বৃষ্টির দিনেই খিচুড়ি কেন?

ODD বাংলা ডেস্ক: বৃষ্টির দিনে খিচুড়ির খেতে ইচ্ছে করে অনেকেরই। এ সময় খিচুড়ির স্বাদও যেন অনেকগুণ বেড়ে যায়। অতিথি পরায়ণ জাতি যেন এই উদাস বৃষ্টিতে বেশি করে কাছে পেতে চায় বন্ধুদের, অতিথিদের। বৃষ্টির দিনে অতিথি মানেই আপ্যায়নে থাকে খিচুড়ি। শুধু অতিথি নয়, বৃষ্টির দিনে পরিবারসহ খিচুড়ি খাওয়াতে যেন অন্য রকম অনুভূতি কাজ করে। আর সঙ্গে ইলিশ ভাজা হলে যেন ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হয়।
বাইরে বৃষ্টি,আর ঘরে যদি রান্না হয় খিচুড়ি! বেশ মজাই হবে তাহলে। কিন্তু বৃষ্টির দিনেই খিচুড়ি কেন?

প্রাচীনকাল থেকেই খিচুড়ি বেশি খেতেন বাউলরা। এক কথায় এটি মূলত বাউলদের খাবার হিসেবে পরিণত হয় তখন থেকেই। এই ছন্নছাড়া গানপাগল মানুষগুলো গান শুনিয়ে মানুষের বাড়িতে পেতেন চাল ও ডাল। তাই তারা এই চাল ডাল মিলিয়ে খুব দ্রুত ও ঝামেলাহীন রান্না করতেন খিচুড়ি। এর অন্য একটি কারণ হচ্ছে বৃষ্টির দিনের বেশিরভাগ সময়টুকু তারা সঙ্গীত চর্চায় ব্যয় করতেন। অন্যান্য সময় তারা ভিন্ন কোনো খাবার রান্না করলেও বৃষ্টির দিনে পেট পুজা করবার এই একটাই খাবার খিচুড়ি।

বৃষ্টিতে খিচুড়ি রান্নার অন্য একটি কারণও খুঁজে পাওয়া যায়। গ্রামাঞ্চলে রান্নাঘরগুলো প্রধান ঘরের বাইরে হওয়ায় ভিজে যেত চুলা। তাই সহজেই চাল ডাল ও সবজি মিলিয়ে খুব দ্রুতই খিচুড়ি রান্না করতেন গ্রামের নারীরা। এসব কারণেই বৃষ্টির দিনের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে খিচুড়ি সংস্কৃতি।

খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজার সংস্কৃতি এসেছে তারও একটা কারণ রয়েছে। বৃষ্টির সময়ে নদীর তাজা ইলিশ মেলে। এ কারণে খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা জড়িয়ে গেছে।

আবার গরমকালে খিচুড়ি খেলে হজমে সমস্যা হয়। তাই বৃষ্টির ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় খিচুড়ি খেয়ে সমস্যায় পড়তে হয় না। এসব কারণে বৃষ্টির সঙ্গে মিলে গেছে খিচুড়ির সংস্কৃতি।

খিচুড়ির ইতিহাস যাই হোক না কেন, বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়ায় চাইলেই পেট ভরে আয়েশ করে খেতে পারেন খিচুড়ি। বৃষ্টি বিলাস উদযাপন করার এ যেন মোক্ষম হাতিয়ার।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.