প্রেমিকার সঙ্গে চ্যাটিংয়েই বিপত্তি, যুবকের কাণ্ডে বিমান ছাড়লো ৬ ঘণ্টা পর
ODD বাংলা ডেস্ক: একটু পড়েই বিমান ছাড়ার কথা ছিল। বিমানের আসনে বসে প্রেমিকার সঙ্গে মোবাইলে চ্যাট করছিলেন এক যুবক। তাতে আড়ি পাতেন পাশের আসনে বসা সহযাত্রী। যেমন, বাসে-ট্রেনে হয়!
অন্যের ব্যক্তিগত চ্যাট দেখাকে কেউ কেউ এনজয় করেন। সে রকমই। কিন্তু এই চ্যাটে এমন কিছু শব্দ সেই সহযাত্রীর চোখে পড়ে, যাতে তার মনে হয়, বড়সড় বিপদ ঘটতে চলেছে। তখনই বিমান ক্রুদের গোপনে ব্যাপারটি জানান ঐ সহযাত্রী। এরপরই সব যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে পুরো বিমানে তল্লাশি চালানো হয়! সন্দেহজনক কিছু না পাওয়া গেলেও এই কারণেই ছয় ঘণ্টা দেরি হয় বিমান ছাড়তে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ম্যাঙ্গালুরু বিমানবন্দরে। রোববার বিকালে ম্যাঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইন্ডিগোর মুম্বইগামী একটি বিমানে উঠেছিলেন এক যুবক। বসেছিলেন ১৩এ আসনে। ছেড়ে যাওয়ার জন্য তখনো তৈরি হয়নি বিমানটি। মোবাইলে বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলছিলেন ঐ যুবক। বান্ধবীও তখন বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন। তিনিও বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বাই যাবেন বলে বিমান ধরার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মজার ছলে যুবক কথা বলছিলেন বান্ধবীর সঙ্গে। তখনই ১৪বি আসনে বসে থাকা এক নারী সহযাত্রীর চোখ যায় যুবকের মোবাইল স্ক্রিনের দিকে। সেই সময় যুবকের ফোনে একটি ম্যাসেজ আসে, ‘ইউ আর দ্য বম্বার।’ তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ঐ নারী। তার মনে হয়, পাশে ‘আত্মঘাতী জঙ্গি’ রয়েছে।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিমানের কেবিন ক্রু-এর নজরে আনেন বিষয়টি। খবর যায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, নিরাপত্তায় থাকা সিআইএসএফের কাছে। এরপর বিমানের সমস্ত যাত্রীকে নামিয়ে বিমানটিতে তল্লাশি চলানো হয়। সমস্ত যাত্রী ও তাদের সঙ্গে থাকা তল্পিতল্পা নতুন করে তল্লাশি হয়।
প্রেমিকার সঙ্গে চ্যাট করা যুবককে আটক করে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। বিমান সংস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫-এর ১বি এবং সি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। যুবককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে অবশ্য কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তারক্ষীরা সবদিক নিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়ার পর বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে ওই যুবককে আর বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, ওদিকে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে তার প্রেমিকাও মুম্বইগামী বিমান ধরতে পারেননি এই বিপত্তির জেরে।
এর আগে এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যেখানে বিমানের মধ্যে টিফিন বক্স বা ব্যাগ দেখে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারপরে তা নিয়ে বেঁধেছে তুমুল হুলস্থুল। তবে সন্দেহজনক কিছু না মিললে ফিরেছে স্বস্তি। কিন্তু পাশের আসনে বসা সহযাত্রীর মেসেজ দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে বিমান ছাড়তে ছয় ঘণ্টা দেরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন!
Post a Comment