ঘুরে আসুন তিন ভূতুড়ে জায়গায়, বদলে যাবে ভাবনা

ODD বাংলা ডেস্ক: অনেকেই ভূত ব্যাপারটাকে একেবারেই পাত্তা দেন না। ‘জো হোগা দেখা জায়েগা’ বলে অন্ধকারের দিকে পা বাড়ান। যদি একবার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় তেঁনাদের! যদি আপনার মনেও ভূত নিয়ে এরকম ভাবনা চিন্তা থাকে, তাহলে একবার ঘুরে আসুন এই তিন জায়গায়। দেখবেন ভূত সম্পর্কে আপনার ধারণা একেবারেই বদলে গিয়েছে।

সিংহগড় দুর্গ, পুণে

মহারাষ্ট্রের সহ্যাদ্রি পর্বতমলায় অবস্থিত সিংহগড় দুর্গ একটি প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক দুর্গ। দুর্গের আদি নাম ছিল কোন্ডন দুর্গ। এই দুর্গ প্রথমে ছিল শিবাজির বাবা শাহজি ভোঁসলের অধিকারে। শাহজি ছিলেন আদিলশাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহিম আদিল শাহর সেনাপতি। যদিও বাবার মতো শিবাজি আদিলশাহী আধিপত্য মেনে নিতে চাননি। হিন্দু স্বরাজ স্থাপনের লক্ষ্যে কোন্ডন দুর্গ দখল করেন। তখনো এই দুর্গ সিংহগড় নামে পরিচিত পায়নি। শিবাজির সেনাপতি বীর তানাজিকে সবাইকে ডাকতেন সিংহবিক্রম নামে। পরে তার নামানুসারেই কোন্ডন দুর্গের নামকরণ হয় সিংহগড় দুর্গ। ঔরঙ্গজেবের হাত থেকে এই দুর্গকে বাঁচাতে গিয়ে যুদ্ধে প্রাণ দেন তানাজি। সেই সংবাদ শুনে শিবাজি দুঃখ করে বলেছিলেন যে, গড় আমাদের অধীনে এল ঠিকই, কিন্তু সিংহ চলে গেল। বলা হয়, সেই দীর্ঘশ্বাসই অভিশাপের মতো জড়িয়ে রয়েছে সিংহগড়ের গায়ে। ক্রমাগত যুদ্ধ, হত্যা আর অন্তর্দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়ে এই দুর্গ। শোনা যায়, দুর্গে ওঠার মুখে একটা বাঁক আছে।

সেই বাঁকের মুখে যখন সূর্য অস্ত যায়, তখন মাঝে মাঝেই দেখা যায় এক মারাঠা যোদ্ধাকে। তার পোশাক শিবাজির আমলের। তিনি নাকি কারও দিকে তাকান না। কারও কথায় কান দেন না। চুপচাপ গিয়ে খাদের কাছে দাঁড়ান। ঠিক যখন সূর্য ডুবে যায় তখন তিনিও খাদে লাফ দেন। অনেকেই নাকি এই ঘটনা নিজের চোখে দেখেছেন। তাকে নাকি স্পর্শ করা যায় না। একবার নাকি সিংহগড় দুর্গ দেখতে ৬০ জন শিশুকে বাসে করে নিয়ে আসা হচ্ছিল। বাঁকের মুখে এই লোকটিকে লাফাতে দেখে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাস গিয়ে পড়ে খাদে। তারপর থেকে প্রায়ই নাকি অন্ধকারের দুর্গটি শিশুদের হাসি, চেঁচামেচিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। সোনা যায় আচমকা বাসের ব্রেক কষার শব্দও। সন্ধ্যার পর পর্যটকদের এখানে যেতে দেওয়া হয় না।

টাওয়ার অফ সাইলেন্স, মুম্বই

নাম শুনলেই গা একেবারে ছমছম করে উঠবে। শুধু মুম্বইয়ে নয়। নানা শহরেই থাকে টাওয়ার অফ সাইলেন্স। পারসি সম্প্রদায়ের মানুষরা এখানে মৃতদেহ সৎকার করে। তবে মুম্বইয়ের টাওয়ার অফ সাইলেন্স কিন্তু বেশ জনপ্রিয় নানা ভূতুড়ে কাণ্ডের জন্য। পারসি সম্প্রদায়ের সংৎকারের নিয়ম অন্যরকম। তারা মৃতদেহগুলোকে ছাদের উপর রেখে দেন। শকুনের দল ঝাঁকে ঝাঁকে এসে সেই মৃতদেহ খেয়ে ফেলে। সুতরাং পুরো ব্যাপারটাই গা ছমছমে। শোনা যায়, টাওয়ার অফ সাইলেন্সে নাকি আত্মারা ঘুরে বেড়ায়। শোনা যায়, এই টাওয়ার অফ সাইলেন্সে অনেকেই নাকি ভূত দেখেছেন!

শনিবার ওয়াড়া, পুণে

বলিউড ছবি বাজিরাও মস্তানির কল্যাণে পুণের শনিবার ওয়াড়া এখন বেশ জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। অতীতের অনেক কষ্ট-যন্ত্রণার সাক্ষী এই প্রাসাদ। প্রতারণা, যন্ত্রণা, দুর্ভাগ্যই সবই দেখেছে শনিবার ওয়াড়া। এই দুর্গের প্রতিটি দেওয়ালই নাকি অভিশপ্ত। শনিবার ওয়াড়া তৈরির পর প্রথম বছরেই মৃত্যু হয় পেশোয়া বাজিরাও-এর। প্রতারণার শিকার হয় তার প্রথম স্ত্রী কাশীবাঈ। পূর্ণতা পায়নি বাজিরাও আর মস্তানির প্রেমকাহিনি। একের পর এক কালো অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে রয়েছে এই শনিবার ওয়াড়া। জনশ্রুতি, প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন এই কেল্লায় আজও ঘুরে বেড়ায় এক তরুণ পেশোয়ারের বিদেহী আত্মা। প্রতি পূর্ণিমার রাতে নাকি শোনা যায় কিশোর কণ্ঠের আর্তনাদ। সেই অশরীরী কণ্ঠ নাকি বলে, ‘কাকা, মাল ভাচওয়া’। বাংলায় যার অর্থ, ‘কাকা, আমার প্রাণ বাঁচাও’। অতীতে নাকি এখানে এক যুবরাজকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তার আত্মাই নাকি এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে। রাতে কেল্লায় গান আর ঘুঙুরের তালে নাচতে দেখা যায় নর্তকীকে। অনেকেই নাকি এসব দৃশ্য নিজের চোখে দেখেছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.