৪ দিনের জন্য পৈতে ধারণ করে দুর্গাপুজো করেন এই গ্রামের আদিবাসীরা


ODD বাংলা ডেস্ক: কোনও পুরোহিত ছাড়াই দুর্গাপুজোর মন্ত্রোচ্চারিত হয় এই গ্রামে। পুজোর চার দিন পৈতে পরে দেবীর আরাধনায় মাতেন গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। জানেন কোথায়, স্থান বীরভূমের লাভপুর থানার আদিবাসী গ্রাম সুঁদিপুর। এই গ্রামে প্রায় ১২০ ঘর আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস। দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামে ব্রাহ্মণ ছাড়াই পুজো করে আসছেন আদিবাসী গ্রামের একটি পরিবার।

এই পুজো প্রথাগত দেবী আরাধনা নয়, নিজেদের মতো করেই বংশ পরম্পরায় দুর্গাপুজো করেন সুঁদিপুর গ্রামের কোঁড়া পরিবারের সদস্যরা। সেই পুজোয় সামিল হন গোটা গ্রামের মানুষ। পুজো উপলক্ষে ৪দিনের জন্য পৈতে ধারণ করে আরাধনা করেন ওই পরিবারের পুরুষ প্রতিনিধি।

পরিবারের সদস্যদের মুখে শোনা গেল, পুরোনো সেই দিনের কথা। এক সময় আশপাশের অনেক গ্রামে পুজো হলেও তাতে অংশ গ্রহণের অধিকার ছিল না সুঁদিপুর গ্রামের বাসিন্দাদের। দূর থেকে ঠাকুর দেখেই ফিরে আসতে হতো তাঁদের। শুধুমাত্র দশমীর দিন ঘট বিসর্জনের সময় আদিবাসীরা ধামসা-মাদল নিয়ে নাচ দেখানোর জন্য ডাক পেতেন। নিজেদের মতো করে পুজোর আনন্দ পেতেই ৭০ বছর আগে প্রথম ঘট পেতে এই পুজোর পরিকল্পনা করেন কোঁড়া পরিবারের পূর্বপুরুষ প্রয়াত গোকুল কোঁড়া।

বর্তমান পূজারি কার্তিকচন্দ্র কোঁড়া বলেন, 'বাবার কাছে শুনেছিলাম, ৭০ বছর আগে দাদু প্রয়াত গোকুল কোঁড়া প্রথম এই পুজোর সূচনা করেন। তৎকালীন ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতরা আদিবাসী দের পুজো করতে রাজি হননি। তাই আমাদের পূর্বপুরুষই নিজে পৈতে পরে এই পুজো করেন। তারপর থেকে এখনও সেই ধারা চলে আসছে। ষষ্ঠীর দিন পৈতে ধারণ করে আমরা পুরোহিত হই। দশমী পর্যন্ত সেই পৈতে নিয়ে আদিবাসী মন্ত্রে দেবীর পূজার্চনা করার পর দশমীর দিন ওই পৈতে খুলে রাখা হয় দেবীর কাঠামোতে এবং পরের বছর বোধনে বিসর্জন করা হয়।'

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.