শিব পুজোর প্রসাদ কি খেতে নেই? সত্যি জানুন শিব পুরাণ থেকেই
ODD বাংলা ডেস্ক: শ্রাবণ মাসের আর কয়েকদিন অবশিষ্ট। শাস্ত্রে শ্রাবণ মাসে শিব পুরাণ পাঠের মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। শাস্ত্র মতে, যে ব্যক্তি শ্রাবণ মাসে শিব পুরাণ পাঠ করে, তাঁরা শিবের আশীর্বাদ লাভ করেন। এই মাসে আবার শিব পুজোর বিশেষ নিয়মনীতি প্রচলিত রয়েছে। তবে শিব পুজো করলেও অনেকেই শিবের নৈবেদ্য গ্রহণ করেন না। মনে করা হয় শিব পুজোর নৈবেদ্য গ্রহণ করতে নেই। তবে এই ধারণা কতটা সত্যি, সে সম্পর্কে শিব পুরাণে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
শিব পুরাণ অনুযায়ী কারা শিব নৈবেদ্য গ্রহণ করতে পারেন?\
১. এই পুরাণে সূত সমস্ত ঋষিমুনিদের বলেন যে, শিবের যে ভক্ত উত্তম ব্রত পালন করে এবং শুদ্ধ অর্থাৎ নিষ্কাম মনোভব শঙ্করের পূজার্চনা করেন, তাঁরা অবশ্যই শিব নৈবেদ্য ভক্ষণ করতে পারেন।
২. পুরাণ মতে নৈবেদ্য দর্শনমাত্রই ব্যক্তির পাপক্ষয় হতে শুরু করে। আবার এটি গ্রহণ করলে পুণ্য ফল লাভ করা যায়।
৩. শিব পুরাণ অনুযায়ী, শিবের পুজোর প্রসাদ খেলে শরীরে কোটি কোটি যজ্ঞের পুণ্য সমাহিত হয়।
৪. যে গৃহে শিবের নৈবেদ্য বিতরণ করা হয়, সেই গৃহ পবিত্র হয়ে যায়, পাশাপাশি অন্য সমস্ত ঘরকেও পবিত্র করে দেয়। তাই মাথা ঝুকিয়ে আনন্দ ও ভক্তির সঙ্গে এটি গ্রহণ করা উচিত।
৫. কিন্তু যে ব্যক্তি শিবের নৈবেদ্য নিতে বা খেতে বিলম্ব করে, সে পাপের অংশীদার হয়।
৬. শিবের দীক্ষা নিয়েছেন যে শিবভক্ত তাঁদের জন্য নৈবেদ্যই মহাপ্রসাদ।
শিব ছাড়া অন্য়ান্য দেব-দেবীর দীক্ষা নিয়েছেন যাঁরা তাঁরা কি এই নৈবেদ্য গ্রহণ করতে পারেন?
যে ব্যক্তিরা শিব ছাড়াও অন্য দেবতাদের দীক্ষা নিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কেও জানানো হয়েছে শিব পুরাণে ।
১. যেখান থেকে শালিগ্রাম শিলা উৎপন্ন হয়েছে, সেখানে উৎপন্ন লিঙ্গের মধ্যে রাসলিঙ্গ, পাষাণ, রজত ও সোনার দ্বারা তৈরি লিঙ্গ, দেবতা ও সিদ্ধপুরুষদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত লিঙ্গ, জাফরান, স্ফটিক, রত্ন নির্মিত লিঙ্গ ও সমস্ত জ্যোতির্লিঙ্গে বিরাজমান শিবের নৈবেদ্য গ্রহণ করলে চান্দ্রাযান ব্রতর সমান পুণ্য অর্জন করা যায়।
২. শিব নৈবেদ্য ভক্ষণ করলে ও তা মস্তকে ধারণ করলে ব্রহ্ম হত্যার পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেই ব্যক্তি পবিত্র হয়।
কখন প্রসাদ গ্রহণ করা উচিত নয়?
১. যেখানে চাণ্ডালের অধিকার রয়েছে, সেখানকার প্রসাদ ভক্তি-সহ গ্রহণ করা উচিত নয়।
২. বাণলিঙ্গ, লৌহ লিঙ্গ, সিদ্ধলিঙ্গ উপাসনা থেকে প্রাপ্ত অর্থাৎ সিদ্ধ দ্বারা স্থাপিত লিঙ্গ, স্বয়ম্ভূ লিঙ্গ এবং মূর্তির ওপর চণ্ডের অধিকার না-থাকলে, যে ব্যক্তি ভক্তি-সহ স্নান করে তার জল দিয়ে তিনবার আচমন করেন তাঁদের সমস্ত কায়িক, বাচিক ও মানসিক পাপ নষ্ট হয়ে যায়। যে বস্তু শিবকে অর্পণ করা হয়, তাঁকে অত্যন্ত পবিত্র।
Post a Comment