গণেশ পুজোর পূর্বে জেনে নিন ভগবান গণেশের আটটি অবতার প্রসঙ্গে, রইল কাহিনি


 

ODD বাংলা ডেস্ক: কোথাও চলছে প্যান্ডেল তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ, কোথাও চলছে লাইটের কাজ তো কোথাও দেব মূর্তি আনার কাজে ব্যস্ত সকলে। রাত পোহালেই গণেশ চতুর্থী। গণেশ চতুর্থীঅর্থাৎ ভাদ্র শুক্ল চতুর্থী তিথি শুরু হচ্ছে ৩০ অগস্ট। এই দিন দুপুর ৩টে ৩৪ মিনিট থেকে শুরু হবে শুভ সময়। চলবে ৩১ অগস্ট দুপুর ৩টে ২৩ মিনিট পর্যন্ত। সে কারণে অধিকাংশ জায়গায় ৩১ তারিখ পুজিত হবেন ভগবান গণেশ। আবার কোথাও কোথাও এক সপ্তাহ ধরে চলে উৎসব। কোথাওবা চলে ৩ দিন, কোথাও আবার সাত দিন ধরে চলে উৎসব। গণেশ চতুর্থীর প্রাক্কালে জেনে নিন ভগবান গণেশের আট অবতার প্রসঙ্গে। দেখে নিন তিনি কোন কোন রূপে পুজিত হন।  


বক্রতুন্ডা- ভগবান গণেশের প্রথম অবতার হব বক্রতুন্ডা। রাক্ষস মতসারকে বশ করতে ও তিন জগতের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে ভগবান গণেশ এই অবতার ধারণ করেছিলেন। এবছর ৩১ অগস্ট পালিত হবে গণেশ পুজো। বুধবার ভাদ্র শুক্ল চতুর্থী তিথিতে পুজিত হবেন সিদ্ধিদাতা গণেশ। 


একদন্ত- এক মানে মায়া আর দন্ত মানে সত্য। একদন্ত নামে পরিচিত ভগবান গণেশ। একদন্ত দ্বিতীয় অবতার। পরম সত্যেক প্রতীক তিনি। এই রূপে পুজিত হন তিনি। শাস্ত্র মতে, গণেশ চতুর্থী বা ভাদ্র শুক্ল চতুর্থী তিথি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিন দুপুরের সময় গণেশের জন্ম হয়েছিল। 


মহোদারা- মহোদারা হল ভগবান গণেশের তৃতীয় অবতার যিনি সমস্ত পাপের ক্ষমার প্রতীক। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, মহোদার ভ্রমের রাক্ষস, মহসুরার মুখোমুখি হয়েছিল এবং তাঁকে সমস্ত পাপের জন্য ক্ষমা করেন তিনি। তারপর তাঁকে পাতাল লোকে ফেরত পাঠান। হিন্দু শাস্ত্রে ভগবান গণেশের মহিমা বিস্তর। সে কারণে প্রতি বছর এই তিথিটি সর্বত্র সাড়ম্বরে গণেশের জন্মোৎসব হিসেবে পালিত হয়।


লম্বোদরা- ক্রোধের রাক্ষস ক্রোধাসুরের সঙ্গে লড়াই করার জন্য লম্বোদরার অবতার গ্রহণ করেছিলেন গণেশ। গণেশের এই অবতারটি ক্রোধকে বেঁধে রাখা এবং বিশ্বকে তা থেকে মুক্ত করার জন্য দাঁড়িয়েছে। গণেশ চতুর্থী গল ভগবান গণেশের জন্মোৎসব। এবছর গণেশ চতুর্থীতে রয়েছে শুভ যোগ। ৩১ অগস্ট সকাল ৬টা ৬ মিনিট থেকে ১ সেপ্টেম্বর ১২টা ১২ মিনিট পর্যন্ত চলবে রবি যোগ।


বিকটা- ভগবান গণেশের এই অবতারটি সমস্ত দেব দেবীদের অনেক প্রার্থনার পর আবির্ভূত হয়েছি। তিনি ভগবান বিষ্ণুর বীজ থেকে জন্ম নিয়েছিলেন। রাক্ষস কামসুরকে দমন করেছিলেন। হিন্দু শাস্ত্রে, ভগবান গণেশের মহিমা বিস্তর। কথিত আছে, তিনি ভক্তদের জীবনের জটিলতা সমাধানে একাধিকবার মর্তে আসেন।


বিঘ্নরাজ- ভগবান গণেশের অন্যতম জনপ্রিয় অবতার, বিঘ্নরাজ সমস্ত বাধা দূরকারী হিসেবে পরিচিত। ভগবান গণেশ, এই অবতারে বিশ্বাস করা হয় যে আমাদের সাফল্যের পথে নিয়ে যায়। শাস্ত্র মতে, এই সময় দেবতার আরাধনা করলে জীবনের সকল অশান্তি দূর হবে। তাই এই বছর নিষ্ঠার সঙ্গে দেবতার আরাধনা করুন।


ধূমরাবন- ভগবান গণেশের এই অবতার আত্ম মোহের রাক্ষস অহমকারাসুরকে পরাজিত করেছিলেন। এবছর গণেশ চতুর্থীতে নিষ্ঠা ভরে পুজো করুন। গণেশ পুজোর দিন সকালে স্নান সেরে মন্দিরে প্রদীপ জ্বালান। পুজো ও ব্রত সংকল্প নিন। এই দিন শুভ সময় গণেশের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করুন। তবে, গণেশের মূর্তি স্থাপনের আগে সেই স্থানে গঙ্গা জল দিন। প্রতিমা অভিষেক করুন।


গজানন- হস্তিমুখ ও মানব শরীর এই অবতারে জন্মগ্রহণ করেন ভগবান গণেশ। তিনি এই রূপেই লোভাসুরকে দমন করেছিলেন। লোভাসুরের অত্যাচারে জর্জরিত দেবতারা গণেশ বন্দনা করেন। শ্রী বিষ্ণু দেবতাদের দূর তবে তিনি অসুরের সঙ্গে সাক্ষাত যুদ্ধ করেন। অসুর তাঁর কাছে আত্ম সমর্পন করেছিল। গজানন রূপে অনেক জায়গায় পুজিত হন ভগবান গণেশ। 


হিন্দু শাস্ত্রে ১৩৩ কোটি দেবতার উল্লেখ আছে। সকল শক্তির পুজোর জন্য আলাদা আলাদা তিথির কথা আছে। নির্দিষ্ট তিথি ও দিন উৎসর্গ করা হয় দেবতাদের। কথিত আছে, সেই তিথিতে পুজো করলে সকল দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মেলে। সেই অনুসারে বুধবার দিনটি ভগবান গণেশকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তাঁর কৃপা পেতে এই দিন গণেশের পুজো করুন। 


এবছর ৩১ অগস্ট পালিত হবে গণেশ চতুর্থী। শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর সূচনা পর্ব। আর কদিন পরেই মা আসছেন। এই পুজোর সূচনা হয় গণেশ পুজো দিয়ে। আর এবার মাত্র কদিনেক অপেক্ষা। কদিন পরেই দেশবাসী মাতবেন গণেশের আরাধনায়। এবছর সকল নিয়ম মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে গণেশের আরাধনা করুন। মিলবে তাঁর কৃপা। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.