বোরোলীনের প্যাকেটে কেন দশকের পর দশক ধরে হাতির ছবি? সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য



ODD বাংলা ডেস্ক: দীর্ঘ প্রায় ৮ দশকেরও বেশি সময় ধরে বোরোলিনের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে একটি হাতি। বাঙালির প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে এই ‘হাতি’ লোগোটির সম্পর্ক কী?


 ‘বোরোলীন, বঙ্গ জীবনের অঙ্গ’, সার্থক শিরোনাম দিয়েছিলেন বাঙালি পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। বাংলায় এমন মানুষ হয়তো খুজে পাওয়া কঠিন যিনি 'বোরোলীন' নামটা শোনেনি। গত প্রায় ৯ দশক ধরে আজও একই ভাবে জনপ্রিয় বোরোলীন। কন্নড়রা এটি ব্যবহার করেছিল সূর্যের কঠোর তাপ থেকে বাঁচতে। আবার কাশ্মীরিরা ব্যবহার করেছিল বরফের কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে।  এই বিস্ময়কর প্রসাধনীটি সমস্ত বয়সের মানুষের সমস্ত ধরনের ত্বকের সমস্যার সমাধান করে এসেছে।



ব্যবহারকারীরা সকলেই হয়তো লক্ষ্য করেছেন বোরোলীনের মোড়কে হাতির ছাপওয়ালা লোগো, কিন্তু জানেন কি, কেন বোরোলীনের লোগোতে হাতির ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল? হাতি হল শক্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক, বোরোলীনের নির্মাতা এতটাই দৃঢ় ছিলেন যে, তাঁর বিশ্বাস ছিল, পরবর্তীকালে হাজার কম্পানী এলেও, এর জায়গা কেউ নড়াতে পারবে না। আর সত্যিই তাই। আজ পর্যন্ত দ্বিতীয় কোনও পণ্য বোরোলিনের স্থান কেড়ে নিতে পারেনি।


১৯২৯ সালে গৌরমোহন দত্তের হাত ধরে কলকাতায় জন্ম নেয় জি.ডি. ফার্মাসিটিক্যালস। বোরোলিন বাজারে আসতেই বিপুল জনপ্রিয়তা পায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। ক্ষুব্ধ ব্রিটিশ প্রশাসন বহু প্রচেষ্টা চালায় বোরোলিনের উৎপাদন  বন্ধ করতে, কিন্তু মানুষের জনপ্রিয়তায় দৃঢ়ভাবে টিকে থাকে বোরোলীন। কোন রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই বোরোলিন ঢুকে পড়ে বাঙালির ঘরের অন্দরে। গত ৯১ বছর ধরে একই গুনমানের সাথে ত্বকের সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে আসছে বোরোলীন।


১৯৪৭ সালে ১৫ই অগাস্ট ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা হবার পর বোরোলীন নির্মাতা পরের দিন প্রত্যেককে বিনামূল্যে একটি করে বোরোলীন দেবার বিজ্ঞপ্তি দেন। উল্লেখ্য এটাই যে, নিজের সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন বোরোলীনের কর্ণধার গৌরমোহন দত্ত।


৮ দশকেরও বেশি সময় ধরে হাতি লোগোটি বোরোলিনের পরিচয় বয়ে নিয়ে চলেছে। বহু রাজ্যে একে 'হাথিওয়ালা ক্রিম' (হাতিওয়ালা ক্রিম) নামেও ডাকা হয়। প্রকৃতপক্ষে এইভাবেই পৃথিবীর সমস্ত দুর্দান্ত ব্র্যান্ডগুলি তৈরি হয়। প্রথমে নির্দিষ্ট একটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে শুরু হয় এবং তারপর ধারাবাহিক ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে একটি সমাজ, একটি জাতির সম্পূর্ণ সাংস্কৃতিক কাঠামো আর দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়ে যায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.