মালাবদল করে বিবাহবন্ধনে জড়ালেন পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়, সমকামী বিয়ে দেখল কলকাতা

 


ODD বাংলা ডেস্ক:বহু দিনের সঙ্গী চৈতন্য শর্মাকে বিয়ে করলেন শহরের পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়। ধর্ম মতেই হল অনুষ্ঠান।


বিয়ে করলেন পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়। বহু দিনের সঙ্গী চৈতন্য শর্মার গলায় মালা দিলেন মধ্য কলকাতার এক হোটেলে। ধর্মীয় মতেই সম্পন্ন হল অনুষ্ঠান। রবিবারের বিবাহ-আসরে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক ও চৈতন্যের কাছের জনেরা। দেখা গেল বহু নামী মুখকেও। কলকাতা শহরে বসে এমন ভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে সমকামী বিয়ে বিশেষ দেখা যায় না বলে মুগ্ধতাও প্রকাশ করলেন নিমন্ত্রিতদের কেউ কেউ।


গুরুগ্রামের বাসিন্দা চৈতন্য। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করেন। জানিয়েছেন, আপাতত বাড়ি থেকেই কাজ করছেন। তাই এখন কিছু দিন অভিষেকের সঙ্গে এ শহরেই থাকছেন।


অভিষেকের বিয়েতে নিমন্ত্রিত ছিলেন রূপটানশিল্পী অনিরুদ্ধ চাকলাদার। তিনি জানালেন, অভিষেক ও চৈতন্যের বিয়ের অনুষ্ঠান এত যত্ন করে হয়েছে, তা দেখেই মন ভরে গিয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনকে অনিরুদ্ধ বলেন, ‘‘অভিষেকরা দু’জনে সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্ড দিয়ে নেমন্তন্ন করেছেন। আগে এমনই হত। কিন্তু আজকাল এত কিছুর সময় থাকে না। ওঁদের আয়োজনে খুব যত্ন ছিল। দেখেই মনে হচ্ছে ওঁরা আনন্দে থাকবেন।’’


সমকামী বিয়ে এখনও আইনসম্মত নয় এ দেশে। ধর্ম মতে মালাবদল করলেও আইনের চোখে কোনও যুগলই একে অপরের পরিবার হিসাবে স্বীকৃতি পান না। এক কালে সমকামিতাকে অপরাধ হিসাবে দেখা হত। ২০১৮ সালে ৩৭৭ ধারা অপরাধ তকমামুক্ত হয়। তবে এ দেশের আইনের চোখে সমপ্রেমীরা বিয়ে করার অধিকার এখনও অর্জন করতে পারেননি। অভিষেক ও চৈতন্যের বিয়ে এ শহরের আরও কিছু সমপ্রেমী যুগলকে ঘর বাঁধতে সাহস জোগাবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। অনিরুদ্ধ বলেন, ‘‘অনেক সমস্যা এড়ানো যায় আইনের স্বীকৃতি পেলে। এ কথা ঠিকই। তবে একে-অপরের মধ্যে ভালবাসা থাকলে সব সময়ে আইনের প্রয়োজনও পড়ে না। অভিষেকদের বিয়ে দেখে আবার সে কথা মনে হল। লিঙ্গভিত্তিক পরিচয়, যৌনতার নিরিখে পরিচয়— সবই যেন একটু পরে আসে। তার আগে দু’জন মানুষের মনের মিলই আসল।’’


বিয়েবাড়িতে দেখা যায় নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্কর ও কন্যা শ্রীনন্দা শঙ্করকে। ছিলেন দুই পোশাকশিল্পী দেব আর নীলও। বিয়েবাড়ির ছবি দিয়ে নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন নীল। জানিয়েছেন, সাধারণত এ শহর কেন, এ দেশেই সমকামী বিয়ে বিশেষ দেখা যায় না। দুই বরকে বরমালা বদল করতে দেখে ভাল লেগেছে তাঁর। নীল লিখেছেন, ‘আগামী দিনে এ বিয়েই নজির হয়ে থাকবে। বদলে দিতে পারে সমাজের চিত্রও।’ প্রেমে পড়া, বিয়ে করার অধিকার যে সকলের রয়েছে, সে কথা মনে করাবে এই বিয়ে। এমনই বক্তব্য নীলের।


সংসার নিয়ে কেমন ভাবনা রয়েছে অভিষেকের? আপাতত বিয়ে নিয়ে খুবই ব্যস্ত। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানান, বিয়ের অনুষ্ঠান সংক্রান্ত নানা কাজ সামলাচ্ছেন এখনও।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.