জিনগত নয়, বরং জলবায়ুর কারণেই পাল্টায় মানুষের গড়ন

ODD বাংলা ডেস্ক: মানুষের দেহের আকারপ্রকারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় জিনগত কারণে নয়, বরং পরিবেশগত বা জলবায়ুর তাপমাত্রার কারণে। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টিতে প্রমাণ পেয়েছেন। 
বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে মানবদেহের আকার-প্রকারে পরিবর্তনের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

ব্রিটেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও জার্মানির টুবিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। গবেষণাটি 'নেচার কমিউনিকশনস' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।   

গবেষণায় বিজ্ঞানীরা, 'হোমোজেনাস' গোত্রের ৩ শতাধিকের বেশি ফসিল থেকে দেহ ও মস্তিষ্কের আকার নিরূপণের চেষ্টা করেন। প্রাপ্ত তথ্যগুলো কয়েক লাখ বছরের পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের গতিবিধির সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন। জীবিত অবস্থায় এসব ফসিল কী ধরনের জলবায়ুতে বেঁচে ছিল, তা বের করার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষণায় দেখা যায়, গত কয়েক লাখ বছরের ইতিহাসে মানবদেহের আকৃতি পরিবর্তনের পেছনে জলবায়ু ও তাপমাত্রার মূল ভূমিকা ছিল। যেমন তীব্র শীত ও তীব্র রুক্ষ আবহাওয়ার সঙ্গে বড় বা লম্বা দৈহিক গঠনের সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে উষ্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে খর্বকার বা বেটে আকৃতির সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়।
  
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, প্রাণীবিদ্যাহবিদ অ্যাড্রিয়া ম্যানিকা এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, দীর্ঘদেহী হলে ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে বেশি সুরক্ষা পাওয়া যায়। মানুষ যত লম্বা হয়, তত তার শরীর কম বিস্তৃত হয়। তারা কার্যকরভাবে তাপ শুষে নিতে পারে। শুধু মানুষ নয়, এ ধরনের বিষয় অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও দেখা গেছে।

এই গবেষণায় মস্তিষ্কের আকারের উপরও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে কাজ করেছেন গবেষকরা।

গবেষকরা জানান, অন্তত ৩ লাখ বছর আগে আফ্রিকায় 'হোমোসেপিয়েন্সে'র উদ্ভব। কিন্তু 'হোমোজেনাসে'র অস্তিত্ব ছিল আরও আগে। এই হোমোজেনাসের মধ্যে 'নিয়ান্ডারথালস', 'হোমো হাবিলিস' ও 'হোমো ইরেকটাস' রয়েছে। 
  
বিশেষজ্ঞদের মতে, হোমো হাবিলিসের মতো আগের প্রজাতিগুলোএ তুলনায় হোমোসেপিয়েন্সের মস্তিষ্ক ৫০ শতাংশ ভারী ও ৩ গুণ বড়।

এদিকে এই গবেষণা শেষে জানানো হয়, মস্তিষ্কের আকৃতি পরিবর্তনের পেছনে জলবায়ুর ভূমিকা ছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.