মা দুর্গার সঙ্গে পুজো পান মহিষাসুরও, কেন জানেন?
ODD বাংলা ডেস্ক: পুরাণ অনুযায়ী ব্রহ্মার বরে প্রচণ্ড শক্তিশালী হয়ে স্বর্গলোক আক্রমণ করেন মহিষাসুর। দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন তিনি। মহিষাসুরের কাছে পরাজিত হয়ে ব্রহ্মার কাছে আশ্রয় নেন দেবতারা। কোনও পুরুষ মহিষাসুরকে বধ করতে পারবে না, এই বর স্বয়ং ব্রহ্মাই দিয়েছিলেন তাঁকে। তাই অনোন্যপায় হয় বিষ্ণু ও মহাদেবের স্মরণাপন্ন হন ব্রহ্মা। দেবতাদের দুর্দশার কথা শুনে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, ইন্দ্র এবং অন্যান্য দেবতাদের দেহ থেকে নির্গত হল তেজ। সেই সমবেত তেজ থেকে আবির্ভূতা হলেন এক পরমা সুন্দরী নারী। তাঁকে বিবিধ অস্ত্র দান করলেন দেবতারা।
হিমালয় দেবীকে দিলেন তাঁর বাহন সিংহ। ব্রহ্মা দিলেন কমণ্ডলু। দেবরাজ ইন্দ্র দিলেন বজ্র। কুবেরের গদা, বিষ্ণুর চক্র আর মহাদেবের কাছ থেকে দেবী দুর্গা পেলেন পেলেন ত্রিশুল। দেবী হলেন দশভুজা, যিনি সর্ব শক্তির অধিকারী। দেবীর রণ হুঙ্কারে ত্রিলোক কাঁপতে লাগল। সঙ্গে যুক্ত হল তাঁর বাহনের সিংহনাদ।
এই দেবী দুর্গার রূপে আকর্ষিত হলেন মহিষাসুর। দুর্গাকে মহিষাসুর বিবাহের প্রস্তাব দিলে তা অবহেলায় প্রত্যাখ্যান করেন দেবী। ক্ষুব্ধ মহিষাসুরের সঙ্গে ঘোরতর যুদ্ধ হল দেবীর। নিহত হলেন মহিষাসুর। মহিষাসুর জন্মগ্রহণ করেন তিনবার। ত্রিবিধ রূপ ধারণ করে তিনবারই তাঁকে বিনাশ করেন এই দেবী। মহিষাসুরকে বধ করার জন্য প্রথমে অষ্টাদশভুজা উগ্রচণ্ডা রূপে, দ্বিতীয়বার ভদ্রকালী এবং তৃতীয়বার বধ করলেন দশভুজা দেবী দুর্গা রূপে। দুর্গাই হলেন পরমা প্রকৃতি।
রাত্রিকালে স্বপ্নে ভদ্রকালী মূর্তি দেখলেন মহিষাসুর। শুরু করলেন তাঁর আরাধনা। আরাধনায় প্রীত ও প্রসন্ন দেবী তাঁকে বর প্রার্থনা করতে বলেন। মহিষাসুর জানালেন, ‘আপনার হাতে মৃত্যুর জন্য কোনও দুঃখ বা ক্ষোভ আমার নেই, কিন্তু আপনার সঙ্গে আমিও যাতে সকলের পূজিত হই সেই আশীর্বাদ করুন। এছাড়া আর কিছুই চাই না আমি।’ দেবী ভদ্রকালী তখন আশীর্বাদ করে বললেন, ‘উগ্রচণ্ডা, ভদ্রকালী আর দুর্গা, এই তিন মূর্তিতে আমার পদলগ্ন হয়ে তুমি সব সময়েই পূজ্য হবে দেবতা, মানুষ ও রাক্ষসদের।’দেবীর পাদলগ্ন হয়ে মহিষাসুরের পুজো পাওয়ার বিবরণ এক ‘কালিকাপুরাণ’ ছাড়া আর কোথাও নেই।
Post a Comment