জার্মানির অভিশপ্ত লবণের পাহাড়

 


ODD বাংলা ডেস্ক: দূর থেকে দেখতে ঠিক যেন বরফের পাহাড়! এতটাই সাদা যে রোদের ঝলকানিতে বেশি ক্ষণ চোখ রাখা দায়। সপ্তাহান্তে স্থানীয়দের ট্রেকিংয়ের আদর্শ রাস্তা। সারা বিশ্বে এই পাহাড়ের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে ঠিকই, কিন্তু স্থানীয়দের কাছে তা এখন অভিশাপ।

এই পাহাড়ের ধুলা আর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ক্রমে বিষাক্ত করে তুলছে পরিবেশ। জার্মানির ছোট গ্রাম হেরিনজেনের এক প্রান্তেই রয়েছে এই পাহাড়। সাদা এই পাহাড় আসলে তৈরি হয়েছে লবণ দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে এই লবণের পাহাড় মন্টে কালি বা কালিমাঞ্জারো নামে পরিচিত। এই পাহাড় মানুষ নির্মিত।


হেরিনজেনে কীভাবে তৈরি হলো এই লবণের পাহাড়? এর নির্মাণ শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। একটু একটু করে লবণ জমতে জমতে বিশালাকার পাহাড়ের রূপ নিয়েছে এটি। জার্মানির একটি পটাস উত্তোলক সংস্থাকে প্লাস এস রাসায়নিক সংস্থা। পটাস উত্তোলনের পর উপজাত দ্রব্য হিসাবে পড়ে থাকে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা লবণ।


এই লবণই সেই ১৯৭৬ সাল থেকে ঐ অঞ্চলে জমাতে শুরু করে সংস্থাটি। ৪৫ বছর ধরে জমতে জমতে আজ সেটির উচ্চতা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫০০ মিটার! ২৪০ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই পাহাড়ে অন্তত ২০ কোটি টন লবণ জমে রয়েছে। এই পাহাড়ে বছরে জমছে প্রায় ৭০ লাখ টন লবণ। এই পাহাড়ের উচ্চতা তাই প্রতি বছরই একটু একটু করে বেড়ে চলেছে।


২০০৯ সাল থেকেই মূলত এই লবণের পাহাড় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা হয়ে ওঠে। প্রতি বছর পাহাড়ের উপর গানের অনুষ্ঠান হয়। এতে পারফর্ম করে সে দেশের একাধিক জনপ্রিয় ব্যান্ড। তবে দীর্ঘ দিন ধরে লবণ জমার ফলে খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এলাকায়। জলবায়ুও অনেকটা বদলে যেতে শুরু করেছে।


বাতাস নোনা হয়ে গিয়েছে। মাটিতে মিশতে শুরু করেছে সেই লবণ। চাষাবাদে ক্ষতি তো হচ্ছেই, নদীর জলেও লবণ মিশে মাছ মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এত কুপ্রভাব থাকা সত্ত্বেও সংস্থাটির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ করতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন। কারণ ২০৩০ সাল পর্যন্ত ঐ জায়গায় লবণ জমা করার লাইসেন্স রয়েছে সংস্থার কাছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.