বিশ্বের দ্বিতীয় দেশের প্রথম IVF প্রবক্তা বাঙালি চিকিৎসকের কপালে জুটেছিল লাঞ্ঝনা, বেছে নেন আত্মহননের পথ



 ODD বাংলা ডেস্ক: বিশ্বের প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয় ২৫ জুলাই ১৯৭৮ সালে লন্ডনে, যার নাম লুই জয় ব্রাউন। এই দিনটিকে বিশ্ব আইভিএফ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কিন্তু লুইয়ের জন্মের মাত্র ৬৭ দিন পরে, যে চিকিৎসক ভারতে প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম দিয়েছিলেন তাঁকে সরকারের পক্ষ থেকে এতটাই হয়রানি করা হয়েছিল যে তিনি ১৯ জুন ১৯৮১ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন।

 

আইভিএফ বা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন কী! এটা হল পিতার শুক্রাণু এবং মায়ের ডিম্বাণুকে আলাদাভাবে নিষিক্ত করে এবং মায়ের গর্ভে রোপন করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার আধুনিক পদ্ধতি। এই মোডটি এমন বহু দম্পতিদের কোলে সন্তান এনে দিয়েছে, যা তাঁরা কোনওদিন কল্পনাও করতে পারেননি যে বাবা-মা হতে পারবেন কোনওদিন। আগে এই ধরনের শিশুকে টেস্টটিউব বেবি বলা হতো।


বিশ্ব আইভিএফ দিবস


জানেন কি বিশ্বের প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয় ২৫ জুলাই ১৯৭৮ সালে লন্ডনে, যার নাম লুই জয় ব্রাউন। এই দিনটিকে বিশ্ব আইভিএফ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কিন্তু লুইয়ের জন্মের মাত্র ৬৭ দিন পরে, যে চিকিৎসক ভারতে প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম দিয়েছিলেন তাঁকে সরকারের পক্ষ থেকে এতটাই হয়রানি করা হয়েছিল যে তিনি ১৯ জুন ১৯৮১ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন।


এই ঘটনায় বহু চিকিৎসক জানিয়েছেন ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আবিষ্কারকে যদি সম্মান করা হতো এবং তাঁর কৌশলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো, তাহলে আজ তিনি এই ক্ষেত্রে বাংলা অনেক এগিয়ে থাকতেন। তাঁর দাবি মেনে না নেওয়ার কারণ ছিল একজন ভারতীয় তথাকথিত বাঙালি চিকিৎসকের এত বড় কৃতিত্ব বিদেশি চিকিৎসকদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। এই কারণেই সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং শুধু বিশ্বে নয়, দেশের অনেক মহল থেকে এই চিকিৎসক সুভাষ মুখোপাধ্যায়-কে নিয়ে হাস্য কৌতুক মন্তব্যও করেছিলেন। সেই সময়ের বাংলার সরকার তাঁর দাবিকে ভুল বলে তাঁকে সমর্থন না করে বদলিও করে দেন। নানাভাবে হয়রানি করা হয় এই জ্ঞানী চিকিৎসক-কে। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর বিশ্ব বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেছিলেন যে ডক্টর সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কৌশল সঠিক ছিল এবং তাঁর দাবিও ন্যায্য ছিল।


ডক্টর টিসি আনন্দ কুমারের কৃতিত্ব সামনে আসে-

এটাও উল্লেখ করা দরকার যে ডক্টর মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর, তার গবেষণা এবং কাজ বিশ্বের দরবারে আবারও নিয়ে এসেছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি ভারতে প্রথম টেস্টটিউব বেবিকে সুরক্ষিতভাবে এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। তিনি ছিলেন ডক্টর টিসি আনন্দ কুমার। ডাঃ আনন্দ যে টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেন সেও মেয়ে ছিল এবং তার নাম ছিল হর্ষ। হর্ষকে দেশের প্রথম টেস্টটিউব বেবি হিসাবে মনে করা হয়েছিল যতক্ষণ না ডঃ আনন্দ নিজেই ডঃ মুখোপাধ্যায়কে দেশে প্রথম টেস্টটিউব বেবি তৈরির কৃতিত্বের কথা জানান বা সামনে আনেন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.