তিন পা ও দুই যৌনাঙ্গের অদ্ভুত আকৃতির এক সফল মানুষ



 ODD বাংলা ডেস্ক: ১৮৮৯ সালে ইতালির সিরোকুসায় জন্ম নিয়েছিল এক ব্যক্তি। নাম তার ফ্রান্সিসকো লেন্টিলি। বাবা-মার দ্বাদশ সন্তান ছিলেন তিনি। দ্বাদশ সন্তান বললে কিছুটা ভুলই বলা হয় সম্ভবত। তিনি নিজে দ্বাদশ সন্তান হলেও তার সঙ্গে ছিল বাবা-মার ত্রয়োদশ সন্তানের অর্ধেক অংশ।


ফ্রাঙ্ক জন্ম নিয়েছিলেন প্যারাসিটিক টুইন হিসেবে। এই ক্ষেত্রে তার শরীরে যমজ সন্তানের পা এবং যৌনাঙ্গ সংযুক্ত অবস্থায় ছিল। ফলে অদ্ভুত আকার নিয়ে জন্ম হয়েছিল ফ্রাঙ্কের। তার শরীরে তিনটি পা, চারটে পায়ের পাতা, ১৬টি আঙুল এবং দুইটি সক্রিয় যৌনাঙ্গ ছিল। সারা বিশ্বে তিনি ‘থ্রি লেগড ম্যান’ হিসেবে পরিচিত হয়ে যান। তৃতীয় পা এমন ভাবেই তার মেরুদণ্ডের সঙ্গে জুড়ে ছিল যে, তা অস্ত্রোপচার করলে ফ্রাঙ্কের প্রাণের ঝুঁকি থেকে যেত।



জন্মের পরই ফ্রাঙ্ককে তার বাবা-মা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। ফলে ফ্রাঙ্ক বড় হয়ে ওঠেন তার পিসির কাছে। পিসিই তাকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাচ্চাদের হোমে ভর্তি করিয়ে দেন। নিজের এই অস্বাভাবিক দৈহিক বৈশিষ্ট্য ফ্রাঙ্ককেও ভিতরে ভিতরে কুরে খাচ্ছিল। যত বড় হচ্ছিলেন, যত বুঝতে শিখছিলেন, ততই মানসিক জড়তা তৈরি হচ্ছিল তার মধ্যে।


কিন্তু বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য ঐ হোমই তাকে বাঁচার প্রেরণা জোগায়। সেখানে তার থেকেও আরো দুর্দশাগ্রস্ত শিশুদের দেখতে পেলেন তিনি। ফ্রাঙ্ক যেখানে হাঁটতে-চলতে, দৌড়তে, লাফাতে এমনকি আইস স্কেটিংয়েও সাবলীল ছিলেন, এমন অনেক শিশুই ঐ হোমে বেড়ে উঠছিল, যাদের মধ্যে কেউ হাঁটতে পারে না, কেউ কথা বলতে পারে না, তো কেউ দেখতে পায় না দুই চোখেই।



ফ্রাঙ্কের যখন ১২ বছর বয়স, ভিনসেনজো ম্যাগনানো নামে একজন পাপেটার তাকে আমেরিকায় নিয়ে আসেন। সার্কাসে যোগ দেন ফ্রাঙ্ক। রাতারাতি সেনসেশন হয়ে ওঠেন তিনি। নিজের শারীরিক প্রতিকূলতাকেই অস্ত্র করে তোলেন। সঙ্গে ছিল তার দুর্দান্ত রসিকতা এবং তীব্র বুদ্ধি। ক্রমে শারীরিক প্রতিকূলতা ছাপিয়ে মানুষ ফ্রাঙ্ককে ভালবেসে ফেলেন দর্শকেরা। মানুষ ফ্রাঙ্ক মন কেড়ে নিয়েছিলেন থেরেসা মুরে নামে এক নারীরাও। ১৯০৭ সালে থেরেসাকে বিয়ে করেন ফ্রাঙ্ক। তাদের চার সন্তান রয়েছে।


বিয়ের ২৮ বছর পর তাদের সম্পর্কে চিড় ধরে। থেরেসাকে ডিভোর্স দিয়ে হেলেন সুফে নামে এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর টেনেসিতে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দ্বিতীয় স্ত্রী হেলেনের সঙ্গেই ছিলেন এই ‘ওয়ান্ডার ম্যান’।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.