মনোবাসনা পূরণ করতে উল্টো হয়ে পাথরে চুমু!
ODD বাংলা ডেস্ক: মনোবাসনা পূর্ণ করতে কতো কিছুই না করেন। সেতুর দেয়ালে তালা লাগিয়ে চাবি ফেলে দিতে হয় জলে। মনের ইচ্ছা পূরণ কিংবা প্রিয় মানুষকে পেতে অনেকেই করেন এমনটা। এটি দেখা যায় ফ্রান্সের প্যারিসের একটি সেতুতে। আবার অনেকে গাছে জুতা বাঁধেন মনোবাসনা পূরণ করতে। তবে এতে কতটা ফল মিলবে বা মিলেছে তার কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই।
আয়ারল্যান্ডের মনোবাসনা পূরণ করার পাথরের কথা জানেন কি? এই পাথরে চুমু খেলেই পূরণ হবে আপনার মনের ইচ্ছা। তবে সোজা হয়ে নয় চুমু খেতে হবে উল্টো হয়ে। বিস্ময়কর এক পাথর রয়েছে আয়ারল্যান্ডের কর্ক কাউন্টিতে। ব্লার্নি ক্যাসেলের এ পাথরটি রহস্যে ঘেরা। পাথরটিকে চুমু দিলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়, এমনটাই বিশ্বাস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকদের। কয়েকজন গাইড আছেন, যারা আপনাকে ধরে রাখবে উল্টো হয়ে পাথরে চুমু দেয়ার সময়।
পৌরাণিক কাহিনী আর কিংবদন্তীর অন্যতম এক দেশ আয়ারল্যান্ড। প্রায় ৫৭৪ বছর আগে নির্মিত এই প্রাসাদটির উপরিভাগের দেয়ালের নীচে বিস্ময়কর পাথরটি স্থাপন করা হয়েছিল। ১৪৪৬ সালে কর্ক লেইডির এই প্রাসাদের কাজ শুরু করেছিলেন। সম্ভবত ১৪৮০ সালে করম্যাকের ভাই ইওহান এই প্রাসাদের কাজ শেষ করেন। প্রাসাদটি রাস্তা থেকে প্রায় একতলা উঁচুতে নির্মিত। এটি উচ্চতা প্রায় পাঁচতলা পর্যন্ত। দুর্হের বাইরে একসময় একটি সুরক্ষা প্রাচীর ছিল। কথিত আছে ১৩১৪ সালে ব্যানকবার্নে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়তে রবার্ট ব্রুসের সহায়তায় যখন মুনস্টারের রাজা করম্যাক ম্যাকাথি ৫ হাজার লোক পাঠিয়েছিলেন, তখন কৃতজ্ঞতাস্বরুপ স্কটিশরা পাথরটির একটি অংশ আয়ারল্যান্ডকে দিয়েছিল।
১৬ কিংবা ১৭ শতাব্দীর দিকে এই প্রাসাদের সংস্করণ করা হয়। সেসময় এখানে বেশির বাড়ি বা দুর্গ নির্মিত হয়েছিল কাঠ দিয়ে। তবে এই জায়গাটি বেশি পরিচিটি পায় এই পাথরের কারণেই। কবে থেকে মানুষের মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মে তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। সারা বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে আসেন। পাথরে চুমু খান মনের ইচ্ছা পূরণের আশায়। যদিও করোনার কারণে দর্শনীয় এ স্থানটিতে আগের মতো এখন পর্যটক নেই। ইচ্ছা পূরণ হোক না হোক, ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবেও এ পাথরের মূল্য কম নয়।
চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন ব্লার্নি ক্যাসেল থেকে। সেখানে গেলে এই পাথরে একবার চুমু দিতে ভুলবেন না কিন্তু। আপনার মনের ইচ্ছা পূরণ হোক বা না হোক, ইতিহাসের সাক্ষী তো হবেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকেরা মনের ইচ্ছা পূরণে এখানে আসেন। উল্টো হয়ে পাথরে চুমুও দেন। আবার সেসবের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভোলেন না একেবারেই।
Post a Comment