ছকভাঙা জীবন লিজ ট্রাসের, বামপন্থা ছেড়ে রক্ষণশীল দলে যোগ মেনে নিতে পারেনি তাঁর বাবা
ODD বাংলা ডেস্ক: ব্রিটেনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনাককে তিনি ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। বরিস জনসনের সরকারের বিদেশ সচিব থাকাকালীনই তিনি দলীয় ভোটারদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছিলেন। যার ফলও তিনি পেলেন হাতেনাতে।
ব্রিটেনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনাককে তিনি ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। বরিস জনসনের সরকারের বিদেশ সচিব থাকাকালীনই তিনি দলীয় ভোটারদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছিলেন। যার ফলও তিনি পেলেন হাতেনাতে। তবে তাঁর এই সাফল্য কিন্তু এক দিনের নয়। রাজনীতির ময়দানে প্রথম দিকে সাফল্য অধরা ছিল লিজ ট্রাসের। পাশাপাশি বাবা-মায়ের মতাদর্শ মেনে না নেওয়ায় পরিবারের থেকেও কিছুটা দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল। সেসব এখন অতীত। টেমসের নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। সবকিছু খড়কুটের মত ভাসিয়ে দিয়ে তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।
৪৭ বছর বয়সী লিজ ট্রাসের জন্ম ১৯৭৫ সালের ২৬ জুলাই। তাঁর পুরো নাম মেরি এলিজাবেথ ট্রাস। বাবা লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের অধ্যাপক। মা নার্স ও শিক্ষিকা। বাবা - মা দুজনেই ছিলেন বামপন্থী। কলেজে একজন লিবারেল ডেমোক্র্যাট সদস্য হিসাবে, ট্রাস ১৯৯৪ সালে পার্টি কনভেনশনে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির জন্য অনুরোধ জানিয়ে যুক্তি দিয়েছিলেন, "আমরা বিশ্বাস করি না যে লোকেরা শাসন করার জন্য জন্মগ্রহণ করেছে।" তিনি গাঁজা আইনের সমর্থকও ছিলেন এবং "আগাছা মুক্ত" করার জন্য প্রচার করেছিলেন। একটি সময় লিজ তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ মিছিলে হাঁটতেন। বামপন্থী পরিবার থেকেই লিজ কনজারভেটিভ দলে যোগদান করেন।
চার ভাইবোনের মধ্যে লিজ ছিলেন বড়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক। রাষ্ট্রবিজ্ঞানা, দর্শন , অর্থনীতি ছিল তাঁর বিষয়। নিজে থেকেই লিজ তাঁর নাম থেকে মেরি ছেঁটে ফেলেছিলেন। তিনি লিব-ডোম সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। অক্সফোর্ড থেকেই লিজের রাজনীতির আঙিনায় প্রবেশ আর সেই থেকেই জীবনসঙ্গী হিউ ওলিরিরের সঙ্গে প্রেম। ২০০০ সালে তাঁরা বিয়ে করেন।
ট্রাস ২০০১ সালে হেমসওয়ার্থ , ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের জন্য টোরি প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ান কিন্তু হেরে যান। ২০০৫ সালে সালে ক্যাল্ডার ভ্যালির পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের অন্য একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি আবার পরাজিত হন। ২০০৬ সালেই গিনিচের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত প্রথম নির্বাচিত হয়ে প্রথম সাফল্য পান।
ট্রাসকে লন্ডন এবং ওয়েস্টমিনিস্টার শহরের পার্টি এমপি, মার্ক ফিল্ডের সাথে একজন পরামর্শদাতা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং পরবর্তী নির্বাচনে তাকে আরও জয়ী আসন নিশ্চিত করতে সহায়তা করার জন্য। কিন্তু দু'জন একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন যার জন্য ফিল্ডের ১২ বছরের বিবাহ ভেঙে যায়।
২০১০ সালে সাংসদ হওয়ার পর থেকে তিনি তিন জন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করেছেন। ২০১৬ সালে প্রথম মহিলা লর্ড চ্যান্সেলর হয়েছেন। ২০১২ সালে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি। আর ২০১৪ সালে পরিবেশ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্রেক্সিট পরবর্তী ব্রিটেনে পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে লিজ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছেন। একাধিক চুক্তি সাক্ষর করেছেন।
Post a Comment