দুষ্প্রাপ্য এক ফুল, ওষুধিগুণে ভরপুর

ODD বাংলা ডেস্ক: হলুদ রঙের একটি ফুল। দেখলেই ফুলটির দিকে তাকিয়ে থাকতেই যেন ইচ্ছে হয়! এই ফুলটির পোশাকি নাম কালাকস্তুরি বা মুশকদানা। 

আগে কিছুটা সহজলভ্য থাকলেও এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে এই ফুলের গাছ। বসবাসের ক্ষেত্রে সমতল বা অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানই পছন্দ। সাধারণত পথের ধারে এবং মিশ্র চিরসবুজ বনে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। 

গাছ বর্ষজীবী, রোমশ ও ঝোপজাতীয়। পাতা ৩ থেকে ৫ লতিযুক্ত। ফুল হলুদ রঙের, মুক্ত, গভীর শিরাযুক্ত ও অসমান পাপড়ি সংখ্যা পাঁচ, বৃত্তে মেরুন রঙের গোলাকার ছাপ। 

এর বীজতেল সুগন্ধি হওয়ায় একসময় কস্তুরি বা মৃগনাভির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই ফুল। এ কারণেই এমন নামকরণ। এর ফল দেখতে ঢ্যাঁড়শের মতোই, বীজ মিষ্টি স্বাদের, পাতা ও অগ্রক সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। 

কালাকস্তুরি আগাগোড়া ওষুধিগুণে ভরা। প্রাচীনকাল থেকেই নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। জন্মস্থান ভারত-বাংলাদেশ। কার্তিক মাস হতে শুরু করে বৈশাখ মাস পর্যন্ত এই গাছে ফুল ফোটে। 

ওষুধিগুণে ভরপুর এই লতা কস্তুরি গাছের ব্যবহৃত অংশ হলো বীজ। বিভিন্ন রোগে এর বীজ বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয় যেমন-

১. অনেকসময় একনাগারে বেশি পরিশ্রম বা কাজ করলে শরীরে ক্লান্তি আসে। এই ক্লান্তি ভাব দূর করতে হলে কস্তুরি গাছের ১০-১৫টি বীজ পানি দিয়ে বেটে চিনি মিশিয়ে শরবতের মতো ২-৩ দিন খেলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয়।

২. বদ হজমের কারণে কারো পেট ফেঁপে গেলেও এর বীজ বিশেষ উপকারী। এজন্য বীজ গুঁড়ো করে অল্প গরম জলে গুলিয়ে নিয়ে ২ চামচ পরিমাণ খেলে পেট ফাঁপা ভালো হয় এবং খাবারে রুচি হয়।

৩. মুখের বিভিন্ন অসুখে- দাঁতের গোড়া ফোলা, মুখে দুর্গন্ধ এবং জিহ্বায় ঘা হওয়া, ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা এ সবই মুখের ভেতরের বিভিন্ন রোগ। এসব সমস্যা দূর করার জন্য লতা কস্তুরির বীজ আন্দাজ মতো নিয়ে থেঁতো করেনিন।

এরপর আধা কাপ গরম জলে কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ওই জল মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। তারপর কুলি করতে হবে। ৩-৪ দিন এরকম করলে মুখের উপরোক্ত রোগ ভালো হয়। আবার এই জল খেলেও উপকার পাওয়া যায়।

৪. চোখে অনেক রকমের অসুখ হয়। তবে সাধারণভাবে ঝাপসা দেখা, জল ঝরা, চোখ ফুলে যাওয়া, টনটন করা এসব রোগের বেলায় কস্তুরি বীজ অধিক কাজ দেয়। 

২০-২৫টি বীজ জল দিয়ে বেটে, ৩-৪ চামচ জল দিয়ে গুলে সেই জল ছেঁকে নিয়ে একটা বোতলে ভরে রাখতে হবে। তারপর সেই জল দিনে দু’বার করে চোখে ফোঁটা ফোঁটা করে দিতে হবে। দু’দিন ব্যবহার করলেই চোখের এ সব রোগ ভালো হয়।

লতা কস্তুরি নামক ওষুধি গাছটি বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। এই গাছ অনেকে চেনে না এবং নামও জানে না। কদাচিৎ এই গাছের দেখা মিলে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.