জল ভালুক: ৩০ বছর পেটে কিছু না দিয়ে বাঁচতে পারে অনায়াসেই
ODD বাংলা ডেস্ক: টারডিগ্রেড হচ্ছে একটি অতিক্ষুদ্র প্রাণী। এটি ‘জল ভালুক’ বা ‘Water Bear’ নামেও পরিচিত। অবাক করার মতো বিষয়, ৩০ বছর পর্যন্ত বিনা খাদ্য গ্রহণে বেঁচে থাকতে পারে এই প্রাণী। এছাড়াও এটি শূন্য ডিগ্রি থেকে হাজার ডিগ্রি তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে। এমনকি এটি মহাশূন্যেও বেঁচে থাকতে পারে।
এই জীব পৃথিবীর অতি প্রাচীন জীবগুলোর একটি। এরা এতটই ছোট যে, শুধু মাইক্রোস্কোপ দিয়ে এদের দেখা যায়। জার্মান বিজ্ঞানী জোহান আগস্ট এটি সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। আট পা ওয়ালা প্রাণীটি জলে ভাসমান অবস্থায় থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, যদি এই প্রাণী খাদ্য না পায় তবে এর শারীরিক প্রক্রিয়া অনেকটাই স্থির হয়ে যায় যা একে বহুবছর বিনা আহারে বাঁচিয়ে রাখে।
শত বিপদ বা প্রতিকুল পরিবেশের মধ্যেও এরা টিকে থাকার ক্ষমতা রাখে। এক মিলিমিটারের মতো দীর্ঘ এই অতিক্ষুদ্র প্রাণীটি অতিমাত্রায় ঠান্ডা, চরম জলশূন্যতাও টিকে থাকতে পারে। এদের দেখতে অদ্ভুত চেহারার। এর আটটি পা, তাতে আবার নখওয়ালা থাবা আছে। এদের দেখলে মনে হয় এটা এক ধরণের পতঙ্গ বা ইনসেক্ট। কিন্তু আসলে তারা ‘ওয়ার্ম’ বা কেঁচো-শুঁয়োপোকা জাতীয় প্রাণীর বেশি কাছাকাছি।
এদের ডিএনএ সম্পর্কে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে পিএলওএস বায়োলজি নামের একটি সাময়িকীতে। এতে দেখা গেছে, পৃথিবীতে যত রকম মহাজাগতিক দুর্যোগ ঘটতে পারে - তার প্রায় সবগুলোই মোকাবিলা করে টিকে থাকার ক্ষমতা আছে এই টারডিগ্রেডের।
এদেরকে পুকুরে শুকিয়ে যাওয়া উদ্ভিদের মধ্যে পাওয়া যায়। এমনকি কয়েক বছর পর্যন্ত সেখানে কোন জল না থাকলেও এরা বেঁচে থাকতে পারে। এই বিস্ময়কর ক্ষমতার মূল কারণ হলো টারডিগ্রেডের জিনের মধ্যেই এমন কিছু প্রোটিন থাকে যা তাদের দেহকোষের পানির অভাব পূরণ করতে পারে। পরে যখন পানি পাওয়া যায় তখন আবার কোষগুলো তারা জল দিয়ে ভর্তি করে নেয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন টারডিগ্রেডের এই বিচিত্র ক্ষমতা মানুষের কাজেও লাগতে পারে, যেমন রেফ্রিজারেশন ছাড়াই কিভাবে টিকা সংরক্ষণ করে রাখা যায় - এদের পরীক্ষা করে তার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
Post a Comment