ঘুমে কি বালিশ ব্যবহার করছেন, বিপদ ডেকে আনছেন না তো!
ODD বাংলা ডেস্ক: সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধের ঘুমে যেন গভীরভাবে ডুব দিতে পারেন তার জন্য কত কিছুরই আয়োজন আপনি করে থাকেন। যার মধ্যে বালিশ অন্যতম। কিন্তু ঘুমে বালিশ ব্যবহারের অভ্যাসে আপনি পড়তে পারেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিটি মানুষেরই তার নিজস্ব বিছানা আর বালিশের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে দুর্বলতা কাজ করে। অনেকের তো নিজের বালিশ ছাড়া ঘুমই আসতে চায় না। আপনারও যদি এ ধরনের অভ্যাস থেকে থাকে তবে এখনই তা ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করুন।
কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের ক্ষেত্রে বালিশ ব্যবহার করার চেয়ে না ব্যবহার করাটাই বেশি উপকারী। কারণ ঘুমের সময় বালিশ ব্যবহার করার অভ্যাস আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়।আসুন জেনে নিই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো।
১. ব্রন এবং বলিরেখা: বালিশে মাথা দিয়ে শোয়ার অভ্যাসে মুখে ব্রন এবং বলিরেখার সমস্যা দেখা দেয়। কি অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, এটিই সত্যি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বালিশ ব্যবহারে গালের যে দিক বালিশের সঙ্গে লেগে থাকে সেখানেই আধিক্য দেখা যায় ব্রনের।
রক্তচাপ ও বালিশে থাকা অবাঞ্ছিত ব্যাকটেরিয়ার কারণে এমনটা ঘটে থাকে। নরম বালিশে মাথা দেওয়ার পর মাথার ভার নির্দিষ্ট একটা জায়গায় পড়ে থাকে। এই অভ্যাসে মুখের ত্বকে টান পড়ে। যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে ত্বকে বলিরেখারও জন্ম দিতে পারে।
২. মেরুদণ্ডের ব্যথা: মাথা ও শরীরকে একই সরলরেখায় থাকতে বাধা দেয় বালিশ। যার সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আপনার শিরদাঁড়া বা মেরুদণ্ডে। যারা মেরুদণ্ডের ব্যথায় ভুগছেন তারা বালিশ ছেড়ে ঘুমের অভ্যাস করতে পারেন। এই অভ্যাস চালু করার কিছুদিনের মধ্যেই আপনি এর সুফল অনুভব করতে পারবেন।
৩. ঘুমের গুণগত মান: বালিশ মাথায় দিয়ে ঘুমালে ঘুম ভালো হয়, এই ধারণা কিন্তু একদমই সঠিক নয়। অনেক সময় বালিশে মাথা থাকলে ভ্রম হয় যে বালিশ থেকে মাথা গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে। ঘুমের ক্ষেত্রে শক্ত বালিশও কিন্তু মাথাব্যথার সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই বালিশ ঘুমকে গভীরতায় ঢুকতে দেয় না তাই বলা যায়।
৪. স্ট্রেস বৃদ্ধি: যারা ঘুমের সময় বালিশ ব্যবহার করেন তারা দিনের বেশির ভাগ সময় বেশি দুশ্চিন্তায় ভোগেন। কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলেন, বালিশ ব্যবহার করার কারণে আমাদের ঘুমের সময় যে মাথা ও শরীরের পজিশন থাকে তা নতুন নতুন স্ট্রেসের জন্ম দেয়।
৫. স্মৃতিশক্তি: ঘুমের সময় শতভাগ রিল্যাক্স অনুভব করাটা বেশ দরকার। কিন্তু বালিশের বোঝা আপনাকে সেই অনুভব কখনই আসতে দেবে না। কারণ মাথায় বালিশ থাকলে তা ঠিকমতো মাথায় আছে কি না এই চিন্তা অবচেতন মনে কাজ করতে থাকে।
৬. শিশুর চ্যাপ্টা মাথা: এ ছাড়া বড়দের মতো ছোট শিশুদের ক্ষেত্রেও বালিশ ব্যবহারের অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। তবে বড়দের তুলনায় শিশুদের এই অপকারিতার পরিমাণটা যেন একটু বেশিই।
একটু খেয়াল করলে দেখবেন, বালিশে নির্দিষ্ট একটি দিকে শুয়ে ঘুমোতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে শিশুরা। তাই এক দিকে শোবার অভ্যাসের ফলে শিশুর নরম মাথাটি কিন্তু সে দিকটাতেই চ্যাপ্টা আকার ধারণ করে, যা শিশুর শারীরিক সৌন্দর্যের অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
৭. শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস: শিশুরা কিন্তু নিজের সমস্যার কারণ ও এর প্রতিকার কি হবে তা বলতে পারে না। তাই ঘুমের সময় হঠাৎই কোনো কারণে বালিশে মুখ গুঁজে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেই কারণেও শিশুর জন্য বালিশে শোয়ার অভ্যাস মোটেও উপকারী নয়। বরং এই অভ্যাসে বড়দের পাশাপাশি ছোট কিংবা শিশুদের অজান্তেই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
Post a Comment