ সমস্ত দেবতাদের কাছ থেকে এর প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভীমা। রামকে হত্যা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়ে সে। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করে ভীমা।
ভীমার বহু বছরের কঠোর তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে ব্রহ্মা তাকে জয়লাভের আশীর্বাদ দেন। ব্রহ্মার আশীর্বাদ পাওয়ার পরই অত্যাচারী হয়ে ওঠে ভীমা। মনুষ্য়জাতি, দেবী-দেবতাদেরও ভয় দেখাতে শুরু করে সে। সকলে তার আতঙ্কে ত্রস্ত হয়ে ওঠে। যুদ্ধে দেবতাদের পরাজয় করতে শুরু করে সে। এমনকি দেব পুজোও বন্ধ করিয়ে দেয়।
ত্রস্ত ও আতঙ্কিত দেবতারা সমস্যা সমাধানের জন্য শিবের শরণে যান। শিব তাঁদের আশ্বস্ত করেন ও ভীমার সঙ্গে যুদ্ধ করার মনস্থির করেন। এই যুদ্ধ ভীমা রাক্ষসকে পরাজিত করেন মহাদেব। ভীমা বধের পর সমস্ত দেবী-দেবতা তাঁকে সেই স্থানেই শিবলিঙ্গ রূপে অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রার্থনা করেন। সকলের প্রার্থনা স্বীকার করেন ভোলানাথ। তার পর থেকে সেখানেই ভীমাশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ নামে পূজিত হন মহেশ্বর।
Post a Comment