ব্রাজিলের এমন ঘটনা ১০ লাখে একবার ঘটে

ODD বাংলা ডেস্ক: ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ১৯ বছর বয়সী এক নারী একইদিনে দুইজন পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনের পর যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বিস্ময়করভাবে ঐ দুই শিশুর বাবাও দুইজন। সম্প্রতি ডিএনএ টেস্টে বিস্ফোরক এ তথ্য উঠে আসার পর স্বীকারও করেছেন শিশু দুটির মা।
বুধবার চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট।

জানা গেছে, ঐ নারী ব্রাজিলের গোইয়াস প্রদেশের ছোট্ট শহর মিনিরোসের বাসিন্দা। গর্ভধারণের ৮ মাস পর গর্ভে থাকা যমজ সন্তানের আসল বাবা কে সেটি নিয়ে তার মনে সন্দেহ হয়। পরে সেই সন্দেহ দূর করতে যে দুই পুরুষের সঙ্গে তিনি যৌন মিলন করেছিলেন তাদের একজনের ডিএনএ পরীক্ষা করান।

ঐ নারীর বিশ্বাস ছিল যার ডিএনএ টেস্ট করিয়েছেন সেই ব্যক্তিই তার দুই সন্তানের জৈবিক বাবা হবেন। কিন্তু ফলাফল যা আসে তা অবিশ্বাস্য। ডিএনএ’র ফলাফলে দেখা যায়, দুই পুত্রসন্তানের মধ্যে একজনের সঙ্গে তার ডিএনএ মিলছে। ঐ নারী বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার ফল দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। এরকম যে ঘটতে পারে, সেই সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। বাচ্চারাও দেখতে একেবারে একই রকম।

তিনি আরো বলেন, প্রথম পুরুষের সঙ্গে এক সন্তানের ডিএনএ’র মিল না পাওয়ায় আমি অবাক হই। এরপর আমার মনে পড়ে, একইদিন আমি অন্য এক পুরুষের সঙ্গেও যৌন সম্পর্ক করেছিলাম। এরপর তাকে ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য ডাকি। তার ডিএনএ-র সঙ্গে আমার অপর সন্তানের ডিএনএ মিলে গেছে।

তবে শেষ পর্যন্ত ঐ যমজ পুত্রসন্তানের জন্মের নিবন্ধনপত্রে মায়ের সঙ্গে উভয় সন্তানের বাবা হিসেবে প্রথম পুরুষের নামই নিবন্ধন করা হয়েছে। তিনিও বাবা হিসেবে দুজনেরই যত্ন নেন ও প্রয়োজনীয় সহায়তা।

অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন চিকিৎসক ও গবেষক টুলিও জর্জ ফ্রাংকো। তিনি বলছেন, এই নারীর ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, তা অত্যন্ত বিরল এক গর্ভাবস্থা। এটি ‘ওয়ান ইন আ মিলিয়ন’ বা প্রতি ১০ লাখে একবার ঘটে। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলে ‘হেটেরোপ্যারেন্টাল সুপারফেকুন্ডেশন’।

তিনি আরো বলেন, একই মায়ের দুটি ডিম্বানু, ভিন্ন দুই পুরুষের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হলে এই ধরনের গর্ভধারণের ঘটনা ঘটে। শিশুরা মায়ের জেনেটিক উপাদান ভাগ করে নেয়, কিন্তু তারা ভিন্ন প্লাসেন্টায় বেড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে ঐ নারীর গর্ভাবস্থা খুবই মসৃণ ছিল, কোনো জটিলতা ছিল না। দুই পুত্রসন্তানই সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করেছে এবং তাদের কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যাও ছিল না।

নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, যমজ ওই শিশুর বয়স এখন ১৬ মাস। তারা ও তাদের মা সুস্থ আছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.