‘সমুদ্রের সোনা’ এই মাছ, জালে জড়াতেই কোটিপতি জেলেরা
ODD বাংলা ডেস্ক: দামের জন্যই ‘সমুদ্রের সোনা’ বলা হয় এই মাছকে। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস’। ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া-এই সব দেশে এই মাছের চাহিদা খুব বেশি। অন্যান্য মাছের মতোই দেখতে, মুখের দিকে সোনালি আভার এই মাছ কেন এত দামি?
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পালঘরের ওই মৎস্যজীবীরা ১৫৭টি ঘোল মাছ পেয়েছেন। যা বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ৩৩লাখ টাকায়। মহারাষ্ট্রের পালঘরের কয়েক জন মৎস্যজীবী সম্প্রতি সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাদের জালে বেশ কিছু ঘোল মাছ ওঠে। আর তা দিয়েই ভাগ্য বদলে যায় তাদের।
এই মাছের ঔষধি গুণ থাকাতেই এর মূল্য এত বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলো এই মাছ কিনে নেয়। তারপর এর দেহের প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই তৈরি হয় ওষুধ।
এই মাছের বায়ু পটকা দিয়ে বৃক্কের নানা রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি হয়। বিশেষ করে বৃক্কে পাথর জমলে,তা দূর করতে নাকি দারুণ উপকারী ঘোল মাছের পটকা থেকে উৎপন্ন ওষুধ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ওই মাছের হৃদয়। যে কারণে এ হৃদয়কে ‘সোনার হৃদয়’ও বলা হয়।
মাছের পাখনাও ফেলে দেওয়া যায় না। পাখনা দিয়েও নানা ওষুধ তৈরি হয় এবং দামি মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন রয়েছে এই সামুদ্রিক মাছে। অস্ত্রোপচারের পর দেহের সঙ্গে মিশে যাওয়া সেলাইয়ের সুতা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এই মাছের শরীরের অংশ।
এই মাছের দাম নির্ভর করে এর ওজন এবং মাছটি পুরুষ না স্ত্রী, তার উপর। একটি ৩০ কেজির পুরুষ ঘোলের দাম অন্তত চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। অন্যদিকে, একই ওজনের একটি স্ত্রী ঘোলের দাম অনেকটাই কম হয়। এক থেকে দু’লাখ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে। দেহের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার এবং কতটা পুরু তার উপরও নির্ভর করে দাম।
এর আগে ওড়িশায় সাড়ে ১৯ কেজির একটি ঘোল মাছ ধরা পড়েছিল। এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সেটি আট হাজার টাকা কেজিতে কিনে নেয়। তারপর ২০১৯ সালে ১০ কেজি ওজনের মাছ ধরা পড়েছিল জালে। সেটি বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ১০ হাজার টাকায়। ১৯ কেজির ওই মাছটিই এখনো পর্যন্ত ভারতে ধরা পড়া সবচেয়ে বড় ঘোল মাছ।
Post a Comment