দুর্গাপুজো ২০২২: এবার মা দুর্গা আগমন কীসে, আর যাচ্ছেনই বা কীভাবে, জেনে নিন

ODD বাংলা ডেস্ক: হাতে আর কিছুদিনের অপেক্ষা, আর তারপরই ঢাকে পড়বে কাঠি।আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া, দেবীপক্ষের শুরু। দুর্গার আগমন ও প্রস্থানের বাহন ও তার ফলাফল নিয়ে বাঙালি সমাজে বহু কথা প্রচলিত রয়েছে। দেবী দুর্গা ও তাঁর পুত্র-কন্যার নিজস্ব বাহন থাকলেও আগমন ও প্রস্থানের বাহনের কথা আলাদা করে পঞ্জিকায় উল্লেখ থাকে। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, দুর্গার আগমন ও প্রস্থানের বাহন নির্ধারণ করে মর্তলোক সারা বছর কেমন যাবে।

মনে রাখতে হবে পুজোর সপ্তমীতে দেবীর আগমন হয়, আর গমন দশমীতে। এই দুই দিন সপ্তাহের কোন কোন বারে পড়ছে, তার উপরেই নির্ভর করে দেবীর কীসে আগমন ও কীসে গমন। শাস্ত্রে বলা আছে- "রবি চন্দ্রে গজারূঢ়া, ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ,
              গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং, নৌকায়াং বুধবাসরে।"

অর্থাত্‍ 
সপ্তমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন হবে গজ বা হাতি। 
সপ্তমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবীর বাহন ঘোটক বা ঘোড়া। 
সপ্তমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর বাহন দোলা বা পালকি। সপ্তমী বুধবার হলে দেবীর বাহন নৌকা। 

একই ভাবে, দশমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন গজ। 
দশমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবী বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। 
দশমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর গমন হবে দোলা বা পালকিতে। 
দশমী বুধবার হলে দেবীর নৌকায় করে কৈলাশে ফিরবেন দেবী।

এই বছর ২ অক্টোবর সপ্তমী পড়েছে রবিবার। তাই দুর্গার আগমন গজে অর্থাত্‍ হাতিতে। আগামী ৫ অক্টোবর বুধবার পড়েছে বিজয়া দশমী। মা দুর্গা পুত্র-কন্যা সহ কৈলাশে ফিরবেন নৌকায় চেপে।

শাস্ত্রমতে গজ দেবীর উৎকৃষ্টতম বাহন। তাই দেবীর আগমন বা গমন হাতিতে হলে মর্ত্যলোক ভরে ওঠে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধিতে। পূর্ণ হয় ভক্তদের মনোবাঞ্ছা। পরিশ্রমের সুফল পায় মর্তলোকের অধিবাসীগণ। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি নয়, ঠিক যতটা প্রয়োজন ততটা বর্ষণ।

দুর্গা যদি ঘোড়ায় চড়ে আসেন বা বিদায় নেন তবে তার ফল "ছত্র ভঙ্গ স্তুরঙ্গমে" অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে রাজায়-রাজায় বা রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে যুদ্ধ সূচিত হয়। সামাজিক ও রাজনৈতিকস্তরে ধ্বংস ও অস্থিরতা বিরাজ করে। এক কথায় 'ছত্রভঙ্গম'।


সপ্তমী বা দশমী যদি বৃহস্পতি বা শুক্রবার হয় তাহলে দেবী দোলার আগমন বা গমন হয় পালকিতে। ফল "দোলায়াং মকরং ভবেৎ" অর্থাৎ মহামারী, ভূমিকম্প, খরা, যুদ্ধ ও অতিমৃত্যু লক্ষ্য করা যায়। দোলা বা পালকিতে সূচিত হয় ভয়ঙ্কর মহামারী। যাতে বিপুল প্রাণহানি অনিবার্য।

সপ্তমী বা দশমী বুধবার হলে দেবীর আসা বা যাওয়া নৌকায়। ফল "শস্য বুদ্ধিস্তথাজলম" অর্থাৎ প্রবল বন্যা ও খরা দেখা যায়। নৌকায় মনোকামনা পূর্ণ হওয়া সূচিত হয়। ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা যায়।

প্রতি বছর দুর্গার আগমন ও প্রস্থান সাধারণত একই বাহনে হয় না। যদি কোনও বছর তেমনটা হয়‚ তবে তা খুবই অশুভ ইঙ্গিত বহন করে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.