যে জঙ্গলে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ, নারীরা যান পোশাক খুলে
ODD বাংলা ডেস্ক: শিরোনাম পড়েই রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে নিশ্চয়ই! এমনও জঙ্গল আছে না-কি বিশ্বে? সত্যিই এমন এক জঙ্গলের অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় টোনোটিওয়াট ম্যানগ্রোভে। খুবই সুন্দর এই ম্যানগ্রোভ বনটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এক স্থান।
জানা-অজানা অসংখ্য প্রজাতির গাছ, পশু-পাখিসহ ছোট ছোট খাল আছে এই জঙ্গলে। তবে এই জঙ্গলের বিশেষত্ব হলো নারীরা এখানে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারেন। কারণ টোনোটিওয়াট নামক এই জঙ্গলে চাইলেই যে কেউ প্রবেশ করতে পারে না।
পুরুষদের এই জঙ্গলে প্রবেশ নিষেধ। আর নারীরা ঢুকেন পোশাক খুলে নগ্ন হয়ে। টোনোটিওয়াট অর্থ হচ্ছে নারীদের অরণ্য। অবশ্য টোনোটিওয়াটের অর্থ ম্যানগ্রোভে স্বাগতও হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় এই ম্যানগ্রোভটি তাই নারীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় এক স্থান।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জয়পুরার ক্যামপাং এনগ্রোসের মাঝামাঝি ওই ম্যানগ্রোভ অরণ্যটি ছড়িয়ে আছে প্রায় ৮ হেক্টর এলাকা জুড়ে। জানা যায়, পাপুয়াবাসীর পছন্দের খাবার ঝিনুক এবং নানা রকম ফলের জোগান দেয় এই অরণ্য।
আর এসব খাবার ও ফল সংগ্রহ করতেই নারীরা পোশাক খুলে নগ্ন হয়ে ঢুকেন টোনোটিওয়াট বনে। জঙ্গল ও জলাভূমিতে তারা দল বেঁধে ঘুরে বেড়ান। জঙ্গলে প্রবেশের পর একত্রিত হয়ে শপথ নেন জঙ্গলে থাকাকালীন কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না।
সমুদ্র ঘেঁষা এ জঙ্গলের জলাভূমিতে নেমে ঝিনুক সংগ্রহ করেন নারীরা। কাদা-পানিতে পোশাক নষ্ট হওয়ার কারণেই হয়তো তারা নগ্ন হয়ে বনে ঢুকেন। তবে এই অদ্ভূত নিয়ম কবে চলমান তা জানেন না কেউ।
স্থানীয়দের মতে, তারাও মা-নানীর কাছ থেকে একই কাহিনী শুনে আসছেন। এ জঙ্গলের সঙ্গে স্থানীয়দের সখ্যতা ১৮০৮ সাল থেকে। আরও অবাক করা বিষয় হলো, এ বনে যতক্ষণ নারীরা থাকেন; তারা গলা ছেড়ে গান ধরেন। তাদের এই গান শুনেলে পুরুষরা টের পান জঙ্গলে নারীরা আছেন।
ভুল করে ঢুকে যাতে পুরুষরা জঙ্গলে ঢুকে না পড়েন সে কারণেই নারীরা তাদের সুমধুর কণ্ঠে গান গেয়ে ও কাজ করে সময় কাটান। যদি কোনো পুরুষ ভুলবশত ঢুকেও পড়েন, তবে তাকে জরিমানা বাবদ গুনতে হয় ১০ লাখ টাকা।
এই অরণ্যে পুরুষরা প্রবেশ করতে পারে শুধু কাঠ সংগ্রহের জন্য। তবে পুরুষরা চাইলেই প্রবেশ করতে পারবেন না। আগে তাদের নিশ্চিত হতে হয় যে জঙ্গলে কোনো নারী নেই। নারী থাকাকালীন পুরুষরা জঙ্গলে প্রবেশ করলে তার চরম শাস্তি ও জরিমানা নিশ্চিত করে উপজাতি আদালত।
Post a Comment