গল্ফ খেলার মাঠ, হয়ে গেল ওপেন এয়ার মিউজিয়াম



 ODD বাংলা ডেস্ক: ৩০০ একর জায়গা জুড়ে সুবিশাল এক আউটডোর মিউজিয়াম। মিউজিয়ামটি দেখলে চমকে যেতে হয়। আউটডোর মিউজিয়ামটির আয়তনে প্রায় ২২৭টি ফুটবল খেলার মাঠের সমান! ১১৬টি রেপ্লিকা ও মডেল সহ এশিয়ার সব বিখ্যাত স্মৃতিসৌধ রয়েছে সেই মিউজিয়ামেই। ব্যাংককের অন্যতম এই মিউজিয়াম সারা বিশ্বের পর্যটকদের দুরন্ত এক আকর্ষণ।


মিউজিয়ামের নাম ‘মুয়াং বোরান’। যার অর্থ প্রাচীন নগরী। এখানে গড়ে ওঠা মিউজিয়ামটির প্রাথমিক ও মূল আইডিয়া ছিল এক কোটিপতি ব্যবসায়ীর। নাম তার লেক ভিরিয়াফান। তিনিই ব্যাংককের ইরাওয়ান মিউজিয়াম এবং পাটায়ার বিখ্যাত স্যাচুয়ারি অফ ট্রুথের কাজের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। ১৯৬৩ সালে প্রথম এই জায়গাটি কিনেছিলেন লেক। তখন তার লক্ষ্য ছিল ঐ অঞ্চলে একটি গল্ফ কোর্স বানাবেন। তিনি ঠিক করেছিলেন সেই গল্ফের মাঠের সৌন্দর্যায়নের জন্যই থাইল্যান্ডের বিখ্যাত সব ল্যান্ডমার্কগুলোর রেপ্লিকা রাখবেন।


সেইমতোই কাজ শুরু হয়েছিল সাজানোর। গল্ফ মাঠও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সৌন্দর্যায়নের বহর বাড়তে বাড়তে আদতে তা পরিণত হলো দারুণ এক আকর্ষণীয় পর্যটনের! সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবেও বিবেচিত হতে শুরু করল জায়গাটি। এরপর মিউজিয়াম এক্সপার্টদের সাহায্য নেন লেক। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শিল্পী ও আর্কিটেকচারের ছাত্রদের আইডিয়া সংগ্রহ করে লেক। শুরু করলেন তার স্বপ্নের ‘মুয়াং বোরান’ নির্মাণ। এই বিশাল মিউজিয়ামটি চার ভাগে বিভক্ত। 


১৮০৬ সালে ব্যাংককের রয়্যাল প্যালেসে রাজা প্রথম রামার তৈরি অডিয়েন্স হল, দুসিত মহা প্রসাত প্যালেস, প্রাচীন সুখতাই শহরের গ্র্যান্ড হল অফ ওয়াট মহা থট, প্যাভিলিয়ন অফ দ্য এনলাইটেন্ড যা একটি সোনায় মোড়া মন্দির এবং যেখানে ৫০০ জন ভিন্ন ধর্মের সন্ন্যাসীরা নির্বাণ লাভ করেছিলেন। এখানের পার্কটি তৈরি হয়েছে থাইল্যান্ডের খামের সাম্রাজ্যের বিভিন্ন নিদর্শন দিয়ে। 


দ্বাদশ শতকে কম্বোডিয়াতে আঙ্করভাট মন্দির নির্মাণের জন্য খামের সাম্রাজ্য স্মরণীয়। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় পরিকাঠামো এবং ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃত একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটও। আরো রয়েছে আয়ুথ্যায়ার সনফেত প্রসাত প্যালেস, শিবকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নয় শতকের একটি মন্দির এবং একাধিক বিশেষ বিশেষ সৌধের মিনিয়েচর ভার্সন। 


এছাড়াও পার্ক জুড়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সব প্যাভিলিয়ন, স্তূপ, লেক, দ্বীপ যা সেতু আর প্ল্যাটফর্ম পার করে করে ঘুরে দেখতে যেতে হয়। রয়েছে একটি ভাসমান বাজার, যেখানে ট্র্যাডিশনাল লংটেল বোটগুলো সরু সরু ক্যানেল পার করে একাধিক পুরোনো দোকান দেখাতে নিয়ে যায়। সেসব দোকান থেকে সংগ্রহ করা যায় স্যুভেনির, শো পিস, চাবির রিং ইত্যাদি। এত বড় মিউজিয়াম ঘুরতে ভেতরে রয়েছে গাড়ি, মোটরবাইকের ব্যবস্থা। বস্তুত, একদিনে পুরো মিউজিয়াম ঘুরে দেখাই সম্ভব নয়। অনেকেই বলেন, মিউজিয়াম ঘুরলেই পুরো থাইল্যান্ড ঘোরা হয়ে যায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.