নবরাত্রি-তে দেবী দুর্গার সঙ্গে পুজিত হচ্ছেন ভগবান হনুমান, জেনে নিন কেন এই পুজো করা হয়

 


ODD বাংলা ডেস্ক: আজ নবরাত্রিরের দ্বিতীয় দিন। নবদুর্গার দ্বিতীয় রূপ হল দেবী ব্রক্ষ্মচারিণীর। ব্রক্ষ্ম হল তপস্যার একটি স্তর। ব্রক্ষ্মচারিণী সেই অর্থে তপস্যাকারী। ব্রক্ষ্মচারিণী নামের অর্থ ব্রক্ষ্মচর্য ব্রত অবলম্বনকারিণী। আজ দেবী পুজিত হচ্ছেন এই রূপে। এমনই এই নয় দিন ধরে দেবীর এক এক রূপের পুজো হয়ে থাকে।  প্রতি বছর আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথি থেকে শারদীয়া নবরাত্রি শুরু হয় এবং দশমী তিথিতে দেবী দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়। শারদীয়ার নবরাত্রির ১০ তম দিনটি বিজয়াদশমী হিসাবে পালিত হয়। এবছর নবরাত্রি চলবে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিনই বিশেষ বিশেষ নিয়ম মেনে পুজিত হবেন দেবী দুর্গা। 


কাল শুরু হল নবরাত্রি। এখন টানা নয় দিন ধরে বিভিন্ন অবতারে পুজিতে হবেন দেবী। দেবীর নয় শক্তির পুজো হয়ে থাকে। শাস্ত্র মতে, নবরাত্রি প্রধানত দুবার পালিত হয়। এক বার চৈত্র মাসে ও অপরটি আশ্বিন মাসে। আশ্বিন ও চৈত্র ভয় নবরাত্রির শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিকে দেবী পার্বতীকে ব্রক্ষ্মচারিণী রূপে পুজো করা হয়ে থাকে। 



এ তো গেল দ্বিতীয় দিনের কথা। জানেন কি নবরাত্রিতে দেবী দুর্গার সঙ্গে পুজিত হন ভগবান হনুমান। জীবনের সকল সংকট থেকে মুক্তি পেতে নবরাত্রিতে দেবী দুর্গার পুজো করেন ভক্তরা। শাস্ত্র মতে, এটি মহা উৎসব। এই নবরাত্রির নয়দিন পবিত্র দিন হিসেবে বিবেচিত হয়। এই নবরাত্রিরের পুজোর সময় দেবীর আরাধনার পাশাপাশি হনুমানজি-র পুজো করা হয়।  


নবরাত্রিরে হনুমানজি-র পুজো করার একটি বিশেষ নিয়ম আছে। যাতে শক্তি ও সমস্যা সমাধানকারী বলে মনে করা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নবরাত্রির মঙ্গলবার হনুমানজির আরাধনা করলে মানুষের জীবনের সমস্ত ঝামেলা থেকে মেলে মুক্তি। তাই এই বছর নবরাত্রির মঙ্গলবার হনুমানজির আরাধনা করুন। জেনে নিন কীভাবে করবেন।



দেবী দুর্গার পুজোর পাশাপাশি শ্রী হনুমান জি-র পুজোর বিশেষ তাৎপর্য আছে। এই কারণে সমস্ত শক্তির পবিত্র স্থানে ভগবান হনুমান থাকেন। একটি ধর্মীয় বিশ্বাস আছে যে দেবী দুর্গা ও শ্রী হনুমানজির মধ্যে মা ও ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে অনেকে হনুমানজি-কে দেবী দুর্গার পরম ভক্ত বা সেবক বলে ডাকেন।  


তাই জীবনের জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে, যে কোনও সংকট কাটাতে নবরাত্রির মঙ্গলবার হনুমানজির আরাধনা করুন। মঙ্গলবার হনুমানজির পুজোর জন্য অত্যন্ত শুভ দিন। আর নবরাত্রিরের মধ্যে যে মঙ্গলবার পড়ে তা অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। তাই এই দিন অবশ্যই পাঠ করুন হনুমান চাল্লিশা। 



সনাতন ঐতিহ্যে, শ্রী হনুমান জি-কে ঈশ্বর হিসেবে পরিচিত যিনি সমস্ত সমস্যা থেকে রক্ষা করেন। এমন অবস্থায় জীবনের যাবতীয় ঝামেলা দূর করতে ও মনস্কামনা পূরণ করতে ভক্তি সহকারে বজরঙ্গীকে ছোলা ও মিষ্টি নিবেদন করুন। এতে মিলবে তাঁর কৃপা। তেমনই সাতবার শ্রী হনুমান চালিসা পাঠ করুন। 


নবরাত্রিরের মঙ্গলবার দিন লাল গোলাপ অর্পব করুন হনুামনজিকে। এমন বিশ্বাস করা হয় এই নিয়মে পুজো করলে জীবনে সকল সমস্যা থেকে মেলে মুক্তি। তেমনই সিঁদুর অর্পন করুন দেবতাকে এতে তিনি প্রসন্ন হবেন। জীবনের যে কোনও বাধা কাটাতে মেনে চলুন এই বিশেষ টোটকা। 


তেমনই প্রতি মঙ্গলবার পুজো করুন হনুমানের। তিনি সংকটহরন নামে পরিচিত। হনুমানের কৃপায় সমস্ত সংকট থেকে মিলবে মুক্তি। সঙ্গে পালন করতে পারেন বিশেষ টোটকা। টোটকা মেনে হনুমানে পুজো করলে যেমন জীবনের সংকট থেকে মুক্তি মিলবে তেমনই আর্থিক বৃদ্ধি ঘটবে। তেমনই শারীরিক জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে পারেন তাঁর কৃপায়। 



এদিন একটি কলা ও লাল পদ্মফুল দিয়ে পুজো করুন। এতে সকলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে। তাছাড়া, প্রতি মঙ্গলবার ভোর বেলা উঠে স্নান করুন। তারপর পিপল গাছের নীচে সরিষের তেলের প্রদীপ জ্বালান। তারপর হনুমানজি-র পুজো করুন। এই দিন পূর্ব দিকে মুখ করে হনুমানজীকে তুলসির মালা পরান। আর ১১ বার শ্রীরামেব নাম জপ করুন। 


মঙ্গলবার সকালে মিষ্টি দান করুন। জ্যোতিষ টোটকা অনুসারে মঙ্গলবার দিন দরিদ্রদের মিষ্টি দান করলে সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। এই দিন লাল রঙের মিষ্টি দান করুন। সকালে পুজো সেরে মিষ্টি দান করতে পারেন।  এতে কৃপা মিলবে। জীবনের সকল জটিলতা থেকে মিলবে মুক্তি। জীবনে ঘটবে উন্নতি। এই টোটকা বেশ উপকারী। প্রতি মঙ্গলবার এগুলো পালন করতে পারেন।  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.