ভিটামিন ‘ডি’-সমৃদ্ধ খাবারদাবার
ODD বাংলা ডেস্ক: ভিটামিন ‘ডি’ উচ্চ পরিমাণে আছে এমন খাবার তেমন একটা নেই। তবে কিছু খাবার খেলে এর ঘাটতি কিছুটা পূরণ করা যায়। যেমন :
সামুদ্রিক মাছ
উচ্চমাত্রায় ভিটামিন ‘ডি’ থাকে সামুদ্রিক মাছ বা তৈলাক্ত মাছে। যেমন—স্যামন, সাডিন, টুনা, হ্যারিং, ইলিশ মাছের ডিম, চিংড়ি প্রভৃতি।
তিন আউন্স ফ্যাটযুক্ত স্যামন মাছে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায় ৩৭০ আইইউ, যা দৈনিক চাহিদার ৮৪ শতাংশ পূরণ করে। সমপরিমাণ টুনা মাছে থাকে ৫৯ আইইউ।
ডিমের কুসুম
একটি মাঝারি আকৃতির ডিমে ০.৯ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘ডি’ থাকে। এ ছাড়া প্রতিটি ডিমের কুসুমে প্রায় ৪০ আইইউ ভিটামিন ‘ডি’ থাকে। মুরগির ডিমের কুসুমে লসোজাইম, ওভাটান্স ফ্লোরিন, এভিডিন, সিস্টেসিন আছে, যা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ডিমের কুসম ইমিউনোগ্লোবিন-সমৃদ্ধ, যা ঠাণ্ডা বা ফ্লু ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। একটি গোটা ডিমে অ্যামাইনো এসিড ও অ্যান্টি-অক্সিজেন্ট আছে, যা যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ভূমিকা রাখে। তবে ভিটামিন ‘ডি’ পেতে অবশ্যই তেল দিয়ে ডিম খেতে হবে। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা মুরগির ডিম বেছে নেওয়া ভালো। ফিডের মুরগির তুলনায় এতে চার গুণ বেশি ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।
মাশরুম
মাশরুম বিভিন্ন ধরনের এবং সব মাশরুমেই ভিটামিন ‘ডি’ আছে। তবে ইউভি লাইট বা সূর্যের আলোর কারণে মাশরুমে ভিটামিন ‘ডি’র পরিমাণ বাড়ানোর অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। যেসব মাশরুম আট ঘণ্টা সূর্যের সংস্পর্শ পায় সেগুলো ৪৬০০০ আইটিইউ ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি করে। মাশরুমে বিটা-গ্লুকানস নামে শক্তিশালী পলিস্যাকারাইড থাকে, যা প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করতে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
দুধ
দুধ খুব বেশি ভিটামিন ‘ডি’ প্রদান করে না। তবে এটিকে ভিটামিন ‘ডি’ দিয়ে পরিণত করা যায়। কিছু দেশে গরুর দুধকে ফরটিফায়েড করে ভিটামিন ‘ডি’ যোগ করা হয়। এক কাপ দুধে প্রায় ১২৫ আইইউ ভিটামিন ‘ডি’ রয়েছে। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও প্রোটিনের ভালো উৎস দুধ।
লিভার বা যকৃৎ
রান্না করা ২.৫ আউন্স বা ৭০ গ্রাম পরিমাণ গরুর কলিজায় ৩৬ আইইউ ভিটামিন ‘ডি’ থাকে, যা মুরগি বা অন্য কোনো প্রাণীতে থাকে না। তবে এতে কোলেস্টেরল বেশি বলে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
ফরটিফায়েড খাবার
কিছু খাবারে ফরটিফায়েড করে ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ানো যায়। এসব খাবার বিশ্বের অন্যান্য দেশে বেশি দেখা যায় আমাদের দেশের তুলনায়। যেমন—কিছু সিরিয়ালস, ওটস, ফরটিফায়েড কমলার জুস, গরুর দুধ প্রভৃতি। আমাদের দেশে শিশুখাদ্যে ও টিনজাত গুঁড়া দুধে ভিটামিন ‘ডি’ যোগ করা হয়। আধাকাপ ফরটিফায়েড ওটসে ১২০ আইইউ ভিটামিন ‘ডি’ আছে। এ ছাড়া ১০০ গ্রাম টফুতে ১০০ আইইউ ভিটামিন ‘ডি’ থাকে। এক কাপ ফরটিফায়েড দুধে ১২০ আইইউ ভিটামিন ‘ডি’ থাকতে পারে।
সাপ্লিমেন্টারি
উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘ডি’-সমৃদ্ধ খাবার সচরাচর না মেলায় সাধারণ মানুষ এর চাহিদা পূরণ করতে পারে না। তাই ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্টারির প্রয়োজন পড়ে। কারোর ভিটামিন ‘ডি’র মাত্রা কম থাকলে নিজে নিজে নয়, বরং চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্টারি গ্রহণ করা উচিত।
তবে খাবার বা সাপ্লিমেন্টারির চেয়ে সময়মতো নিয়ম মেনে সূর্যের আলো গ্রহণ করাই ভালো। কেননা ক্যালসিয়াম শোষণে ভিটামিন ‘ডি’ শরীরের জন্য বেশ দরকার, যা বিনা মূল্যে মেলে সূর্যের আলো থেকে।
Post a Comment