যত দোষ নন্দ ঘোষ: কে এই অভাগা নন্দ ঘোষ?

ODD বাংলা ডেস্ক: বাংলায় প্রচলিত প্রবাদগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। যে যত দোষ করুক না কেন, সব নন্দ ঘোষের ঘাড়েই যায়! এ প্রবাদের সহজ অর্থ হচ্ছে, দুর্বল মানুষের ঘাড়ে দোষ চাপানো। আবার অনেকের মতে, সব দোষ ঘুরে-ফিরে একজনের ওপর দেয়া। যা-ই হোক, কিন্তু এ নন্দ ঘোষটা কে? কিংবা কেন তার ঘাড়ের ওপর সব দোষ পড়ে?

এ প্রবাদ মূলত একটি গল্প থেকে এসেছে। গল্পটি হিন্দু ধর্মানুসারীদের আরাধ্য বিশিষ্ট দেবতা কৃষ্ণকে ঘিরে। বাসুদেব কংসের হাত থেকে নিজের অষ্টম পুত্র কৃষ্ণকে রক্ষা করার জন্য বৃন্দাবনের ঘোষপল্লীতে নন্দ ঘোষের বাড়িতে রেখে আসেন বাসুদেব। নন্দ ঘোষ কৃষ্ণকে পুত্রস্নেহে পালন করেন। নন্দ পত্নী যশোদাও খুব স্নেহ করতেন।

জানা যায়, কৃষ্ণ ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব দুরন্ত ছিলেন। কখনো লোকের বাড়ি থেকে মাখন-ননী চুরি করে খেয়ে নিচ্ছে, কিংবা হয়তো সরোবরে স্নান করতে নামা নারীদের পোশাক লুকিয়ে ফেলছে। এভাবে তো বৃন্দাবনবাসীর ঘুম হারাম করে দিচ্ছিল ছোট্ট নন্দলাল। তাই গ্রামের সবাই এসে নন্দ ঘোষের কাছে নালিশ জানাতো। বিচারের বদলে কৃষ্ণকে আদর করতেন তিনি। তখন সব ক্ষোভ গিয়ে পড়ত নন্দ ঘোষের উপর।

নন্দ ঘোষের ওপর মানুষের চড়াও হওয়ারও কারণ আছে। সবাই মনে করতো, তার আসকারা পেয়েই কৃষ্ণ এসব কাণ্ড ঘটাতো। আর সেখান থেকেই এল ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’।

বিষ্ণুপুরাণ বা মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার কাহিনী তেমন ভাবে না থাকলেও; ভক্তদের লেখা ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণের ননী-মাখন চুরি ও দুষ্টুমির কথা লেখা আছে। এসব ঘটনা থেকেই এ প্রবাদের সৃষ্টি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.