‘13’ আনলাকি কেন?

ODD বাংলা ডেস্ক: সংখ্যার প্রতিটি মানই অর্থবহ। প্রতিটি সংখ্যাকেই তাই গুরুত্বের সঙ্গে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে আপত্তি থাকে ১৩ নম্বরে। কারণ, বিশ্বজুড়ে এই সংখ্যাকে আনলাকি বা অশুভ হিসেবে গণ্য করা হয়। 

স্কুল-কলেজের রোল নম্বর হোক কিংবা হোটেলের রুম নম্বর প্রায়ই ১৩ নম্বরটির মুখোমুখি হতে হয়। তখনই হতাশা ঘিরে ধরে। মনে করা হয়, শুরুতেই ব্যর্থ হতে হবে কিংবা ফলাফলে ব্যর্থতাই থাকবে। শুধু তা-ই নয় ১৩ তলা বাসায় থাকা, ব্যাংকের লকার নম্বরেও ১৩-কে এড়িয়ে চলা হয়। কারণ একটাই এটি অশুভ এবং দুর্ভাগ্যজনক নম্বর।

পাশ্চাত্য দেশগুলোর অধিকাংশ মানুষ এখনো শুক্রবার বা রোববার ১৩ তারিখ পড়াকে অশুভ মনে করা হয়। তারা মনে করেন, ১৩ তারিখে কোনো খারাপ ঘটনা ঘটবে এবং তা এড়িয়ে যাওয়া উত্তম। 

শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসকরাও রোগীদের স্বার্থে ১৩ নম্বর এড়িয়ে চলেন। তারা ১৩ নম্বর বেডে থাকা রোগীর স্বাস্থ্য নিয়েও শঙ্কায় থাকেন। এমন অনেকভাবেই ১৩ নম্বরটিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এটি ‘থার্টিন ডিজিট ফবিয়া’ নামেও বেশ পরিচিত বিশ্বে।

তবে এশিয়ার তুলনায় ইউরোপ বা আমেরিকার মানুষরা এই ‘আনলাকি ১৩‍‍’- এর তত্ত্বটি বেশি  মেনে চলেছে। কেন ‘থার্টিন’ কিংবা ১৩ নম্বরটিকে আনলাকি বা অশুভ মানা হয়? বহু বছর ধরে চলে আসা এই আনলাকি ‘থার্টিন’ নিয়ে নানা উক্তি, মতবাদ ও কুসংস্কারও রয়েছে, যা এখনো রহস্যময়।

১৯১০ সালে হিস্ট্রিকাইফোডিয়া নামে এক রোগের আবিষ্কার হয়। যার অর্থ হলো তেরোর আতঙ্ক। মানে ১৩ সংখ্যাটিকে ডেভিল বা ইভিল নম্বর বলা হয়। এসব রোগীর ধারণায় থাকে দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ১৩ সম্পর্কিত সবকিছুই যেন অমঙ্গলজনক।

বাইবেলে রয়েছে, লাস্ট সাপার বা যিশুর শেষ খাবার গ্রহণের রাতে ১৩ জন মানুষ ছিলেন। কথিত রয়েছে, ওই রাতে ১৩ তম আসন গ্রহণের জন্য জুডাস (যিশুকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী) নিজে আগ্রহী ছিলেন। আর লাস্ট সাপারের আয়োজন করা হয়েছিল ইহুদি ক্যালেন্ডারের নিসান মাসের ১৩ তারিখে।

এছাড়া ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে ১৩ তারিখের শুক্রবারগুলোতে পৃথিবীতে নানা ধরনের বিপর্যয় এসেছে। নাসার ‍‍‘অ্যাপোলো‍‍’ নামে নভোযানটি বিষ্ফোরিত হয় ১৯৭০ সালে। দিনটি ছিল ১৩ এপ্রিল। 

পৃথিবীর অধিকাংশ এয়ারলাইন্সে ১৩ নম্বরের কোনো রুম থাকে না। এছাড়া ইউরোপ বা আমেরিকায় বহুতল ভবনের লিফটে ১৩ নম্বরের কোনো সুইচও রাখা হয়।

ইতিহাসবিদদের মতে, আগের দিনে বেশির ভাগ ফাঁসির কাষ্ঠে ওঠার জন্য যে সিঁড়ি ব্যবহার করা হতো তাতে ১৩টি ধাপ থাকত।

ভাগ্য গণনার জন্য বহু বছরের পুরোনো যে অশুভ ট্যারট কার্ড রয়েছে। সেই কার্ডের মোট ৭৮টির মধ্যে ১৩ নম্বরটির মানে হলো মৃত্যু!

পুরোনো কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে, কারও নামে যদি ১৩ অক্ষর থাকে, তবে সেই ব্যক্তি অভিশপ্ত হবে। কুখ্যাত খুনি চার্লস ম্যানসন, জ্যাক দ্য রিপার, জেফরি দামের, থেডর বানডির নামের বানানে ১৩টি অক্ষর ধারণ করে।

ইউরোপে এক সমীক্ষা দেখা যায়, ১৩ তারিখের অশুভ ঘটনা বেশি ঘটে। তাই ১৪ তারিখে প্রকাশিত পত্রিকায় তুলনামূলক বেশি বিপদের খবর দেখা যায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.