জন্মাষ্টমীর দিন পালিত হয় দহি-হান্ডি, এর নেপথ্যেও রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি, জানতেন কি
ODD বাংলা ডেস্ক: জন্মাষ্টমী হিন্দু ধর্মে পালিত একটি উৎসব। আর এই উৎসবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে দহি হান্ডি, যা জন্মাষ্টমীতে পালন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মজার রীতি। বাঙালিদের মধ্যে এই রীতির খুব একটা প্রচলন না থাকলেও অবাঙালিদের মধ্যে এই রীতি ভক্তিভরে এবং আনন্দ সহকারে পালিত হয়।
বসুদেব শ্রীকৃষ্ণকে বৃন্দাবনে রেখে এলে সে যশোদা এবং নন্দের ছত্রছায়া বেড়ে উঠতে থাকে। বাল্যকালে শ্রীকৃষ্ণ একদিকে যেমন খুব দুষ্টু, অন্যদিকে সবার চোখের মণি ছিলেন। বাল গোপাল মাখন, দই-দুধ খেতে খুব ভালোবাসলেও, মাখনই ছিল তার সবথেকে প্রিয়। তিনি তার সখা অর্থাৎ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সারা গোকুল জুড়ে সবার বাড়িতে মাখন চুরি করে খেতেন। এই কারণে তাকে 'মাখন চোর'ও বলা হয়ে থাকে।
পূরানের কাহিনি অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণ সকল গোপীদের মাখন চুরি করে খেয়ে নিতেন। শ্রীকৃষ্ণ সব মাখন খেয়ে নিলে গোপীদের কাছে বাজারে গিয়ে মাখন বিক্রি করে অর্থ অর্জন করার মতো কিছুই পড়ে থাকত না। তাই গোকুলের সব ঘরে ঘরে মাখনের হাঁড়িকে উপরে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হত। যাতে শ্রীকৃষ্ণ মাখন চুরি করতে না পারে।
কিন্তু তাতেও গোকুল বাসীর খুব একটা লাভ হত না। কারণ শ্রীকৃষ্ণ তার বন্ধুদের সঙ্গে বুদ্ধি করে ঠিক মাখন চুরি করে খেয়ে নিত। তিনি প্রথমে বন্ধুদের দিয়ে একটি পিরামিডের মতো বানিয়ে নিতেন এবং সবার উপরে থাকতেন তিনি নিজে। কখনও হাঁড়ি নামিয়ে কখনও বা হাঁড়ি ফাটিয়ে মাখন চুরি করে খেতেন।
তাই জন্মাষ্টমীর দিন এই দহি হান্ডির উৎসব পালন করা হয়। জন্মাষ্টমীর দিন প্রায় নয়টি সারি করে ছেলেরা একজনের উপর একজন দাঁড়িয়ে পিরামিডের মতো তৈরি করে এবং সবার উপর একজন ছোটো বাচ্চা থাকে যে হাঁড়ি ভেঙে মাখন চুরি করে। এই পিরামিড অনেক সময় ২০ ফুট পর্যন্ত উচুও হয়। এইভাবেই জন্মাষ্টমীর দিন হই-হুল্লোড় করে দহিহান্ডি উৎসব পালিত হয়।।
Post a Comment