‘প্যাসিফিক সলিউশন’ কী?

 


ODD বাংলা ডেস্ক: 'প্যাসিফিক সলিউশন' অস্ট্রেলিয়ান একটি নীতি। ২০০১ সালে শত শত আফগান ও ইরান শরণার্থী নিয়ে অনেকগুলো নৌকা এসে ভিড়েছিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ নাউরুতে। এ ঘটনা থেকেই শুরু হয় 'প্যাসিফিক সলিউশন' নামে অস্ট্রেলিয়ান নীতির। এর মূল কথা ছিল সেদেশে আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের আবেদনের কোনো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের অস্ট্রেলিয়ার মূলভূমির বাইরে কোনো দ্বীপে আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে দেয়া ।


উদ্দেশ্য ছিল যাতে অস্ট্রেলিয়ায় যাবার চেষ্টা থেকে অভিবাসীরা নিরুৎসাহিত হয়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় নাউরু দ্বীপে প্রথম এসে পৌছয় প্রায় একশ আফগান শরণার্থী। একটি নরওয়েজিয়ান জাহাজে করে আসা এই শরণার্থীরা প্রায় এক মাস সাগরে ভাসছিল। অস্ট্রেলিয়া তাদেরকে সে দেশে ঢুকতে দেয়নি। তাদের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নাউরু দ্বীপ তাদের আশ্রয় দিতে রাজি হয়। এই আশ্রয়প্রার্থীরা নাউরু দ্বীপে প্রথম পা রাখে ২০০১ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর।


তাদেরকে স্থানীয় লোকেরা স্বাগত জানায়। স্বাগত জানিয়ে ঐতিহ্যবাহী নাচও পরিবেশন করা হয়। কাউকে কাউকে দেয়া হয় ফুল। আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে আসা এই অভিবাসীরা যখন অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে নামছে - তখন তাদের বেশ বিভ্রান্ত দেখাচ্ছিল। এই লোকেরা ইন্দোনেশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসার চেষ্টা করেছিল একটি মাছধরার নৌকায় চড়ে। একটি নরওয়েজিয়ান জাহাজ বিপদাপন্ন অবস্থায় তাদের সাগর থেকে উদ্ধার করে।


নাউরু দ্বীপে যে অভিবাসীরা প্রথম পা রেখেছিলেন তাদের একজনের নাম ইয়াহিয়া। অবশ্য এটা তার আসল নাম নয়। শরণার্থীদের তোলা হয় একটি পুরনো স্কুল বাসে। তারপর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় একটি শিবিরে। সেখানে ছিল সবুজ রঙের তাঁবু - যেগুলো সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। তাঁবুগুলোর চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া।


প্যাসিফিক সলিউশনের বিষয়টি আইনে পরিণত হলো ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে। এতে বলা হয় - কোন আশ্রয়প্রার্থীকে অস্ট্রেলিয়ায় ঢোকার চেষ্টার সময় পাওয়া গেলে - তার অ্যাসাইলামের আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত - তাকে অন্য একটি দেশে রাখা হবে। অস্ট্রেলিয়ায় কেউ অবৈধ পথে আসতে চাইলে তাকে নিরুৎসাহিত করতেই এ আইন করা হয়েছিল। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.