যেখান থেকে কেউ ফেরেনি, আজও রহস্যে ঘেরা সেই হ্রদ

ODD বাংলা ডেস্ক: অরুণাচলের এই হ্রদকে নিয়েও শোনা যায় বহু লোককথা। রহস্যজনক ভাবে নাকি সেখানে হারিয়ে গিয়েছেন অগণিত মানুষ। হ্রদের ‘ফাঁদে’ পড়ে কেউ ফিরে আসেননি। তাতে রহস্য বেড়েছে বই কমেনি।

অনেকে বলেন, ভারতের রহস্যেঘেরা পর্যটনস্থলের অন্যতম অরুণাচলের ‘লেক অব নো রিটার্ন’ বা নায়াং ইয়াং হ্রদ। চাংলাং জেলার এই হ্রদের একাংশের বিস্তার ঘটেছে মায়ানমারের পানসাও এলাকেতেও। মায়ানমারের সীমানা ঘেঁষা ওই ছোট অঞ্চলে টাংগাস উপজাতির বসবাস।

এই হ্রদের নামের সঙ্গে কী কী কারণে রহস্যের উপাদান জুড়ে গিয়েছে? তা নিয়ে বিস্তর গল্পকথা ছড়িয়ে রয়েছে। যার শুরুটা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ঐ সময় মিত্রশক্তির বহু দেশই জরুরি ভিত্তিতে বিমান অবতরণ জন্য অরুণাচলের এই হ্রদের আশপাশের জায়গা ব্যবহার করত। তবে অবতরণের পর সে সব বিমানের কেউ আর নাকি ফিরে আসেননি।

আবার অনেকের দাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক দল জাপানি সেনা দেশে ফিরতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। ঘুরতে ঘুরতে কোনো ভাবে তারা অরুণাচলের এই হ্রদের কাছে চলে গিয়েছিলেন। সে সময় তারা সকলেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। নায়াং ইয়াং হ্রদের কাছ থেকে আক্রান্তদের কেউ আর দেশে ফিরতে পারেননি। সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল।

নায়াং ইয়াং হ্রদ ঘিরে আরো রহস্যজনক গল্পকথা ছড়িয়ে রয়েছে। যুক্তিবাদীদের কাছে গল্পকথা হলেও স্থানীয়দের অনেকেই তা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। এমনই এক দাবি করেছেন স্টিভন এম কলিন্স নামে লেখক। তার লেখা ‘দ্য লস্ট টেন ট্রাইবস অব ইজরায়েল…ফাউন্ড’ বইতে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত ঈশ্বরের অনুশাসনপ্রাপ্ত যে দশটি জনগোষ্ঠীগুলির খোঁজ মেলে না, তাদের বিষয়ে সবিস্তার লিখেছেন স্টিভন। তার দাবি, ঐ জনগোষ্ঠীর একটি এখনো ভারতের অরুণাচলের হ্রদ এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে। যদিও এই দাবি কতটা যুক্তিগ্রাহ্য তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

অরুণাচলের এই হ্রদ নিয়ে এ রকম অগুনতি জনশ্রুতি ছড়িয়ে রয়েছে। তারই একটি হল হ্রদের মাছ নিয়ে। নায়াং ইয়াং এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বহুকাল আগে এখানকার এক গ্রামবাসী এই হ্রদ থেকে একটি বিশালাকায় মাছ ধরেছিলেন। গোটা গ্রামের বাসিন্দাদের তা রেঁধে খাওয়াতে এলাহি ভোজের আয়োজন করেছিলেন তিনি। তবে নিমন্ত্রিতদের তালিকায় নাম থাকলেও ভোজে যাননি গ্রামের এক বৃদ্ধা ও তাঁর নাতনি। তাতে রেগেমেগে নাতনি-সহ ওই বৃদ্ধাকে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন গ্রামের কর্তাগোছের এক বাসিন্দা, যিনি নিজেকে হ্রদের রক্ষাকর্তা বলে জাহির করতেন। পরের দিন নাকি হ্রদের জলে ডুবে যায় গোটা গ্রাম!

নায়াং ইয়াং হ্রদ ঘিরে এমন বহু ভীতিপ্রদ লোককথা ছড়িয়ে থাকলেও পর্যটকদের কাছে এর আকর্ষণে বিন্দুমাত্র কমেনি। অরুণাচলের স্থানীয়দের আশা, রোমাঞ্চের টানেই হ্রদ এলাকায় জমে উঠবে পর্যটন!

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.