ভাই-বোন নয়, প্রথমে স্বামী-স্ত্রীর উত্‍সব ছিল রাখি বন্ধন! বলছে পুরাণ-কথা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: রাখি বন্ধন উত্‍সব পালিত হতে চলেছে আগামী ১১ অগাস্ট। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় ভাই ও বোনের এই প্রীতির উত্‍সব। এদিন বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখি বা রক্ষাসূত্র পরিয়ে তাঁর মঙ্গল কামনা করেন। আর ভাই বোনের হাতে উপহার তুলে দেন ও তাঁকে সারা জীবন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে বরাবর রাখি ভাই ও বোনের উত্‍সব ছিল না। বরং প্রথম যখন রাখির প্রচলন হয়, তখন এটি ছিল স্বামী ও স্ত্রী-র মধ্যে পালনীয় প্রথা। সেখান থেকে কী ভাবে রাখি ভাই-বোনের উত্‍সব হয়ে উঠল, তা নিয়েই এখন আলোচনা করব আমরা।


পুরাণে রাখি বন্ধন

রাখি বন্ধনের প্রচলন নিয়ে ভবিষ্যপুরাণে একটি আগ্রহজনক গল্পের কথা বলা আছে। সত্যযুগে বৃতাসুর নামে এক অসুর ছিল। দেবতাদের যুদ্ধে পরাজিত করে এই অসুর স্বর্গলোক দখল করে। বৃতাসুর বর পেয়েছিল যে কোনও অস্ত্রে তাকে ঘায়েল করা যাবে না। সেই কারণে বারবার চেষ্টা করেও দেবরাজ ইন্দ্র তাকে হারাতে পারেননি। তখন মহর্ষি দধিচি দেবতাদের জন্য নিজের শরীর দান করেন এবং তাঁর হাড় দিয়ে তৈরি হয় ইন্দ্রের অস্ত্র বজ্র।


বৃতাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার আগে ইন্দ্র তাঁর গুরু বৃহস্পতির কাছে যান। বৃহস্পতিকে তিনি বলেন যে এই শেষবার তিনি বৃতাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চলেছেন। এই যুদ্ধে হয় তাঁর জয় হবে, নয়তো পরাজয়। এই কথা শুনে ইন্দ্রের সুরক্ষা নিয়ে অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়েন ইন্দ্রাণী সচী। তিনি তাঁর সমস্ত সাধনার শক্তি একত্রিত করে একটি বিশেষ রক্ষাসূত্র তৈরি করেন। ইন্দ্রের সুরক্ষা কামনা করে এই সুতো তিনি দেবরাজের কবজিতে বেঁধে দেন। সেদিন ছিল শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা। এই যুদ্ধে বৃতাসুরকে হত্যা করে জয়ী হয়ে ফিরে আসেন দেবরাজ ইন্দ্র।


মহাভারতে রাখি বন্ধন


মহাভারতেও রাখি বন্ধনের কথা উল্লেখ আছে। দ্রৌপদী শ্রীকৃষ্ণের হাতে রাখি বেঁধেছিলেন। শিশুপালকে হত্যা করতে সুদর্শন চক্র ছুঁড়েছিলেন কৃষ্ণ। সেই সময় চক্রের আঘাতে তাঁর নিজের আঙুল কেটে যায়। কৃষ্ণের হাত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে নিজের শাড়ি ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন দ্রৌপদী। এর প্রতিদানে কৃষ্ণ তাঁকে সব সময় সব সংকট থেকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে বস্ত্রহরণের সময় দ্রৌপদীকে লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.