বক এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে কেন?
ODD বাংলা ডেস্ক: একটি লালঝুঁটি মোরগের কথাই ভাবা যাক কিংবা একটি বুনোহাঁস- শুধু এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আশ্চর্যের বিষয় এক পায়ে দাঁড়ালেও সে পড়ে যায় না!
লম্বা পায়ের বক, বাজপাখি কিংবা পরিযায়ী পাখিরা প্রায়শই এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে এবং অন্য পা উষ্ণতার জন্য তাদের শরীরের পালকের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে। সমুদ্র সৈকতে, এক পায়ে ভারসাম্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এমন পাখির সন্ধান মেলে।
এমন পাখিদের অন্যতম অভিযোজন হলো তাপক্ষয় নিয়ন্ত্রণ। তাদের পায়ে রক্ত পরিবহনকারী ধমনীগুলো সেই শিরার সংস্পর্শে থাকে যা পাখির হৃৎপিণ্ডে রক্ত বহন করে। উষ্ণ ধমনীগুলো শীতল শিরাগুলোকে উত্তপ্ত রাখে। যেহেতু শিরা ধমনীকেও শীতল করে, পাখির পা পরিবেশগত তাপমাত্রার কাছাকাছি থাকে এবং এভাবে তারা শরীরের তাপমাত্রায় থাকলে ততটা তাপ হারায় না।
পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মতো উষ্ণ রক্তযুক্ত এবং মানুষের তুলনায় ছোট দেহ। তাই তারা সহজেই শরীরের তাপ হারায়। তাই এক পায়ে দাঁড়ানোর জন্য একটি পাখি তার পা আটকে রেখে তার পাখাবিহীন অঙ্গগুলোর মধ্য দিয়ে যে তাপ হারায় তার অর্ধেক পরিমাণ হ্রাস করে। শীত বা ঠান্ডার সময় চড়ুই উভয় পা ঢেকে বসে থাকে, অতিরিক্ত উষ্ণতার জন্য কাঁধের পালকের নিচে ঠোঁট আটকে রাখে।
এদিকে বেশিরভাগ সময় বক জলে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে মূলত শিকারের সুবিধার্থে, এতে দ্রুততার সঙ্গে বেশি জায়গায় নড়াচড়া করা যায়, আর জলে তরঙ্গ সৃষ্টি জনিত সমস্যা কম হয়। বকের পায়ের পাতা এত বেশি ছড়ানো থাকে যে তারা সহজেই এক পায়ে দাঁড়িয়ে পুরো শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারে। বককে শিকারের আশায় দীর্ঘক্ষণ জলে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, সে কারণেই দুই পা একসঙ্গে ক্লান্ত না করে এক পায়ে খাড়া থাকে এবং কিছু সময় অন্তর পা পরিবর্তন করে। তাছাড়া দুটো পা কাদায় আটকে থাকলে ওড়ার সময় অসুবিধা হয়।
খাদ্যের সন্ধানে বক, সারস ও পরিযায়ী পাখি সব সময় উড়ে বেড়ায়। এর জন্য তাদের খুব বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। তাই এরা সব সময় শরীরের শক্তি বাঁচাতে চেষ্টা করে। এক পায়ে দাঁড়ালে আরেক পা কিছুটা শক্তি বাঁচাতে পারে।
Post a Comment