যে দেশে সৌন্দর্যকে গুরুত্ব দেয়া হয় সবচেয়ে বেশি, যোগ্যতাকে নয়

ODD বাংলা ডেস্ক: পৃথিবীতে এমন একটি দেশ আছে যেখানে বাহ্যিক সৌন্দর্য কে অনেক বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। আর সেই দেশটি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। চাকরি কর্মক্ষেত্রসহ সব জায়গাতেই অগ্রাধিকার দেয়া হয় তাদের চোখে সুন্দর মানুষদের।
এমনকি বহিরাগত সাদা চামড়ার মানুষরা কোরিয়ানদের কাছ থেকে উষ্ণ আতিথিয়তা বেশি পেয়ে থাকে। কোরিয়ানরা তাদের সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে বেশি অগ্রাধিকার দেয় পাতলা দেহ, ছোট মুখ, ভি আকৃতির চোয়াল, বিবর্ণ ত্বক ও বড় চোখ এসব জিনিসকে। এগুলো তারা জন্মসূত্রে না পেলে কসমেটিক সার্জারি করতেও দ্বিধাবোধ করে না।

২০১৫ সালের সোসাইটি অফ অ্যাস্থেটিক প্লাস্টিক সার্জনের একটি গবেষণায় দেখা যায়, যে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষটা সবচেয়ে বেশি কসমেটিক সার্জারি করে থাকে। কসমেটিক সার্জারি সেখানে সহজলভ্য বিষয়। এমনকি করোনা মহামারিতে মাস্ক পরতে হবে বলে তারা নাকের আকৃতিতে সৌন্দর্য আনছেন সার্জারি করিয়ে। তবে একুশ শতকের আধুনিক যুগে এসেও কেন তারা সৌন্দর্যের পেছনে ছুটছেন ?  

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দ্রুত আধুনিকায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যকে তাদের আর্থসামাজিক সাফল্যের ধারক হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করে। অথচ তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি যতটা নজরকাড়া ছিল, চাকরির বাজার ততটা বিস্তৃত ছিল না। তাই চাকরি পেতে উচ্চশ শিক্ষা বা অন্যান্য যোগ্যতার চেয়ে শারীরিক সৌন্দর্যই মুখ্য হিসেবে বিবেচনা করার প্রচলন শুরু হয়। ফলে তারা আদর্শ চেহারা বানাতে কসমেটিক বা প্লাস্টিক সার্জারি করাতে শুরু করেন।

২০১৭ সালের এক জরিপ অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ৮৮ ভাগ মানুষ ভাবেন, চাকরি পাওয়ার জন্য চেহারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের রূপ চর্চার মূল উদ্দেশ্যেই থাকে ফর্সা কাঁচের মতো উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার। যেটাকে আজকাল আমরা গ্লাস স্ক্রীন বলে থাকি। দক্ষিণ কোরিয়ায় সৌন্দর্যের পেছনে প্রতি বছর ১৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ।  

আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, মহামারি সামাল দিতে পারলে হয়তো অচিরেই তাদেরকে আর মাস্ক পরতে হবে না। তার প্রস্তুতি হিসেবে চেহারার সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে অনেকে শুরু করে দিয়েছেন সার্জারি। তবে কোরিয়ানদের সংস্কৃতি দিনদিন অত্যাধুনিক হচ্ছে। চেহারা পাশাপাশি তারা তাদের পোশাক পরিচ্ছদ ও জীবন যাত্রার মান পরিবর্তনের দিকে নজর দিচ্ছেন।

বর্তমানে অনেকে দাবি করেছেন, কোরিয়ানদের প্রাকৃতিক রূপচর্চার একটি বিশেষ উপাদান আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। চাল ধোয়া জল অথবা ভাতের মাড়, এমনকি রান্না করা ভাত দিয়েও তারা রূপচর্চা করে। গবেষণায় এটি প্রমাণিত যে, চালে এমন কিছু উপাদান থাকে যা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী।

ভাতের মাড় অ্যান্টি এইজিং উপাদান হিসেবে বেশ কার্যকরী। ত্বকে বয়সের ছাপ রোধ করে প্রাণচঞ্চল করতে এটি বেশ উপকারী। চাল ধোয়া পানি টোনার হিসেবে অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া ভাতের মারকে আইসকিউব বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলেও ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.