সাপের আশ্রম, সন্ন্যাসীদের কোলে পিঠে চড়ছে অবলীলায়
ODD বাংলা ডেস্ক: পুরো আশ্রমের সর্বত্রই ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশালাকার সাপ। কখনোবা সেগুলো সন্ন্যাসীদের কোলে উঠছে তো আবার পিঠ বেয়ে নিচে নামছে। এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে মায়ানমারের এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর আশ্রমে। এই আশ্রমটি অন্য সব আশ্রম থেকে যেন আলাদা।
এই আশ্রমটি সর্পাশ্রম নামেই বেশি পরিচিত। আশ্রমে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে বাস করে পাইথন, কোবরা বা অন্য বিষধর সাপ। সন্ন্যাসীরাও সাপেদেরকে সারাদিন যত্ন-আত্তি করছে। তারা পরম স্নেহে আগলে রেখেছে বিষধর সাপেদের।
জীবজন্তু চোরাচালানের ক্ষেত্রে মায়ানমার বিশ্বের অন্যতম বড় ঘাঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখান থেকে পাশের দেশ চীন ও থাইল্যান্ডে প্রচুর পরিমাণে সাপ বা অন্য জীবজন্তু চোরাপথে পাচার হয়ে থাকে। আর তারই মাঝে ‘সেইকটা থুক্খা টেটু’ আশ্রম এখন যেন সাপেদের জন্য স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে।
৬৯ বছরের উইলাথা এই আশ্রমের একজন সন্ন্যাসী। তার মতে, এই সাপগুলো হয় মানুষের হাতে মারা পড়ত আর না হলে কালোবাজারে বিক্রি হয়ে যেত। আগে এলাকায় কোনো সাপ ধরা পড়লে মানুষ তাদের মেরেই ফেলতেন বা বিক্রি করে দিতেন। তবে সাধারণ মানুষ অথবা সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার হাতে কোনো সাপ ধরা পড়লে এখন তারা আশ্রমে দিয়ে যান।
এই আশ্রমের উদ্যোগ দেখে অনেকে শিহরিত হচ্ছেন। সেইসঙ্গে প্রশংসাও ছড়াচ্ছেন। কারণ প্রাণীদের প্রতি সহমর্মিতা দেখালে তারাও মানুষের প্রতি সদয় হয়। এই আশ্রমের বিষধর সাপগুলো সেটাই প্রমাণ করে। তারা যেভাবে আশ্রমে মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছে এমন দৃষ্টান্ত বিরল।
ধরা পড়ার পর এখানে সাপগুলোকে কিছু দিন রেখে দেয়া হয়। সময় মতো তাদের আবার প্রকৃত বাসস্থল জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়। সাপেদের জন্য পাঁচ বছর আগে আশ্রমের দরজা খুলে দেয়া হয়েছিল। সেই থেকে কয়েক হাজার সাপ উদ্ধার করে জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। তবে উইলাথা জানিয়েছেন, তিনি ভয় পান আবার এই সাপগুলো না কারও হাতে ধরা পড়ে যায়।
সাপগুলোকে খাওয়ানোর জন্য মাসে প্রায় ৩০০ ডলার পর্যন্ত অনুদান পায় আশ্রম। মাছ, দুধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবার খাওয়ানো হয় সাপেদের। সাপগুলোকে সেবা-শুশ্রুষা করে সুস্থ করে তোলেন সন্ন্যাসীরা। তারপর সুস্থ সাপগুলোকে আবারো জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়।
Post a Comment